ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

ফিচার

সমুদ্রপাড়ের আরেক বিস্ময় রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ড!

তামিম মজিদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২০
সমুদ্রপাড়ের আরেক বিস্ময় রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ড!

কক্সবাজার থেকে ফিরে: সমুদ্র নিয়ে কোনো সময়েই মানুষের আগ্রহের কমতি ছিল না। আর যদি সাগরতলের আশ্চর্য জগৎ হয়, তাহলেতো আগ্রহের মাত্রার শেষ নেই। সেই মাত্রায় সরাসরি সাগরতলের প্রাণীর দেখা পেলে বিস্ময়ে চোখ যেন কপালে উঠে যায়! কক্সবাজারের রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ডে বঙ্গোপসাগরের মাছ, জীবন্ত জীবজন্তু দেখে বিস্ময়ে চোখ যেন কপালে ওঠার দশা।

 

সম্প্রতি কক্সবাজার শহরের ঝাউতলায় অবস্থিত রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ড ঘুরে দেখা গেলো, বঙ্গোপসাগরের তলদেশের প্রায় ৩শ প্রজাতির মাছ ও জীবজন্তু অ্যাকুরিয়ামে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। সাগরতলের নাম না জানা হরেক প্রজাতির মাছ ও জীবজন্তু দেখতে ফিশ ওয়ার্ল্ডে প্রতিনিয়ত ভিড় করছেন দর্শনার্থী ও পর্যটকরা।

কক্সবাজারের রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ড যেন সাগরতলের এক আশ্চর্য জগৎ। বঙ্গোপসাগরের দূর্লভ মাছ-প্রাণী নিয়ে সাজানো হয়েছে এই ফিশ ওয়ার্ল্ড। সত্যিই এই ফিশ ওয়ার্ল্ড যেন কক্সবাজারের বিস্ময়!

ফিশ ওয়ার্ল্ডের নিচতলায় প্রবেশ করতেই চোখে পড়বে বিশাল এক সামুদ্রিক কচ্ছপের ঘুরে বেড়ানোর দৃশ্য। একটু এগোলেই বড় বড় ক্যাট ফিশ। আরেকটু সামনে বড় সামুদ্রিক কোরাল মাছের খুনসুঁটি। সামুদ্রিক ইল খাবি খাচ্ছে পানির নিচে। চিংড়ির খেলাও দেখা যাবে। আছে লাল কাঁকড়া। বিচিত্র ভঙ্গিতে খেলা দেখাচ্ছে জেলি ফিশ!

রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ডের চারতলা ভবনের তিনতলাজুড়েই নান্দনিক শিল্পকর্ম সমৃদ্ধ ছোট-বড় শতাধিক অ্যাকুরিয়াম। বৈদ্যুতিক আলোয় ঝলমলে অ্যাকুরিয়ামের স্বচ্ছ পানিতে সাঁতার কাটছে হাঙর, কোরাল, পাঙাশ, মাইট্যা, কামিলা, রুপচাঁদা, ইলিশ, জেলি ফিশ, লবস্টারসহ নানা প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ। সুড়ঙ্গের ভেতরে হাঁটতে হাঁটতে গেলে সেগুলোও যেনো পা মেলায়। অ্যাকুরিয়ামগুলোয় রাখা হয়েছে কৃত্রিম প্রবাল। সেই প্রবালের ফাঁকে ফাঁকেই নানা রং-বেরংয়ের মাছ সাঁতরে বেড়াচ্ছে।

বঙ্গোপসাগরের তলদেশের প্রায় ৩শ প্রজাতির মাছ ও জীবজন্তু অ্যাকুরিয়ামে সাজিয়ে রাখা হয়েছে।  ছবি: বাংলানিউজ

সংশ্লিষ্টরা জানান, রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ড অ্যাকুরিয়ামে বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ সংরক্ষণ করা হয়েছে। তার মধ্যে ১৪০ প্রজাতির মাছ সামুদ্রিক। এছাড়া নোনা ও মিঠা পানির মিশ্রণে বেড়ে ওঠা মাছ আছে ২০ ধরনের। আর মিঠা পানির আছে ৩০ প্রজাতির। প্রতিনিয়ত নতুন মাছ সংযোজন করা হচ্ছে। কক্সবাজার শহরের ঝাউতলায় প্রায় ৮০ শতাংশ জমির ওপর তৈরি করা এধরনের ফিশ অ্যাকুয়ারিয়াম বাংলাদেশে প্রথম।

রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, এসব মাছ ও প্রাণী কোনোটাই দেশের বাইরের নয়। দেশের সমুদ্রকে সবার সামনে তুলে ধরতে এর সবই বঙ্গোপসাগর থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এখানে প্রবেশমূল্য জনপ্রতি ৩০০ টাকা। এছাড়া লম্বায় তিন ফুট দৈর্ঘ্যের কম শিশুরা বিনামূল্যে প্রবেশ করতে পারে।

ফিশ ওয়ার্ল্ডে আসা দর্শনার্থী মনিরা আফরিন বাংলানিউজকে বলেন, সাধারণত সমুদ্র সৈকতে গেলে মানুষ সাগরের বিশাল জলরাশি দেখতে পায়, কিন্তু সমুদ্রের সেই বিচিত্র মাছ, প্রাণী দেখতে পায় না। তাই এধরনের অ্যাকুরিয়াম করায় মানুষ সাগরতলের রহস্যময় প্রাণী সম্পর্কে জানতে পারছে। এখানে এসে নতুন অনেক মাছ সম্পর্কে জানতে পারলাম।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২০
টিএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।