ঢাকা, শুক্রবার, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

মেহেরপুরে হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে রোগীর চাপ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২১
মেহেরপুরে হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে রোগীর চাপ

মেহেরপুর: ঘন কুয়াশা আর মৃদু শৈত্য প্রবাহের কারণে মেহেরপুরে শীতের প্রকোপ দিন দিন বাড়ছে। আর শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, গাংনী উপজেলা ও মুজিবনগর উপজেলা হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে শ্বাসজনিত রোগীর চাপ।

অ্যাজমা, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, অ্যালার্জি, সর্দি-কাশিসহ শীতজনিত নানা অসুখের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক রোগীর চাপে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। মেহেরপুরের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে বহির্বিভাগে এখন রোগীর চাপ বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। বর্তমানে
ভর্তি রোগী ও আউটডোরে চিকিৎসা নেওয়া ৫০ শতাংশেরও বেশি শীতজনিত রোগে আক্রান্ত।

প্রতিদিনই বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। আগে দৈনিক ৩০-৪০ জন সেবা নিলেও শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫০-২০০ জনে। আর হাসপাতালটিতে ভর্তি থাকা রোগীর ৫০ শতাংশই শীতজনিত রোগে আক্রান্ত। গত এক সপ্তাহে হাসপাতালটিতে রোগী ভর্তি হয়েছে ১৫০ জন ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা নিয়ে।  

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাক্তার এমকে রেজা বাংলানিউজকে জানান, দুই সপ্তাহে হাসপাতালটিতে প্রায় দুই শতাধিক শীতজনিত শ্বাসকষ্ট, ডাইরিয়া অ্যালার্জি সর্দি কাশি নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্যমতে গত এক সপ্তাহে সেখানে ৫০-৬০ জন রোগী শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।

সরকারি এসব হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন গড়ে ৩০-৩৫ জন নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছেন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি যাচ্ছে ২০-২৫ জন। বর্তমানে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১০ বেডের বিপরীতে ৩২ জন, পুরুষ ও শিশু ওয়ার্ডে ৪০ বেডের বিপরীতে ৯৮ জন মহিলা ও গাইনী ওর্য়াডে ৪০ বেডের বিপরীতে ৮৫ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন।

নতুন রোগীদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু ও বৃদ্ধ। তাই শীতে বাড়তি সতর্কতারও পরামর্শ চিকিৎসকদের।

জানা যায়, মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালটি ১০০ শয্যার থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করার বয়স হয়েছে প্রায় ১ যুগেরও বেশি। অথচ পর্যাপ্ত জনবল যেমন নিয়োগ দেওয়া হয়নি, তেমনি সরঞ্জাম এখনো পৌঁছায়নি হাসপাতালে। এতে রোগীর সংখ্যা যে হারে বাড়ছে তাতে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

হাসপাতালে পুরুষ ওয়ার্ডটি করোনা ওয়ার্ড করায় পুরুষ রোগীদের শিফট করা হয়েছে শিশু ওয়ার্ডে এতে রোগীর চাপে পা ফেলার জায়গা নেই সেখানে।

হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. আশীষ কুমার দেবনাথ বাংলানিউজকে বলেন, কয়েকদিন আগেও হাসপাতালে রোগীর চাপ কম ছিল। কিন্তু দুয়েক দিন ধরে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আবহাওয়াজনিত কারণে মানুষরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

হাসপাতালের কনসালটেন্ট (শিশু) ডা. মাহবুবা তাজমিলা বাংলানিউজকে বলেন, ঠাণ্ডাজনিত সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া, এলার্জি, নিউমোনিয়া ইত্যাদি রোগের প্রকোপ এখন বেশি। বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশুরা এসব রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।

আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. মকলেছুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে হাসপাতালে রোগীর চাপ একটু বেশি। প্রতিবছরই এই সময়ে মানুষ বিভিন্ন রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। আমাদের জনবল সংকট, তারপরও চেষ্টা করছি যাতে রোগীরা সঠিক সেবা পায়।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, হাসপাতালে সিনিয়র কনসালটেন্ট মেডিসিন, শিশু, সার্জারি, কার্ডিওলজি, জুনিয়র অর্থ সার্জারি, চক্ষু, গাইনি, এনেসথেসিয়া, প্যাথলজি, রেডিওলজি, চর্ম ও যৌন, আরএমও, রেডিওলজিস্ট, প্যাথলোজিস্ট, মেডিক্যাল অফিসারসহ অন্য পদে ৪২টি সৃষ্ট পদ থাকলেও আছে মাত্র ১৭ জন। ফাঁকা রয়েছে ২৫টি পদ। এদের মধ্যে ১১ জন মেডিক্যাল অফিসারের মধ্যে রয়েছেন মাত্র দুইজন। সংকট আর সমস্যা নিয়েই হাসপাতালটিতে চিকিৎসা সেবা চালু রাখা হয়েছে। তবে জনবল কম থাকলেও রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।