ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ফিচার

‘পুলিশে দৌড়াইয়া বাড়িতে ফাডায়’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০২০
‘পুলিশে দৌড়াইয়া বাড়িতে ফাডায়’

হবিগঞ্জ: ‘ভাই, ইলেকশনের দিনে বিনা ভাড়ায় নৌকা মার্কার ভোটারদের লইয়্যা কেন্দ্রে গেছি, আশা করছিলাম শহরে রিকশা ছালাইবার অনুমতি ফাইমু। কিন্তু গদ্দিতে বসার পর মেয়র সাব আমরারে রিকশা ছালাইবার অনুমতি দিব দূরের কথা, পুলিশে ফাইলে আরও দৌড়াইয়া বাড়িতে ফাডায়। অহন আমরা ৫ শতাধিক রিকশাওয়ালা পুলা-মাইয়ারে লইয়্যা বড়ই বিপাকের মাঝে পড়ছি’।
 

আক্ষেপ করে বাংলানিউজকে কথাগুলো বলছিলেন হবিগঞ্জ শহরে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালক হতদরিদ্র ছালেক মিয়া। তিনি বলেন, হবিগঞ্জ জেলা শহরে সহস্রাধিক চালক ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার আয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন।

কিন্তু সম্প্রতি প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এরপর অটোরিকশা নিয়ে শহরে বের হলেই পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যায়। যে কারণে হঠাৎ রিকশা চালকদের আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা।

সালেক মিয়াসহ আরও কয়েকজন রিকশা চালক অভিযোগ করে বলেন, গেল হবিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মিজানুর রহমান বিজয়ী হলে তাদের নম্বর প্লেট দিবেন বলে আশ্বস্ত করেন। এরপর রিকশা চালকরা তার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন। কিন্তু বিজয়ী হওয়ার পর বার বার মেয়েরের নিকট ধর্ণা দিলেও শহরে অটোরিকশা চালানোর সুযোগ পাচ্ছি না।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হবিগঞ্জ জেলা শহরের খোয়াই মুখ থেকে ২ নম্বর পুল এলাকা পর্যন্ত ছোট বড় অর্ধশত রাস্তায় চলাচল করতো সহশ্রাধিক ব্যাটারি চালিত অটোরিকাশা। সম্প্রতি প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে তা মানেনি চালকরা। এক পর্যায়ে বেশকিছু রিকশা হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় আটক করে রাখা হয়। পরবর্তীতে এগুলো ছেড়ে দিলে তাদের শহরে রিকশা চালানোর সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না।
 
সম্প্রতি শহরের রিকশা চালকরা এ ব্যাপারে পৌরসভার মেয়রসহ বিভিন্ন জনপ্রতিনিধির কাছে বার বার গেলেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না। অবশেষে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি জেলা শহরের আরডি হল প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ সমাবেশ করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হবিগঞ্জ পৌরসভার এক সচেতন নাগরিক বলেন, এদের যদি নিজের পেশা করতে না দেওয়া হয় তাহলে তারা পেটের দায়ে অসৎ পথে অবলম্বন করে উপার্জন করবে। এতে করে সমাজে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। তাই মানবিক দিক বিবেচনা করে অতি দ্রুত এর সমাধান হওয়া উচিত।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।