ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

ভবন নির্মাণ হলেও চালু হচ্ছে না ২৫০ শয্যা হাসপাতাল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪২ ঘণ্টা, মে ৫, ২০১৮
ভবন নির্মাণ হলেও চালু হচ্ছে না ২৫০ শয্যা হাসপাতাল নির্মিত ১৫০ শয্যার নতুন ভবন। ছবি: বাংলানিউজ

বাগেরহাট: নতুন ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হলেও নানা জটিলতায় আটকে আছে বাগেরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল চালুর কাজ। গণপূর্ত বিভাগ ও স্বাস্থ্য বিভাগের চিঠি চালাচালির কারণে চালু হচ্ছে না হাসপাতালটি। এটি ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করার জন্য নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শেষের দুইমাস পার হলেও কবে চালু হবে তাও বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা।

বাগেরহাটের প্রায় ১৭ লাখ মানুষের প্রধান চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠান বাগেরহাট সদর হাসপাতাল। ১৯৯৭ সালে ৫০ শয্যা থেকে হাসপাতালটি ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়।

২০১৩ সালে এটি ২৫০ শয্যায় উন্নীত করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। পরে এ বছরেরই জুনে ‘হেলথ পপুলেশন অ্যান্ড নিউট্রেশন সেন্টার ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট’-এর আওতায় ২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫০ শয্যাবিশিষ্ট নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। একবছর আগে ছয়তলা ভবনের মূল কাজও শেষ হয়। কিন্তু ভেতরের কাজ শেষ হয় চলতি বছরের জানুয়ারিতে। তবে গণপূর্ত বিভাগ, বাগেরহাট ও স্বাস্থ্য বিভাগের আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে ভবন হস্তান্তর ও চালুর বিষয়টি ঝুলে আছে।

এ ভবনে ১৫০ শয্যার পাশাপাশি, নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ), সিটিস্ক্যান ব্যবস্থা, বহির্বিভাগ চিকিৎসা ব্যবস্থা, নিজস্ব বিদ্যুৎ, পানি সরবরাহ ব্যবস্থার সঙ্গে সিঁড়িসহ একটি লিফটের ব্যবস্থা রয়েছে। ১০০ শয্যার বাগেরহাট সদর হাসপাতাল।  ছবি: বাংলানিউজসচেতনদের মত, স্বাস্থ্যসেবা পেতে জেলা সদর হাসপাতালের প্রতি সবার নজর। কিন্তু আমাদের বাগেরহাটে ডাক্তার ও শয্যা সংকটের কারণে তেমন স্বাস্থ্যসেবা মিলছে না। ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল চালু হলে ডাক্তার ও শয্যা সংকট থাকবে না। এজন্য দ্রুত হাসপাতালটি চালু ও জনবল নিয়োগ করে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে দাবি তাদের।

গোপালকাঠী এলাকার রোগীর স্বজন মুশফিকুর রহমান রনি বাংলানিউজকে বলেন, আমরা চিকিৎসা সেবার জন্য এ হাসপাতালের ওপর নির্ভর করি। অসুস্থ বোনকে নিয়ে এখানে এসেছি। দুইদিন ফ্লোরে থাকার পর বেড পেয়েছি। শুনেছি হাসপাতালে ২৫০ শয্যা হবে। এটা চালু হলে আমাদের এত কষ্ট করতে হত না।

সদর হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার মোল্লা নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ১০০ শয্যায় রোগীর সঙ্কুলান হয় না। দ্রুত ২৫০ শয্যা চালু করতে পারলে আমরা রোগীদের আরও সেবা দিতে পারব।

বাগেরহাট সিভিল সার্জন ডা. অরুন চন্দ্র মণ্ডল বাংলানিউজকে বলেন, আগের ভবনের সঙ্গে নতুন ভবনের লিংক করিডোর না থাকার কারণে আমরা ভবনটি বুঝে নিচ্ছি না। দ্রুত এই কাজটি শেষ করার জন্য গণপূর্ত বিভাগকে জানানো হয়েছে।

তিনি বলেন, এ ভবনটি চালু হলে জনবল কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি চিকিৎসকের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া এতে কার্ডিওলোজি বিভাগও চালু হতে পারে। সব মিলিয়ে চিকিৎসার মান বাড়বে।

গণপূর্ত বিভাগ বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী সতীনাথ বসাক বাংলানিউজকে বলেন, বাগেরহাট সদর হাসপাতালটি ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত প্রকল্পের আওতায় আমরা কাজ শেষ করেছি। ফেব্রুযারিতে আমরা স্বাস্থ্য বিভাগকে ভবনটি বুঝে নিতে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু তারা বুঝে নিতে চাচ্ছে না। তাদের দাবি পুরাতন ভবনের সঙ্গে লিংক করিডোর করে দিতে হবে। তবে এতেও স্বাস্থ্যসেবা দিতে কোনো বাধা হবে না । তারপরও আমরা লিংক করিডোর করার জন্য দুইবার দরপত্র আহবান করেছি। কিন্তু কোনো ঠিকাদার অংশ নেননি। আবারও চেষ্টা করা হচ্ছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভবনটি বুঝে না নেওয়ায় সরকারি সম্পদ নষ্ট হতে পারে বলে আশঙ্কা এ কর্মকর্তার।

বাংলাদেশ সময়: ০০৩৮ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০১৮
টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।