ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

ভারত

রমজানের শুরুতেই কলকাতায় ফল-সবজির দাম বাড়ল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২৪
রমজানের শুরুতেই কলকাতায় ফল-সবজির দাম বাড়ল

কলকাতা: রমজান শুরু হতেই কলকাতার বাজার দরে ঊর্ধমুখিতা দেখা গেছে। ফল থেকে শুরু করে শাক-সবজি-মাছ-মাংস সবকিছুর দাম হঠাৎ বেড়ে গেছে।

তবে স্বস্তি দিয়ে এ বছর খেজুরের দাম কিছুটা আয়ত্তে আছে। এখনো সাধ্যের মধ্যে রয়েছে গরুর মাংসের দামও।  

মঙ্গলবার থেকেই শুরু হয়েছে পবিত্র রমজান মাস। দুনিয়াজুড়ে ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা নিষ্ঠার সঙ্গে একমাস ব্যাপী রোজা পালন করবেন। দীর্ঘ এক মাসজুড়েই ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা সিয়াম সাধনার মাধ্যমে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকেন। সারাদিন অতিবাহিত করার পর সন্ধ্যা বেলায় রোজা ভঙ্গ করেন ইফতারের মাধ্যমে। পবিত্র রমজান মাসে সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাধ্যমত বিভিন্ন ফল, খেজুরের পাশাপাশি মৌসুমি সবজি খেয়ে থাকেন রোজাদাররা।

তবে তথ্য মতে, রমজান মাস শুরু হতে রাজ্যের জেলাগুলোয় দাম না বাড়লের কলকাতায় বাড়তে শুরু করেছে সবজি-ফলসহ মাছ-মাংসের দাম। শহরের বাজারগুলিতে সব কিছুরই দাম ঊর্ধ্বমুখী। বাজার করতে গিয়ে মাথায় হাত মধ্যবিত্তের।

কলকাতা শহরের পার্ক সার্কাস বাজারের এক ফল বিক্রেতা সাজ্জাদ জানান, ড্রাগন ফ্রুট এক পিস ৮০ রুপি, বিটিপিয়ার (নিউজিল্যান্ড) ২৫০ রুপি কেজি, ভালো মানের বেদানা ২০০ রুপি কেজি, তরমুজ (বিদেশি) ১০০ রুপি কেজি, মালটা (নিউজিল্যান্ড) ২০০ রুপি কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ওয়াশিংটনের আপেল ২৭০ রুপি কেজি, এমনকি সাধারণ আপেল ২৩০ রুপি কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া একপিস কিউই ৩৫ রুপি, পাকা পেঁপে ৭০ রুপি কেজি, আঙ্গুর ১০০ - ১১০ রুপি কেজি বিক্রি হচ্ছে। কলার ডজন ৮০ রুপি, দেশি তরমুজ ৪০ রুপি রাখা চ্ছে।

তবে তুলনামূলক খেজুরের দাম এবারও আয়ত্তে রয়েছে মধ্যবিত্তের। আজওয়া খেজুর ৮৫০ রুপি কেজি, কালমি খেজুর ১১শ রুপি কেজি, অম্বর খেজুর এক হাজার রুপি কেজি, বাড়বাড়ি খেজুর ১২শ রুপি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সৌদি মেদাজুল খেজুর মান অনুযায়ী, ৭শ থেকে দুই হাজার রুপি রাখা হচ্ছে। এছাড়া ওই জাতের কয়েক প্রকার খেজুরের দাম কেজি প্রতি ৭'শ রুপি থেকে শুরু দেখা গেছে। তবে সারাবছর যে খেজুর পাওয়া যায়, তার চলতি নাম চালু খেজুর। যার দাম কেজিপ্রতি একই দর রয়ে গেছে, দেড়শ থেকে ২শ রুপি মধ্যে।

তবে ফলের মতোই দাম বেড়েছে সবজির বাজারে। কলকাতার মুসলিম অধ্যুষিত পার্ক সার্কাস বাজারের সবজি বিক্রেতা বাপি জানান, গাজর ৫০ রুপি কেজি,  শসা ও ঝিঙে দুদিন আগেই ৪০ রুপি ছিল, নতুন দাম ৬০ রুপি কেজি, দশ রুপি বেড়ে মুলা হয়েছে ৫০ রুপি এবং ছোট বেগুন ৫০ রুপি কেজি রাখা হচ্ছে। এছাড়া পেঁপে ৬০ রুপি প্রতি কেজি। মৌসুমী সজনে ডাটা এক সপ্তাহ আগে একশ রুপি ছিল। মঙ্গলবার বিকেলের রাজারে দেড়শ রুপি কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

পালং শাক ৪০ রুপি কেজি, বিনস ৬০ রুপি কেজি, কুমড়া ৪০ রুপি কেজি, নারিকেল প্রতি পিস ৪০ রুপি, বাঁধাকপি এক পিস ৩০ রুপি এবং এক আঁটি লাল শাক ১০ রুপি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া ব্রয়লার মুরগির মাংস ২৫০ রুপি কেজি এবং পাঁঠার মাংস ৮৪০ রুপি কেজি। স্বস্তি রয়েছে কিছুটা গরুর মাংসে। বর্তমানে দাম বেড়ে হাড়সহ গরুর মাংস ২২০ রুপি এবং হাড়ছাড়া কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ রুপি।

ভাজা সেমাই ১০০ রুপি, লাচ্ছা সেমাই ১৬০ রুপি প্রতি কেজি এবং বেনারসি সেমাই ১৫০ রুপি প্রতি কেজি দরে কলকাতার খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে।

পাশপাশি সবার অলক্ষ্যে দাম বেড়েছে ইসবগুলের ভুসির। যার জন্য অনেকে দোকানি রাখাই বন্ধ করে দিয়েছেন। বর্তমানে মান অনুযায়ী, পাইকারিতে প্রতি কেজি ইসবগুলের ভুসির দাম পড়ছে এক হাজার থেকে ১২শ রুপি। এছাড়া ভারতীয় ব্রান্ডের একশো গ্রামের প্যাকেটের দাম পড়ছে ১৭০-১৯০ রুপি।

পার্ক সার্কাসের বাসিন্দা এনামুল খান বলেছেন, রমজান মাসের জন্য সবজি, ফল কিনতেই হবে। সেখানে এত চড়া দামের জন্য অসুবিধা তো হচ্ছেই। দাম বেশি বলে পরিমাণে কম কিনতে হচ্ছে।

ওই অঞ্চলের আরেক বাসিন্দা শাহনাজ বলেছেন, রমজান মাসে আমাদের সূর্যোদয়ের আগে এবং সূর্যাস্তের পরে খাবারের খাওয়ার রীতি। সূর্যাস্তের পর খেজুর, ফল বিভিন্ন সবজি ও তেলেভাজা খেয়ে ইফতার করা হয়। তবে এবারে যা ফলের দাম, তাতে বেশি পরিমাণে ফল কেনা সম্ভব নয়।

বাংলাদেশ সময়: ২২৪৭ ঘণ্টা, ১২ মার্চ, ২০২৪
ভিএস/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।