ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

তথ্যপ্রযুক্তি

মোবাইল ফোন সেবায় ৫ শতাংশ বাড়তি করারোপ বাতিলের দাবি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫২ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২০
মোবাইল ফোন সেবায় ৫ শতাংশ বাড়তি করারোপ বাতিলের দাবি

ঢাকা: চলতি অর্থবছরের বাজেটে মোবাইল ফোন তথা টেলিযোগাযোগ খাতে ৫ শতাংশ বাড়তি সম্পূরক শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।

রোববার (২১ জুন) বেলা ১২টায় অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, সরকারের কর আদায়ের সহজ পদ্ধতি ও নগদ আদায়ের সহজ পথ টেলিযোগাযোগ খাত।

২০১৯-২০ অর্থবছরে এ খাতের অবদান ৭ শতাংশ। ২০২০-২১ অর্থবছরে এ খাতের প্রবৃদ্ধি ৩ শতাংশ হবে বলে আমরা আশা করেছিলাম। চার মোবাইল ফোন অপারেটরই এ খাতে বছরে ব্যবসা করে প্রায় ২৮-৩০ হাজার কোটি টাকা। যার সিংহভাগই সরকারি কোষাগারে জমা হয়।

মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের ১৭ কোটি নাগরিকের কাছ থেকে সম্পূরক শুল্ক, মূল্য সংযোজন কর, সার চার্জ, আমদানি শুল্ক, আবগারি শুল্ক, সামাজিক নিরাপত্তা তহবিল, বিনিয়োগ কর, করপোরেট সিম ট্যাক্সসহ সব কর একজন নাগরিকের কাছে আদায় করার একমাত্র সহজ পদ্ধতি টেলিযোগাযোগ সেবা। যে কারণেই গত ৩ বছরে কর বৃদ্ধি করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের বঙ্গবন্ধু সেতু ও দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগের জন্য নির্মাণাধীন পদ্মাসেতুতে এ খাতের গ্রাহকদের ১ শতাংশ সার চার্জ উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, চলতি মাসে ১৬ কোটি ২৯ লাখ ২০ হাজার সক্রিয় সিম ও ১০ কোটি ১১ লাখ ৮৬ হাজার ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ব্যবহারের পূর্বেই রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ১০০ টাকায় ১৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক, ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর, ১ শতাংশ সার চার্জ মিলে মোট ৩৩.৫৭ শতাংশ টাকা দিচ্ছে।

বিটিআরসির তথ্য তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত তিন মাসে এ খাতে গ্রাহক কমেছে প্রায় ২০ লাখ। উচ্চ মূল্য ও ৫০ শতাংশ নাগরিক এ সেবায় আসতে পারছে না। যার ফলে, অনলাইন টিকিট কাটা থেকে বঞ্চিত থাকায় আজ যাত্রী সংকটের কারণে রেল বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। দেশের সব আদালত ও স্কুল-কলেজ অনলাইন সেবার বাইরে রয়েছে। এমতাবস্থায় এ সেবায় কর বৃদ্ধি অন্যায়।

মহিউদ্দিন বলেন, গত ৫ বছর ধরে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনের রাত থেকেই কর আদায় হয়েছে, গ্রাহকদের সঙ্গে ন্যায় বিচার করা হয়নি। আমরা এ অর্থ ফেরত চেয়ে ইতোমধ্যে সরকারের কাছে আবেদন করেছি। সরকার বিষয়টি আমলে নিয়ে এ অর্থ গ্রাহকদের ফেরত প্রদানে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এ নিয়ে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন ও তথ্যমন্ত্রী প্রতিবাদ করেছেন। সেই সঙ্গে তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী এবং সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম কর বৃদ্ধির প্রস্তাব বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে। আমরা তাদের আহ্বানকে স্বাগত জানাই। কিন্তু একই সঙ্গে বর্তমান ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে আমরা প্রশ্ন করছি। তিনি কীভাবে কর বৃদ্ধির সুপারিশ সরকারকে দিলেন।

মহিউদ্দিন বলেন, আমরা আগেই লক্ষ্য করেছি, আন্তর্জাতিক কলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে বৈধ কলের হার কিভাবে নিম্নমুখী হয়েছিল। বর্তমান কর বৃদ্ধির ফলে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা আদায় হবে বলে সরকারের যে পরিকল্পনা তা সঠিক নয়। এতে করে ব্যবহার কমবে, রাজস্ব কম আদায় হবে। অন্যদিকে গ্রাহকরা হয়রানির শিকার হবে।

মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আরও বলেন, আজ যদি শতভাগ নাগরিককে টেলিযোগাযোগ সেবার আওতায় আনা যেত তাহলে কর আদায় হতো প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশের সব নাগরিকের হাতে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়া যেত।

সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টার কাছে বর্ধিত কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিলের আবেদন জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৭ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২০
এমআইএইচ/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।