ঢাকা, রবিবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১২ মে ২০২৪, ০৩ জিলকদ ১৪৪৫

তথ্যপ্রযুক্তি

কর্মীর ‘নিরাপত্তায়’ বাংলালিংকের স্কিম ‍চালু

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৬
কর্মীর ‘নিরাপত্তায়’ বাংলালিংকের স্কিম ‍চালু ছবি: রাজিব / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: কোম্পানির কর্মীদের নিরাপত্তা এবং স্বতন্ত্র চাহিদার কথা মাথায় রেখে একটি স্কিম চালু করার কথা জানিয়েছে বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটর বাংলালিংক।
 
এক কর্মীকে ছাঁটাই ও আরেক কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদের পর অপারেটরটির কর্মীদের অসন্তোষ, কার্যালয়ে ছুটি ঘোষণা এবং দিনভর নানা নাটকীয়তা শেষে রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে এক বিবৃবতিতে এ তথ্য জানায় বাংলালিংক।


 
বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১১ ফেব্রুয়ারি ব্যবসার স্বাভাবিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বাংলালিংক একজন সিনিয়র ম্যানেজারকে অব্যাহতি দেয়। এ ঘটনায় তার কয়েকজন সহকর্মীর মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ ছড়ায়। দুর্ভাগ্যবশত কয়েকজন কর্মকর্তা, সাবেক কিছু কর্মকর্তা এবং কয়েকজন বহিরাগত বাংলালিংক কর্পোরেট অফিসে এসে প্রবেশপথে বাধা দেয়।
 
‘আজ সাধারণ আলোচনা চলাকালে এক কর্মী হঠাৎ অসুস্থ’ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে কিছু কর্মী আবেগবশত হয়ে আবারও উত্তেজনা ছড়ায়। এমতাবস্থায়, দুপুর দু’টার দিকে বাংলালিংক অফিস আজকের জন্য ছুটি দেওয়া হয়। ’
 
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলালিংক ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক মানের ডিজিটাল অপারেটরে পরিণত হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে বাংলালিংকের ভবিষ্যৎ চাহিদা পূরণ এবং ব্যবসায় ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পর্যায়ে যেতে প্রতিষ্ঠানটির ভূমিকা পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
 
‘কর্মীদের নিরাপত্তা এবং স্বতন্ত্র চাহিদার কথা মাথায় রেখে কর্মচারীদের উপকারের জন্য বাংলালিংক একটি স্কিম চালু করেছে, যা মনোনীত কর্মীদের সঙ্গে পরামর্শের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমরা স্বচ্ছ ও ন্যায্য পদ্ধতিতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ’
 
বিবৃতিতে স্কিমের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
 
নেদারল্যান্ডসভিত্তিক ভিমপেলকম লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বাংলালিংক হলো বর্তমানে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর; যাদের ৩ কোটি ২০ লাখের বেশি গ্রাহক রয়েছে।
 
রোববার দুপুরে গুলশানে প্রধান কার্যালয় টাইগার ডেন ছাড়াও বিভাগীয় অফিসগুলো ছুটি ঘোষণা করা হয়। এরপর একটি স্কিম চালুর ঘোষণা দিয়ে মেইল পাঠানো হয় কর্মীদের।
 
ই-মেইলে স্কিমের বিষয়ে বলা হয়, এল ১৮ থেকে এল ২৭ এবং এল-ডিএস গ্রেডের স্থায়ী কর্মচারীরা ২৪ মাসের মূল বেতন নিয়ে এ পরিকল্পের আওতায় অবসরে যেতে পারেন।
 
আর এল-১৪ থেকে এল-১৭ গ্রেডের কর্মীদের মধ্যে যারা গত ৩১ জানুয়ারি পর্য‌ন্ত কমপক্ষে দুই বছর ধরে স্থায়ী হিসেবে চাকরি করছেন, তারা চার মাসের মূল বেতন এবং দায়িত্ব পালনের প্রতি বছরের জন্য চার মাসের মূল বেতন ধরে সর্বোচ্চ ২৮ মাসের বেতন নিয়ে অবসরে যেতে পারবেন।
 
আর এল-৩ থেকে এল-১৩ পর্যন্ত গ্রেডের কর্মীদের মধ্যে যারা গত ৩১ জানুয়ারি পর্য‌ন্ত কমপক্ষে দুই বছর ধরে স্থায়ী হয়েছেন, তারা চার মাসের মূল বেতনসহ প্রতি বছরের জন্য তিন মাসের মূল বেতন ধরে সর্বোচ্চ ৩০ মাসের বেতন নিয়ে অবসরে যেতে পারবেন।
 
বিকেলে টাইগার ডেনে বাংলালিংকের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা শিহাব আহমেদ ওই স্কিমের বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
 
গত ১১ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানের কন্ট্রাকশন বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার শরিফুল ইসলাম ভুঁইয়াকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এর জের ধরে কর্মীরা ওই দিন বাংলালিংকের প্রধান টেকনিক্যাল অফিসার (সিটিও) পেরিয়েন এলহেমিকে সন্ধ্যা থেকে প্রায় রাতভর প্রধান কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যস্থতা ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশ্বাসে অবরুদ্ধদশা থেকে মুক্তি পান পেরিয়েন।
 
আর ছাঁটাইয়ের কোনো পরিকল্পনা আছে কি না- জানতে চাইলে শিহাব আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, কর্মী ছাঁটাই বলতে যা বোঝায় সে রকম কোনো পরিকল্পনা নেই। ডিজিটাল টেকনোলজির প্রতিযোগিতার বাজারে ভালভাবে কাজ করার জন্য কোম্পানি রিস্ট্রাকচারড করা হবে। যেহেতু কিছু কর্মী এসব নিয়ে চিন্তিত, তা চিন্তা করেই স্কিম প্রস্তাব করা হয়েছে।
 
রোববার কর্তৃপক্ষের জিজ্ঞাসাবাদে টেকনিক্যাল বিভাগের কর্মকর্তা মোশতাক অসুস্থ হয়ে পড়েন, তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
 
যে কর্মী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি- তাকে নির্যাতন করার অভিযোগ প্রসঙ্গে শিহাব আহমেদ বলেন, তা ঠিক নয়, কথাবার্তা জিজ্ঞাসা করার সময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।

বাংলাদেশ সময়: ২২০৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৬
এমআইএইচ/এইচএ/

** বাংলালিংকে ছাঁটাই পরিকল্পনায় অসন্তোষ, অফিস ছুটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।