ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

অমর্ত্য সেনকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদে নোটিশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৩
অমর্ত্য সেনকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদে নোটিশ

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে উচ্ছেদের নোটিশ দিয়েছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রোববার (১৯ মার্চ) শান্তিনিকেতনে তার বাড়ি ‘প্রতীচী’ বরাবর চিঠিটি পাঠানো হয়।

অমর্ত্য সেন বর্তমানে বিদেশে রয়েছেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর খবর, চিঠিতে অমর্ত্য সেনের বাড়ি প্রতীচী যে জমিতে নির্মিত, সেটি নিয়ে আগামী ২৯ মার্চ বিশ্বভারতীর সেন্ট্রাল অ্যাডমিশন বিল্ডিংয়ের কনফারেন্স হলে একটি শুনানির কথা বলা হয়েছে। এতে অমর্ত্য সেন অথবা তার প্রতিনিধিকে সশরীরে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।

কলকাতার শীর্ষ দৈনিক আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়েছে, অমর্ত্য সেন বিশ্বভারতীর ১৩ ডেসিমেল জমি দখল করে রেখেছেন বলে কর্তৃপক্ষ তাদের চিঠিতে দাবি করেছে। তাই আইন মেনে তাকে কেন ওই জমি উচ্ছেদ করা হবে না, চিঠিতে সেটি জানতে চওয়া হয়েছে। ২৯ মার্চ ‘বিতর্কিত’ জমি নিয়ে শুনানি হবে। এরপরই বিষয়টি নিয়ে নতুন পদক্ষেপ জানা যাবে।

এর আগে ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি দখল’ করে বাসভবন নির্মাণের অভিযোগে ভারতের নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে মামলা করবে বলে হুমকি দেয় পশ্চিমবঙ্গের বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশ্বভারতী। এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করে কর্তৃপক্ষ।

গত ২৯ জানুয়ারি প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিরোধ মেটাতে আলোচনায় না আসেন অমর্ত্য সেন, তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।

দাবি করা হচ্ছে, প্রতীচী নির্মাণে বিশ্বভারতীর ক্যাম্পাস এলাকার জমি অবৈধভাবে দখল করেছেন অমর্ত্য সেন।

ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, ১৯৪৩ সালে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এক একরের কিছু বেশি জমি ইজারা নিয়েছিলেন অমর্ত্য সেনের বাবা আশুতোষ সেন। পরে সেই জমিতে নিজের বাসভবন নির্মাণ করেন অমর্ত্য। বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, তাদের তৎকালীন কর্তৃপক্ষ আশুতোষ সেনকে ১ দশমিক ২৫ একর জমি ইজারা দিয়েছিল। কিন্তু অমর্ত্য সেন প্রতীচী নির্মাণে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও কিছু জমি হাতিয়েছেন। বর্তমানে তার বাসভবনসংলগ্ন জমির পরিমাণ ১ দশমিক ৩৮ একর। অর্থাৎ তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের দশমিক ১৩ একর জমি বাড়তি দখল করেছেন।

বিশ্বভারতীর বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, আশুতোষ সেন তাদের কাছ থেকে যে জমি ইজারা নিয়েছিলেন, সেটির স্বাক্ষরিত নিবন্ধিত দলিল ও ২০০৬ সালে কর্ম সমিতির সিদ্ধান্ত থেকে প্রতীয়মান বিশ্ববিদ্যালয় বাবা-ছেলেকে ১ দশমিক ৩৮ একর জমি তো দেয়নি, এমনকি বিশ্বভারতীর কোনো জমিরই মালিকানা দেওয়া হয়নি।

অমর্ত্য সেনকে নিজের আত্মগরিমা ও বিশ্বভারতীর সুনাম রক্ষায় সবকিছু করতে বলা হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে। আলোচনায় না বসলে কর্তৃপক্ষের মামলা ছাড়া কোনো পথ নেই, তাই দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে অনুরোধ করা হয়েছে নোবেল জয়ী অধ্যাপককে।

অমর্ত্য ও বিশ্বভারতীর মধ্যে চলমান সমস্যার মধ্যে গত শনিবার একটি সরকারি নথি প্রকাশ পায়, যাতে শান্তিনিকেতনের ১ দশমিক ৩৮ একর জমি প্রয়াত আশুতোষ সেনকে দীর্ঘমেয়াদে লিজ দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া বীরভূমের জেলা প্রশাসক বিধান রায়ও এ তথ্য নিশ্চিত করেন। জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর দাবি করছে, অমর্ত্যের বাবাকে ১ দশমিক ২৫ একর জমিই যে লিজ দেওয়া হয়েছিল সেটির কোনো রেকর্ড নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৩
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।