ইরানের পরমাণু স্থাপনা ও শীর্ষ সামরিক নেতাদের ওপর নজিরবিহীন হামলা চালানো আগেই মোসাদের এজেন্টরা ইরানের ভেতরে অস্ত্র ও ড্রোন চোরাচালান করেছিল। পরে এই অস্ত্রগুলোর ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের কাজে ব্যবহার করা হয়।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানান, তারা ইরানের অভ্যন্তরে একটি ঘাঁটি গড়ে তোলে, যেখান থেকে বিস্ফোরক ড্রোন ছোঁড়া হয়। ওই ড্রোনগুলো দিয়ে তেহরানের আশপাশে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণকারী স্থাপনায় হামলা চালানো হয়।
সুনির্দিষ্ট নিশানা লক্ষ্য করে হামলা চালানোর উপযোগী অস্ত্রও ইরানে পাচার করা হয়েছিল, যেগুলো সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল সিস্টেম (আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা) ধ্বংসে ব্যবহার করা হয়। এর ফলে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী ২০০টিরও বেশি যুদ্ধবিমান নিয়ে শতাধিক হামলা চালাতে সক্ষম হয়।
এই পরিকল্পনা ইরানি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিষ্ক্রিয় করতে যথেষ্ট কার্যকর ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। ইসরায়েল জানায়, প্রথম দফার হামলার পর তাদের সব বিমান নিরাপদে ফিরে এসেছে, যা ইরানের আকাশসীমায় ইসরায়েলের কার্যকর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার ইঙ্গিত দেয়।
ইরানে মোসাদের মাধ্যমে সংগৃহীত গোয়েন্দা তথ্যের কারণে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী ইরানের শীর্ষ সামরিক কমান্ডার ও পরমাণু বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য করে হামলা চালাতে সক্ষম হয়।
এবারই প্রথম মোসাদ তাদের কিছু অভিযানের ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা যায়—ড্রোন দিয়ে অপ্রস্তুত অবস্থায় থাকা ক্ষেপণাস্ত্র লাঞ্চার ধ্বংস করা হচ্ছে।
এই সাম্প্রতিকতম অভিযান আবারও প্রমাণ করে, ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থাগুলো—বিশেষত মোসাদ—ইরানের গোপনীয়তার গভীরে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছে। এই ধরনের সুনির্দিষ্ট, মারাত্মক আঘাত ইঙ্গিত দেয়—ইরানের সবচেয়ে সংরক্ষিত স্থান ও উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারাও এখন আর নিরাপদ নন।
একটি ইসরায়েলি নিরাপত্তা সূত্র জানায়, এই অভিযান তেহরানের অভ্যন্তরসহ দেশটির বিভিন্ন অংশে মোসাদ কমান্ডোদের নীরবে কাজ করার প্রয়োজন ছিল, যেন ইরানের গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থার নজর এড়িয়ে তারা কার্যক্রম চালাতে পারে।
তিনি আরও বলেন, মোসাদ দলগুলো আকাশ প্রতিরক্ষা, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও লঞ্চার লক্ষ্য করে কাজ করে, ঠিক সেই সময়েই যখন ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর হামলা শুরু হয়। এই গোটা পরিকল্পনা কয়েক বছর ধরে তৈরি করা হয়েছে—এর মধ্যে ছিল গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, এবং ধাপে ধাপে শত্রু প্রতিরক্ষা লাইনের অনেক গভীরে মোসাদ কমান্ডোদের স্থাপন।
সূত্র: সিএনএন
এমএম