ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

পাটগ্রামে সিলোকোসিস রোগে আরো ১ শ্রমিকের মৃত্যু

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৪
পাটগ্রামে সিলোকোসিস রোগে আরো ১ শ্রমিকের মৃত্যু ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে সিলোকোসিস রোগে আক্তান্ত হয়ে মজিবর রহমান(৪৫) নামে আরো এক পাথর শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।

এ নিয়ে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ৪১ জনের মৃত্যু হলো।



বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ৮টার দিকে নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। ঢাকার জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতাল থেকে ফেরত পাঠানো একই গ্রামের তার সহকর্মী নুরুজ্জামান(৩৫) সোমবার দিবাগত রাতে সিলোকোসিস রোগে আক্তান্ত হয়ে মারা যান।

মৃত পাথর শ্রমিক মজিবর রহমান পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের উফারমারা বামনদল এলাকার ইয়াকুব আলীর ছেলে।

মৃতের পারিবারের সদস্যরা বাংলানিউজকে জানান, মজিবর রহমান ও তার প্রতিবেশী মৃত নুরুজ্জামানসহ দীর্ঘদিন বুড়িমারীতে অবস্থিত ঢাকার ভিক্টরি মোজাইক নামে একটি পাথর কারখানায় দৈনিক ১শ’ টাকা মজুরির বিনিময়ে পাথর ক্রাসিংয়ের কাজ করতেন। সেখানে প্রায় তিন বছর ধরে এ কাজ করেছেন তারা।
 
জানা গেছে, পাথর ক্রাসিংয়ের সময় উড়ন্ত ধূলা নাক-মুখ দিয়ে শরীরে ঢুকে সিলোকোসিস রোগ হয়। পরে ধীরে ধীরে তিনি অসুস্থ বোধ করলে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। কিন্তু পুরোপুরি সুস্থ হননি।
 
২০১২ সালে ঢাকার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) নামের একটি সংগঠন এসব রোগীকে সনাক্ত করার সময় মজিবর রহমানকে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অস্থায়ী ক্যাম্পে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। সেখানে বেশ কিছুদিন চিকিৎসা চলে তার।

অস্থায়ী ক্যাম্পে চিকিৎসা শেষ হলে পুনরায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কয়েকবার ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। তারপরও তিনি  সুস্থ হননি। অবশেষে বুধবার সকালে নিজ বাড়িতে মারা যান মজিবর রহমান।

মৃত পাথর শ্রমিক নুরুজ্জামান ও মজিবরের সহকর্মী পাথর শ্রমিক মোমিন উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, পাথরের কাজ করলে মজুরি বেশি তাই অভাবের সংসারে অর্থ যোগাতেই পাথর কারখানায় কাজ করেন তারা।

এ রোগে মজিবর ও নুরুজ্জামানসহ এ পর্যন্ত মোট ৪১ জনের মৃত্যু হলেও থেমে থাকেনি পাথর ভাঙার কাজ। এখনও পুরো পাটগ্রাম উপজেলা জুড়ে প্রকাশ্যে রাস্তার পাশেই চলছে পাথর উত্তোলন ও ভাঙার কাজ। পাথর শ্রমিকদের মুখে মার্কস ব্যবহার বাধ্যতামূলক থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।

এছাড়াও সড়ক-মহাসড়কের পাশে এভাবে পাথর ভাঙা ও পরিস্কার করায় পাথরের ধূলোবালি পথচারীদেরও মারাত্বক ক্ষতি করছে। ফলে এ অঞ্চলে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এ রোগের প্রাদুর্ভাব।  

চলতি বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতাল থেকে ফেরত পাঠানো দুলাল মিয়া নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।