ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সপ্তাহব্যাপী চলমান সংঘর্ষ আজ শনিবার (১০ মে) আরও তীব্র আকার ধারণ করে। পাকিস্তানের সামরিক ঘাঁটিতে ভারতীয় হামলার প্রতিশোধ হিসেবে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে সামরিক অভিযান শুরু করে ইসলামাবাদ।
ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা পাকিস্তানের অভিযানের ‘কার্যকরভাবে প্রতিহত করেছে এবং জবাব দিয়েছে’। তবে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অভিযোগ, মধ্যরাতে ভারত নিজ ভূমিতেই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
তারা বলছে, শুক্রবার (৯ মে) রাতে ভারত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে তাদের নিজস্ব জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতে শুরু করেছে, যা চলমান উত্তেজনাকে আরও বিপজ্জনক হারে বাড়িয়ে তুলছে।
শনিবার ভোরে এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী এ অভিযোগ করেন।
তিনি দাবি করেন, ভারতের পাঞ্জাবের জলন্ধরের আদমপুর ঘাঁটি থেকে ছয়টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী, যার মধ্যে একটি আদমপুরের ভেতরেই ভূপাতিত করা হয়েছে, বাকি পাঁচটি অমৃতসরে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, ভারতের নিজস্ব ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ইলেকট্রনিক প্রমাণ পাকিস্তানের কাছে আছে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঞ্জাবের শিখদের মধ্যে ঘৃণা তৈরি করতে চায় ভারত। এর আগে, ৭-৮ মে রাতেও ভারত অমৃতসরে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল।
আইএসপিআর ডিজির মন্তব্য, এই বেপরোয়া পদক্ষেপ ভারতের অভ্যন্তরীণ অস্থিতিশীলতার স্পষ্ট ইঙ্গিত। ভারত সরকার এখন সীমান্ত আন্তঃআগ্রাসনের আড়ালে তার নিজস্ব নাগরিক এবং অবকাঠামোকে বিপদে ফেলছে।
বিশেষভাবে ভারতীয় পাঞ্জাবের শিখ-সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলকে লক্ষ্যবস্তু হিসেবে উল্লেখ করে লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী বলেন, ভারতের সংখ্যালঘুরা তাদের অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্রের শিকার। ভারত ইচ্ছাকৃতভাবে অমৃতসরে শিখ সম্প্রদায়কে লক্ষ্যবস্তু করছে। সেখানে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত কোনো দুর্ঘটনা নয়। এটি সংখ্যালঘুদের প্রতি রাষ্ট্রের বৈষম্যমূলক এবং দমনমূলক মনোভাবের ধারাবাহিকতা।
তিনি বলেন, আমাদের সমস্ত সহানুভূতি শিখ সম্প্রদায়ের প্রতি, যারা রাষ্ট্র-সমর্থিত নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।
সামরিক মুখপাত্র ভারতের এই পদক্ষেপকে ‘অযৌক্তিক এবং অত্যন্ত বিপজ্জনক’ অভিহিত করে সতর্ক করে দিয়েছেন যে, ভারতের আগ্রাসী আচরণ নিয়ন্ত্রণ না করা হলে তা আরও বিস্তৃত আঞ্চলিক সংকটে পরিণত হতে পারে।
পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্রের এসব অভিযোগের বিষয়ে কোনো মন্তব্য আসেনি নয়াদিল্লি থেকে।
সূত্র: সামা টিভি
আরও পড়ুন>>
উত্তেজনার আগুনে পরমাণু নয়, বললেন খাজা আসিফ
এস-৪০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, দাবি ভারতের
জম্মু-কাশ্মীরে পাকিস্তানের হামলায় সরকারি কর্মকর্তাসহ নিহত ৫
পাকিস্তানের অভিযানের নাম ‘অপারেশন বুনিয়ানুন মারসুস’ কেন?
এসএএইচ