ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

রোহিঙ্গাদের জন্য পরিবার পরিকল্পনা কৌশলপত্র

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৩
রোহিঙ্গাদের জন্য পরিবার পরিকল্পনা কৌশলপত্র

ঢাকা: মানবিক বিপর্যয়ে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য পরিবার পরিকল্পনা কৌশলপত্রের উদ্বোধন করা হয়েছে।

রোহিঙ্গা নারী ও মেয়েদের জন্য স্বেচ্ছাসেবামূলক পরিবার পরিকল্পনা সেবা বাড়াতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) ও সহযোগী পার্টনারদের এটি একটি যৌথ প্রচেষ্টা।

বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজারে একটি হোটেলে এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় বলে ইউএনএফপিএ’র ঢাকা অফিস থেকে এ তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা এবং পরিবার কল্যাণ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. আশরাফী আহমেদ।

এ কৌশলটি রোহিঙ্গা ও স্থানীয় কমিউনিটির নারী এবং মেয়েদের মধ্যে কমিউনিটি ভিত্তিক পরিবার পরিকল্পনার ব্যাপারে সম্পৃক্ততা ও সেবাকেন্দ্র ভিত্তিক পরিবার পরিকল্পনাসেবা দেওয়ার মাধ্যমে আধুনিক পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতিগুলোর চাহিদা বাড়ানোর ওপর একটি রূপরেখা তুলে ধরে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে, ইউএনএফপিএ’র কারিগরি সহায়তায় ও কক্সবাজার হেলথ সেক্টর এবং এসআর এইচ ওয়ার্কিং গ্রুপের অংশগ্রহণে এ কৌশলটি গত (অক্টোবর ২০২২) সালে অনুমোদিত হয়।

অনুষ্ঠান থেকে বলা হয়, ক্যাম্পে কর্মরত স্বাস্থ্য খাতের পার্টনাররা ক্যাম্পে অবস্থিত স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্রগুলো ও নারী বান্ধব সেবাকেন্দ্র গুলোতে যৌন এবং প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছেন। গত পাঁচ বছরে পরিবার পরিকল্পনা সেবার চাহিদা নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। কেবলমাত্র ২০১৮-২০২২ সালের মধ্যে স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্রগুলো পরিবার পরিকল্পনার পদ্ধতি গ্রহণে সেবা গ্রহীতার সংখ্যা ১৭৫ শতাংশ বেড়েছে।

সেবা গ্রহীতার সংখ্যা বাড়া শুধুমাত্র সেবা প্রাপ্যতার বিস্তার ও প্রশিক্ষিত সেবা দেওয়ার জন্য হয়েছে তা নয়, সেই সঙ্গে কমিউনিটির মানুষদের মধ্যে এ সেবা সম্পর্কে প্রচারণা, বিশেষ করে পুরুষদের মধ্যে এর প্রয়োজনীয়তার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো ও জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলো সম্পর্কে কুসংস্কার এবং ভুল ধারণা দূর করতে বিভিন্ন রকম সচেতনতা বাড়ানোর কার্যক্রমগুলোই এ কাঙ্ক্ষিত অবস্থায় আসতে ভূমিকা রেখেছে।

অতিরিক্ত সচিব ড. আশরাফী আহমেদ বলেন, সবার জন্য পরিবার পরিকল্পনার সেবাকে আরও সহজপ্রাপ্য, সুলভ, নিজ ইচ্ছা ভিত্তিক, এবং পছন্দসই করার জন্য ২০২২-২০২৫ এর এ বহু বার্ষিক কৌশল মানবিক কাজে কর্মরত (হিউম্যানিটারিয়ান) পার্টনারদের দিক নির্দেশনা দেবে। আমি ইউএনএফপিএ এবং অন্যান্য পার্টনারদের তাদের কঠোর পরিশ্রমের জন্য সাধুবাদ জানাই এবং এ কৌশলপত্রটি সেবাদানকারী এবং পরিকল্পনাকারীদের মানবিক প্রচেষ্টাকে আর উন্নত করার জন্য লাভজনক উৎস হিসেবে কাজ করবে বলে আমি আশা রাখি।

ইউএনএফপিএ বাংলাদেশের রিপ্রেজেন্টেটিভ মিস ক্রিস্টিন ব্লোখুস বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একটি ফলপ্রসূ পার্টনারশিপে একটি কৌশলপত্র প্রণয়নের কাজ করতে পেরে আমরা আনন্দিত। এ কৌশলপত্রটি কমিউনিটির চাহিদা, সেবাকেন্দ্রভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের পাশাপাশি, পার্টনারশিপ ও কার্যকারিতা, সক্ষমতা নিশ্চিত করতে অ্যাডভোকেসি এবং সমন্বয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করে। রোহিঙ্গা নারীদের মধ্যে পরিবার পরিকল্পনার বাড়তি চাহিদা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, স্বেচ্ছায় সেবা গ্রহণ, অধিকার ভিত্তিক ও মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখার কৌশলগুলো তাদের জীবন উন্নত করার কাজ করে যাচ্ছে।

বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিস গুইন লুইস বৃহৎ পরিসরে, নারীদের জন্য সমন্বিত যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, নারী ও কিশোরীদের তাদের মৌলিক সামাজিক পরিষেবা প্যাকেজের অংশ হিসেবে পরিবার পরিকল্পনা তথ্য দিতে হবে যাতে তারা তাদের পরিবারের স্বাস্থ্য এবং স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়। পরিবার পরিকল্পনা নারীদের ক্ষমতায়ন করে ও তাদের পরিবারকে দারিদ্র মুক্ত করতে সহায়তা করে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড. মো. বশিরুল আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ যুগ্ম সচিব (পরিকল্পনা শাখা) আব্দুস সালাম খান এবং জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থাগুলোর প্রধান এবং প্রতিনিধিরা, উন্নয়ন সহযোগী এবং বেসরকারি সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৩
আরকেআর/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।