বরগুনায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। বুধবার (১১ জুন) একদিনেই প্রাণ হারিয়েছেন দুইজন।
চান মিয়া সদর উপজেলার এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং গোসাই দাস বরগুনা পৌরসভার শহীদ স্মৃতি সড়কের বাসিন্দা ছিলেন।
চান মিয়ার মেয়ে কুলসুম জানান, তিনদিন আগে বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আজ সকালে প্লাটিলেট পরীক্ষায় দেখা যায় তা ৬৪ হাজারে নেমে এসেছে। দুপুরেই বাবা মারা যান।
হাসপাতাল সূত্র বলছে, তাদের উভয়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়, তবে স্বজনরা তাদের বরিশালে না নিয়ে হাসপাতালে রেখেই চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
বরগুনা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. তাজকিয়া সিদ্দিকাহ বলেন, রেফার করার পরও স্বজনরা রোগীদের বরিশালে না নিয়ে আসায় তাদের অবস্থার আরও অবনতি ঘটে এবং মৃত্যু হয়।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. রেজওয়ানুর আলম জানান, দুজনই বয়স্ক ছিলেন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন। অবস্থার অবনতি হলে বরিশালে পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া হলেও তারা এখানেই থেকে যান।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত) হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৭৫ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৭২ জন রোগী, যার মধ্যে ৩১ জন শিশু।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, একদিনে জেলায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৭৯ জন। চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত জেলায় ১ হাজার ৫৪৪ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন এবং মোট মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের।
বরগুনাবাসী এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এই পরিস্থিতিকে ‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থার চূড়ান্ত ব্যর্থতা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। স্থানীয়রা বলছেন, পর্যাপ্ত চিকিৎসক, নার্স ও ডেঙ্গু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিদিনই ঝরে পড়ছে মূল্যবান প্রাণ।
জনস্বার্থে ডেঙ্গু প্রতিরোধে দ্রুত মশক নিধন অভিযান, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং জরুরি চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন বরগুনার নাগরিকরা।
এসএএইচ