ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

দেশে শিশু মৃত্যুহার কমেছে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১২
দেশে শিশু মৃত্যুহার কমেছে

ঢাকা: গত ২০ বছরে সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও শিশু মৃত্যু হার হ্রাস পেয়েছে। ১৯৯০ সালে শিশুমৃত্যু হার ছিল ১ লাখে ১৩৯।

২০ বছরে এ হার লাখে ৯৩ জন কমে ২০১১ সালে তা ৪৬ এ নেমেছে।

বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের অগ্রগতি প্রতিবেদন-২০১২’তে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২০ বছরে বিশ্বে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্য  মাত্রায় হ্রাস পেয়েছে। এসময়ে শিশুমৃত্যুর হার আগের তুলনায় প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।

বিশ বছর আগে ১৯৯০ সালে বিশ্বে ৫ বছরের কম বয়সী ১ কোটি ২০ লাখ শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু ২০ বছর পর ২০১১ সালে ৫ বছরের কম বয়সী ৬৯ লাখ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ১৯৯০ সালে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুর মৃত্যুর দৈনিক হার ছিল প্রায় ৩৩ হাজার, আর গত বছর এ হার ছিল দৈনিক ১৯ হাজার।

শিশুমৃত্যু হ্রাস পাওয়ার পেছনে কিছু দরিদ্র দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন একটি কারণ বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ।

তবে নিম্ন আয়ের দেশ যেমন, বাংলাদেশ, লাইবেরিয়া, রুয়ান্ডা, মধ্য আয়ের দেশ যেমন, ব্রাজিল, মঙ্গোলিয়া, তুরস্ক এবং উচ্চ আয়ের দেশ ওমান, পর্তুগাল এরা সকলেই ৫ বছরের কম বয়সী শিশুর মৃত্যুহার কমিয়ে আনছে ক্রমশ।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ১৯৯০ থেকে ২০১১-- বিশ বছরে নয়টি নিম্ন আয়ের দেশ, বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, ইথিওপিয়া, লাইবেরিয়া, মাদাগাস্কার, মালয়, নেপাল, নাইজার এবং রুয়ান্ডায় শিশু মৃত্যুহার ৬০ শতাংশের বেশি কমেছে।  

মৃত্যুহার হ্রাসের অন্যতম কারণ হিসেবে, শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ানোয় উৎসাহিত করা ও সাধারণ রোগগুলোর বিরুদ্ধে পরিকল্পিত প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রচেষ্টাও ভূমিকা রেখেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

ইউনিসেফের তথ্যমতে দেখা গেছে, যেসব দেশ প্রভূত পরিমাণে বিদেশি সহায়তা গ্রহণ করে শিশু মৃত্যুর হার ওই দেশেগুলোতেই সবচেয়ে বেশি হ্রাস পেয়েছে।

ইউনিসেফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যান্থনী লেক বলেন, বিশ্বজুড়ে এ সাফল্যের অনেকগুলো কারণ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, সরকারের উদ্যোগ, দাতাদের সহযোগিতা এবং পরিবারের অবদান।

তবে দ্বায়িত্ব শেষ হয়ে যায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখনো ৫ বছরের কম বয়সি অনেক শিশু মারা যাচ্ছে, অথচ এ মৃত্যুগুলো আমরা বন্ধ করতে পারি।

তিনি বলেন, এ জীবনগুলো রক্ষা করা যায় প্রয়োজনীয় ভ্যাক্সিন, পুষ্টি নিশ্চিতকরণ এবং মৌলিক চিকিৎসা ও মাতৃস্বাস্থ্য সেবা প্রদান করে। বিশ্বের কাছে প্রযুক্তি রয়েছে, চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সব শিশুর জন্যে এসব সুবিধা নিশ্চিত করা।  

গত বছর বিশ্বব্যাপী ৫ বছরের কম বয়সী অর্ধেক শিশুর মৃত্যু হয়েছে মাত্র পাঁচটি দেশে। এই দেশগুলো হলো- ভারত, নাইজেরিয়া, গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গো, পাকিস্তান ও চীন।

বিশ্বব্যাপী ৫ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর প্রধান কারণ পাঁচটি। এরমধ্যে নিউমোনিয়ায় ১৮ শতাংশ, অপরিণত-শিশুজন্মজনিত জটিলতায় মারা যায় ১৪ শতাংশ, ডায়রিয়ায় ১১ শতাংশ, প্রসব জটিলতায় ৯ শতাংশ ও ম্যালেরিয়ায় ৭ শতাংশ শিশু মারা যায়।

তবে এই পাঁচটি কারণ ছাড়াও মৃত শিশুদের একতৃতীয়াংশ অপুষ্টিজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেছে বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ।

৫ বছরের নিচে মারা যাওয়া শিশুদের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ জন্মের প্রথম ২৮ দিনের মধ্যেই মারা যায়।

বাংলাদেশ সময় ১৭০৫; ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১২
এমএন/সম্পাদনা: আহ্‌সান কবীর, আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।