ঘুম থেকে উঠে এক পেয়ালা গরম কফি না হলে দিনই শুরু হয় না অনেকের। একটানা কাজের ক্লান্তি কাটাতেও সেই কফিই চাই।
কফি পাউডার কিনে এনে বাড়িতে বানিয়ে খাওয়ার চলই বেশি। কফির দানা পিষে সে কফি বানিয়ে খান ক’জনে? সমস্যাটা হচ্ছে, দোকান থেকে সিল করা বোতলে যে কফি পাউডার কেনা হচ্ছে, তার কতটা কফি বীজ থেকে তৈরি খাঁটি পাউডার রয়েছে, আর কতটা মেশানো ভেজাল, তা বোঝা প্রায় অসাধ্য। অনেকেই বলবেন, পনির, দুধ, মশলাপাতিতে ভেজাল মিশছে, সে না হয় বোঝা গেল, কিন্তু কফিতেও ভেজাল?
জাতীয় খাদ্যগুণ নির্ণায়ক সংস্থা (এফএসএসএআই) সতর্ক করে জানিয়েছে, কফি পাউডারের মধ্যেই মিশছে ভেজাল। কখনও মেশানো হচ্ছে তেঁতুল বীজের গুঁড়া, কখনও খেজুর বীজের গুঁড়া। তাছাড়া স্টার্চ, বিভিন্ন দানাশস্য পেষাইয়ের পরে পড়ে থাকা ধুলোবালিও মিশছে কফিতে।
এই ভেজাল মেশানো কফি দিনের পর দিন খেলে, তার প্রভাব পড়বে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে। কফিতে থাকা ক্যাফিন ডোপামিনের মতো নিউরোট্রান্সমিটার ক্ষরণে সাহায্য করে। পাশাপাশি রক্তে অ্যাড্রেনালিন হরমোনের ক্ষরণও বাড়ায়। যে কারণে কফি খেলে ক্লান্তি কাটে, শরীর চনমনে হয়। এখন যদি কফিতেও নানা রকম রাসায়নিক মেশানো হয়, তা হলে ক্যাফিনের সঙ্গে সে সবও রক্তে মিশবে। এর প্রভাব মারাত্মক হয়ে দেখা দেবে শরীরে।
ভেজাল ধরার কোনো উপায় আছে কি?
এফএসএসএআই জানিয়েছে, কফি পাউডারে ভেজাল মেশানো আছে কি না, তা বোঝার কয়েকটি উপায় আছে। অন্তত সাধারণ মানুষ বাড়িতে কফি কিনে এনে তা পরীক্ষা করে দেখতে পারেন।
কী কী সেই পদ্ধতি?
ওয়াটার টেস্ট
এক গ্লাস পানিতে এক চামচ কফি পাউডার মিশিয়ে ভালো করে গুলতে হবে। এবার গ্লাসটি মিনিট পাঁচেক রেখে দিন। কফি যদি খাঁটি হয়, তা হলে পানির ওপরে ভাসবে। আর বীজ বা দানাশস্যের ধুলো মেশানো থাকলে তা গ্লাসের নিচে গিয়ে জমা হবে। পানির নিচের অংশে খুব গাঢ় রঙের ধুলোবালি জমা হবে।
ব্লটিং পেপার টেস্ট
একটি ব্লটিং পেপারের ওপর সামান্য কফির গুঁড়া নিন। এবার আঙুল দিয়ে চেপে দেখুন যদি গুঁড়া মিহি হয়ে যায়, তা হলে বুঝতে হবে সেটি খাঁটি। ভেজাল মেশানো থাকলেই কফিতে দানা ভাব থাকবে।
রং দিয়ে যায় চেনা
কফি পাউডারের রং গাঢ় খয়েরি বর্ণের হয়। তার একটা গন্ধও আছে। কিন্তু ভেজাল মিশলে তার রঙে বদল আসবে। খয়েরির বদলে রং কালচে হবে। গন্ধও অন্যরকম হবে।
আরও একটি জিনিস খেয়াল করতে হবে, তা হলো খাঁটি কফির পাউডার নরম, ঝুরঝুরে হয়। ভেজাল মিশলে তা আঠালো হবে।
এএটি