ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

বয়ঃসন্ধিকাল উদযাপনের তাগিদ সংস্কৃতিমন্ত্রীর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪১ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৪
বয়ঃসন্ধিকাল উদযাপনের তাগিদ সংস্কৃতিমন্ত্রীর সংস্কৃতিকমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর

ঢাকা: ছেলে-মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল (শরীরের বিশেষ পরিবর্তনের সময়) উদযাপনে অভিভাবকদের এগিয়ে আসা দরকার। এতে ওই সময়ে ছেলা-মেয়েরা যে মানসিক চাপের মধ্যে থাকে তা থেকে মুক্তি পাবে।

একই সঙ্গে তারা সচেতন হবে নিজেদের প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কেও।

রাজধানীর আগারগাঁও এলজিইডি ভবন মিলনায়তনে আয়োজিত 'শিশু-কিশোরদের বেড়ে ওঠার গল্প' শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় সংস্কৃতিকমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এসব কথা বলেন। সভাটি আয়োজন করে গণস্বাক্ষরতা অভিযান ও তার সব সহযোগী সংগঠন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী তার নিজের জীবনের নানা অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমার মেয়ের যখন প্রথমবারের মতো মাসিক হয়, তখন সে খুব ভেঙে পড়েছিলো। খেয়াল করলাম সে তার মার সঙ্গে ফিসফিসিয়ে কথা বলছে। এসব দেখে আমার স্ত্রীকে কী হয়েছে জিজ্ঞেস করায় সে বলেছিলো, তোমার মেয়ে বড় হয়ে গেছে। আমি বুঝতে পেরে সেদিনটা আনন্দ করে কাটিয়েছিলাম। পরিবারের সবাই মিলে সেদিন চাইনিজ খেয়েছিলাম। এতে আমার মেয়ে সেদিন নানা সংকোচ ও ভয় থেকে রক্ষা পেয়েছিলো।

মন্ত্রী বলেন, যে বিষয় আমি জানি, দেখি, মেনে নিই সেটা প্রকাশ করতে দোষ কি। তাই এ বিষয়ে বাবা-মাকেই এগিয়ে আসা উচিত। বয়ঃসন্ধিকালে শরীরের নানা পরিবর্তন নিয়ে ছেলে-মেয়েদের পাশে থাকা উচিত। এসময় তাদের মানসিক সাপোর্ট দিতে হবে।

আসাদুজ্জামান নূর বলেন, আমরা একটা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি মুক্তচিন্তার সমাজ গড়ে তোলার জন্য। কিন্তু কী পেরেছি? ছেলে-মেয়েদের প্রজনন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রয়োজন মুক্তচিন্তা ভিত্তিক সমাজ। শুধু পাঠ্যপুস্তকে এ বিষয়ে কারিকুলাম অন্তর্ভুক্ত করে লাভ নেই। এজন্য মুক্তচিন্তা ভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে হবে।

এ সময় তিনি স্কুলে সাংস্কৃতিক চর্চা বাড়ানো দরকার বলেও মন্তব্য করেন।

শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, শিশু-কিশোররা অনেক কিছু বোঝে। আমাদের ছেলে-মেয়েরা অনেক স্মার্ট। কিন্তু আমরা বড়রাই তারা কিছু বোঝে না ভেবে মুখ ফিরিয়ে নিই। কিন্তু তাদের বয়ঃসন্ধিকালে বা শরীরের সুনির্দিষ্ট পরিবর্তনের সময় পাশে দাঁড়াতে হবে।

কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, শরীরের পরিবর্তনগুলোর মাধ্যমেই কোনো ছেলে বা মেয়ে জীবনের সুন্দর অংশে পদার্পণ করে। সভ্যতা বিকাশের শুরু হয় এভাবেই। তাই এ বিষয় নিয়ে লুকোচুরি না করে খোলামেলাভাবে পারিবারিক বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলোচনা হওয়া উচিত। তাতে অজ্ঞতা দূর হবে। একই সঙ্গে প্রজনন স্বাস্থ্য সুরক্ষিত হবে।

তিনিও এসময় ছেলে-মেয়েদের শারীরিক বিশেষ পরিবর্তনের সময় পারিবারিকভাবে আনন্দ বা সময়টি উদযাপন করার তাগিদ দেন।

আয়োজক সংগঠনের নিরর্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যারয় শিক্ষক এ আই মাহবুব উদ্দিন, তাসনীম আহতার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া অনুষ্ঠানে একটি উন্মুক্ত আলোচনা পর্বও রাখা হয়। এ সময় দেশের বিভিন্ন স্কুল থেকে আগত ছেলে-মেয়েরা তাদের বিভিন্ন বিব্রতকর অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১১২ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।