ঢাকা, বুধবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

হাসপাতালে দুদকের হানা, দালালদের চম্পট

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০২ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১৯
হাসপাতালে দুদকের হানা, দালালদের চম্পট

হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে হানা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে অভিযান টের পেয়ে চম্পদ দিয়েছে হাসপাতালকে ঘিরে আশপাশে থাকা একাধিক দালাল চক্র।

অভিযানে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে অব্যবস্থাপনাসহ সরকারি ওষুধ বিতরণেও নানা অনিয়মের চিত্র ধরা পড়ে।

রোববার (২৬ মে) দুপুরে দুদক হবিগঞ্জের উপ-পরিচালক অজয় সাহার তত্ত্বাবধানে অভিযানটি পরিচালনা করা হয়।

এসময় সহকারী পরিচালক রশাদ মিয়া, হাবিবুর রহমান ও উপ-সহকারী পরিচালক শোয়েব হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

দুদকের উপ-পরিচালক অজয় সাহা বাংলানিউজকে বলেন, হাসপাতালকে দালাল মুক্ত করার উদ্দেশ্যে পরিচালিত অভিযান টের পেয়ে চক্রটি পালিয়েছে। এ ব্যাপারে তত্ত্বাবধায়ক রতীন্দ্র চন্দ্র দেব’র সঙ্গে কথা হয়েছে। ভবিষ্যতেও অভিযান অব্যাহত থাকবে।

অপর একটি সূত্র জানায়, সকালে অভিযানকালে দুদক কর্মকর্তারা হাসপাতালে কোনো ডাক্তার পাননি। রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন ইন্টার্নরা। কিছুক্ষণ অবস্থান করার পরও ডাক্তার না পেয়ে চলে যান তারা। পরে পুনরায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় দুদক টিম সদর হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে অব্যবস্থাপনা দেখতে পায়। সরকারি ওষুধ বিতরণেও ধরা পড়ে নানা অনিয়ম।  

দুদক কর্মকর্তারা এসব অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম সমাধানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সাত দিনের সময় বেঁধে দিয়েছে বলেও সূত্র জানায়।
হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে।  ছবি: বাংলানিউজ
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে দালালদের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছিলেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। প্রতিদিনই প্রতারিত হচ্ছিলেন বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা সহজ-সরল প্রকৃতির লোকজন। দালালদের খপ্পরে পড়ে অনেক রোগীর প্রাণহানির মতো ঘটনাও ঘটে। শহরের বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকের পৃষ্ঠপোষকতায় সক্রিয় ছিল এ দালাল চক্রটি।

২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় দালাল নির্মূলে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কিন্তু কাগজে-পত্রেই সীমাবদ্ধ থাকে এ কমিটির কার্যক্রম। অবশেষে তিন মাস পর প্রকাশ করা হয় ২৮ দালালদের তালিকা। এরপর দুইজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।

দালাল নির্মূল উপ-কমিটির সভাপতি ডা. মিঠুন রায়সহ তিনজন স্বাক্ষরিত তালিকা অনুযায়ী দালালরা হলেন- সদর উপজেলার ছোট বহুলা গ্রামের ইউনুছ মিয়া, হবিগঞ্জ শহরের মোহনপুর এলাকার সেলিম মিয়া, বানিয়াচং উপজেলার শাহিন মিয়া, একই উপজেলার কান্দিপাড়া গ্রামের অসিত দাস, হবিগঞ্জ শহরের শংকরের মুখ এলাকার সজল দাস, সদর উপজেলার হাতির থান গ্রামের নুরুল মিয়া, লাখাই উপজেলার বুল্লা গ্রামের সাদিকুন্নেছা, হবিগঞ্জ শহরের মোহনপুর এলাকার ছায়া বেগম, ছোট বহুলা গ্রামের রেজিনা বেগম, ইনাতাবাদ এলাকার সিরাজ মিয়া, বড় বহুলা গ্রামের জাফর মিয়া, চুনারুঘাট উপজেলার মাসুক মিয়া, মির্জাপুর গ্রামের শাহিন মিয়া, অনন্তপুর আবাসিক এলাকার আব্দুস সালাম, একই এলাকার আব্দুল মালেক, বানিয়াচং উপজেলার হিয়াল গ্রামের সেলিম মিয়া, অনন্তপুর এলাকার আব্দুল খালেক, অসিত, উত্তর সাঙ্গর গ্রামের সুজন, একই গ্রামের চয়ন, আজমিরীগঞ্জ উপজেলার মাছুম, লাখাই উপজেলার করাব গ্রামের হাছান, চুনারুঘাট উপজেলার রেহেনা, হবিগঞ্জ সদর উপজেলার যাত্রাবড়বাড়ি এলাকার টেনু মিয়া, বানিয়াচংয়ের মিজান, চুনারুঘাটের মাসুক ও শহরের রাজনগর এলাকার দীনুল ইসলাম।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭০২ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৯
জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।