ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ফ্রান্স

প্যারিস থেকে রহমান মাসুদ

ব্রাকেটবন্দি চুক্তির খসড়া

রহমান মাসুদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৫
ব্রাকেটবন্দি চুক্তির খসড়া ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

প্যারিস, ফ্রান্স: কপ-২১ এ হতে যাওয়া চুক্তির খসড়ায় এখনও পর্যন্ত কোনো আশার আলো দেখছে না বাংলাদেশের মতো জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকিতে থাকা দেশগুলো। খসড়ায় অনেকগুলো ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‘যদি/হয়/তবে’ থাকায় ও ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর দাবিকে ব্রাকেটবন্দি রাখায় চুক্তির কার্যকারিতা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।



সবাই অপেক্ষা করছে শেষ পর্যন্ত কি ঘটে সেই নাটকীয়তার জন্য। বাংলাদেশের দাবি অনুযায়ী উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা‌ চুক্তিতে যে থাকছে না, তা প্রায় নিশ্চিত।

বুধবার (৯ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় রাত ৮টার দিকে প্রকাশিত হয় কপ-২১ এর নতুন খসড়া। আগে প্রকাশিত খসড়াকে ছোট ও সংক্ষিপ্ত করে এটি প্রকাশিত হয়। তবে তা বাংলাদেশের মতো জলবায়ু পরির্তনের ফলে হুমকিতে থাকা দেশগুলোর সংশয় দূর করতে পারেনি। বাংলাদেশের অংশগ্রহণকারীদের কাছেও খসড়ার বিষয়বস্তু পরিষ্কার নয়।

অন্যদিকে বাংলাদেশভিত্তিক বিভিন্ন এনজিও বলছে, বাংলাদেশের পাওয়া না পাওয়ার বিষয়গুলো এখন নির্ভর করছে শক্তিশালী নেগোসিয়েশনের পরে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সম্ভবত সফল হবে না সরকারি প্রতিনিধি দলের দুর্বল নেতৃত্বের কারণে।

বাংলাদেশভিত্তিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) কোস্ট বাংলাদেশের সম্মেলন প্রতিনিধি ও নির্বাহী পরিচালক রেজাউল রেজাউল করিম চৌধুরী এ বিষয়ে বাংলানিউজকে বলেন, ফ্রান্স, জার্মানির মতো দেশগুলো একটি ফলপ্রসূ চুক্তির পক্ষে। কিন্তু আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া এতে বাধ সাধছে। আমরা ভারত ও চীনকে সঙ্গে নিয়ে আলোচনা করছি। অথচ  তাদের মিডিয়া ভারত ও চীনকে জড়িয়ে প্রপাগন্ডা চালাচ্ছে।

তিনি বলেন, এই বিশ্বরাজনীতি মোকাবেলা করার মতো শক্তিশালী আলোচকের ঘাটতি থাকায় পাওয়া না পাওয়ার হিসাবে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়তে পারে। কারণ এখনকার আলোচনাই এই হার নির্ধারণ করবে।

সম্মেলনে যোগ দেওয়া বাংলাদেশ দলের প্রবীণ সদস্য ও সমন্বয়ক ড. কাজী খলিকুজ্জমান প্রকাশিত খসড়া সম্পর্কে বাংলানিউজকে বলেন, যে খসড়া প্রকাশ হয়েছে তাতে বাংলাদেশের কথাগুলো আছে, অন্যদের কথাও আছে। তবে বিশেষণ নির্ভর এ খসড়া নিয়ে এখনো বলার মতো কিছু হয়নি। আজও সম্ভবত হবে না।

তিনি বলেন, আমাদের আরও একদিন অপেক্ষা করতে হবে। খসড়া নিয়ে জোর আলোচনা চলছে। সম্ভবত একটা চুক্তি হতে যাচ্ছে। তবে আমরা যে আইনি বাধ্যবাধকতার কথা বলেছিলাম তা হচ্ছে না। তারা লিগ্যাল এগ্রিমেন্টের কথা বলছে।

ড. খলিকুজ্জমান বলেন, খসড়ায় তিনটি বিকল্প রাখা হয়েছে। আমার মনে হয় সব কিছু মিলে নতুন কিছু হতে যাচ্ছে।

অন্যদিকে সম্মলনে যোগ দেওয়া পরিবেশ সচিব ড. কামাল উদ্দীন এ বিষয়ে বাংলানিউজকে বলেন, খসড়া চুক্তির বিষয়ে দু’টি কথা আছে। প্রথমে তারা বলেছে 'প্যারিস আউট কাম' আবার পরের লাইনেই আছে, এগ্রিমেন্ট। আমরা দাবি করেছিলাম লিগ্যাল এগ্রিমেন্ট। তবে যদি এটা কেবল এগ্রিমেন্টও হয়, তাতেও সমস্যা নেই। কারণ যে কোনো আন্তর্জাতিক এগ্রিমেন্টেরই একটি আইনি বাধ্যবাধকতা থাকে। এটা যদি শেষ পর্যন্ত কেবল প্যারিস আউট কাম হয়, তা হবে হতাশার।

তবে ড. খলিকুজ্জমান জানান, কেবল চুক্তি হলেই হবে না। ইইউএনএফসিসির এই চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে জাতিসংঘকে। কোনো একটি সদস্য দেশও যদি এর বিরোধিতা করে তবে তা কার্যকর হবে না।

তিনি আরও বলেন, আমি হতাশ নই। আলোচনার একটি পরিণতি হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। এজন্য সম্মেলনের সময় বাড়তে পারে। এটা শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) বা শনিবার (১১ ডিসেম্বর)  পর্যন্ত গড়াতে পারে। আগেও এমন হয়েছে। শেষ সময়ে এসে সবাই একটি পরিণতিতে পৌঁছাতে চায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৫
আরএম/এএ

** টার্কিশ এয়ারের লাগেজ বিড়ম্বনায় প্যারিসে
** কপ-২১ সম্মেলনের সফলতা নিয়ে ধোঁয়াশা
** বাংলানিউজের মাসুদ এখন প্যারিসে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।