ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে উল্টো অসুস্থ হচ্ছেন রোগী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৯
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে উল্টো অসুস্থ হচ্ছেন রোগী হাসপাতালে মেঝেতে রোগী। ছবি: বাংলানিউজ

মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা সুস্থতার পরিবর্তে উল্টো অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

হাসপাতালের রোগীর সংখ্যা ধারণক্ষমতার বেশি ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ হওয়ায় নতুন করে রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন, এমন অভিযোগ করছেন ভর্তি হওয়া রোগীরা। রোগীর বাড়তি চাপে নির্ধারিত বেডে রোগী থাকায় বাধ্য হয়ে ওয়ার্ডের মেঝেতে, বারান্দায় গাদাগাদি করে তারা চিকিৎসা নিতে ভর্তি হচ্ছেন মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে।

এদিকে চিকিৎসকের সংকট অন্যদিকে রোগীর বাড়তি চাপে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিনে দেখা যায়, অপরিষ্কার ও অপরিছন্ন পরিবেশে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে রোগীর বাড়তি চাপের কারণে বারান্দায় বেড ফেলে গাদাগাদি করে শুয়ে আছেন রোগীরা। হাসপাতালে মেঝেতে রোগী।  ছবি: বাংলানিউজপ্রতিটি ওয়ার্ডের পা রাখার জায়গাটুকু নেই। বারান্দায় শুয়ে থাকা রোগীরা নানান রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হলেও নতুন করে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন তারা। নির্ধারিত সিটে রোগী পরিপূর্ণ থাকায় অতিরিক্ত রোগীরা বারান্দায় শুয়ে থাকার কারণে অফিস স্টাফ ও রোগীদের দেখতে আসা স্বজনদের পায়ের ধুলায় অসহনীয় যন্ত্রণায় ভুগছেন তারা কেউ কেউ দেওয়ালের সঙ্গে পিঠ ঠেকিয়ে নাকে রুমাল ও কাপড় দিয়ে বসে আছে ধুলাবালির হাত থেকে রক্ষা পেতে।

রোগী রোকেয়া বেগম বাংলানিউজকে বলেন, আমি সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) ভর্তি হয়েছি। কিন্তু কোনো সিট না পেয়ে বারান্দায় শুয়ে আছি। এখন পর্যন্ত আমাকে দেখতে কোনো চিকিৎসক আসেননি আর হাসপাতালের যে অবস্থা তাতে আমি আর কিছুক্ষণ থাকলে আরও অসুস্থ হয়ে পড়বো।

বাইরে থেকে আসা দুর্গন্ধে ভর্তি হওয়া রোগীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। যাদের টাকা পয়সা আছে তারা ক্লিনিকে গিয়ে ডাক্টার দেখাচ্ছেন বলে যোগ করেন এই রোগী।

ওই রোগীর স্বামী আমির আলী বাংলানিউজকে বলেন, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার মান এতটা খারাপ ভাবতেই অবাক লাগে। যার লোক আছে সে হাসপাতালের সেবা পাচ্ছেন আর যার লোক নেই সে হাসপাতালের বারান্দায় দিনের পর দিন পড়ে থাকছেন। সরকার নির্ধারিত হাসপাতালের সিট খালি হলেও সে ছিটের কোনো সন্ধান পাওয়া যায় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. আওয়াল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের হাসপাতালটি ২৫০ শয্যায় উন্নতিকরণ হলেও চিকিৎসক রয়েছেন ১০০ শয্যার। এর মধ্যে অতিরিক্ত রোগীর চাপ। বর্তমানে এ হাসপাতালে ভর্তি রোগী আছেন প্রায় পাঁচ শতাধিক। ডেঙ্গুরোগীদের জন্য তিনজন চিকিৎসক সার্বক্ষণিক ও বাকি সব চিকিৎসক অন্য রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। অতিরিক্ত রোগীর চাপের কারণে আমাদের নির্ধারিত সিট পরিপূর্ণ হওয়ায় রোগীদের বারান্দায় বেড ফেলে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে আমাদের স্টাফ ও রোগীদের স্বজনদের পায়ের ধুলায় কিছুটা অপরিষ্কার হচ্ছে হাসপাতাল। আমরা একাধিকবার বলেছি রোগীর সঙ্গে একজনের বেশি থাকতে পারবে না। কিন্তু আমাদের কথা শুনতে চায় না রোগীর স্বজনেরা। এর কারণে হাসপাতালে এত নোংরা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৯
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।