ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ফিচার

ইফতারে সম্পৃক্ত খেজুর, আছে পুষ্টিগুণও

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০২ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৯
ইফতারে সম্পৃক্ত খেজুর, আছে পুষ্টিগুণও খেজুর, ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: রমজানে মুসলমানদের ইফতারে অপরিহার্য একটি খাবার হলো খেজুর। বলা হয়, এ সময়েই দেশে সবচেয়ে বেশি খেজুর আমদানি ও বিক্রি হয়। খেজুরে রয়েছে ভেষজ ও অনেক পুষ্টি উপাদান; যা সারাদিন রোজা রাখার পর খানিকটা পুষ্টির ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাজধানীর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম মার্কেট থেকে ইফতারের জন্য খেজুর কিনলেন হুমায়ূন কবীর। কথা হলে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, রোজাদারের সবচেয়ে আনন্দের মুহূর্ত ইফতারের সময়।

হজরত মুহাম্মদ (সা.) খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করতেন, নতুবা কয়েক ঢোক পানি পান করতেন। এজন্যই ইফতারে খেজুর আমাদের দেশে বেশি সমাদৃত।

বাংলাদেশে খেজুর উৎপাদিত হয় না বললেই চলে। মূলত বিদেশ থেকেই আমদানি হয়। তাহলে বাংলাদেশের মানুষের কাছে খেজুরের মতো একটি ফল এতো জনপ্রিয় হলো কীভাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক সংস্কৃতি ও ইতিহাসের সহযোগী অধ্যাপক একেএম খাদেমুল হক বাংলানিউজকে বলেন, এটা তো রমজানের সঙ্গে সম্পৃক্ত। হজরত মোহাম্মদ (সা.) রোজা ভাঙার সময় অর্থাৎ ইফতারে খেজুর খেতেন। সে কারণে মনে করা হয়, এটা ভালো অনুষঙ্গ। সেজন্যই বাংলাদেশের মানুষ মনে করেন ইফতারে খেজুর খাওয়া সুন্নত।

তিনি বলেন, অন্য সময় তো কেউ এতো চিন্তা করে না। আর এটি বাংলাদেশের মানুষের খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গেও জড়িত নয়, সেজন্য অন্য সময় ততোটা জনপ্রিয় নয় এটা। তবে এর বৈজ্ঞানিক দিকও আছে। খেজুর প্রচুর ক্যালরি বা শক্তিদায়ক একটি ফল।

প্রচুর শর্করা থাকার কারণে খাওয়ার আধ ঘণ্টার মধ্যে খেজুর শরীরে বাড়তি শক্তি জোগাতে সক্ষম। এছাড়া এটি দ্রুত মস্তিষ্কের খিদে কেন্দ্রকে উজ্জীবিত করে খিদে মেটায় এবং আরও বেশি খাওয়ার ইচ্ছা থেকে বিরত রাখে। আরও একটি কারণ হলো, এর মধ্যে আঁশের পরিমাণও অনেক এবং এটি কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে। কয়েক ঘণ্টা খেজুর পানিতে ভিজিয়ে রাখার পর এটি পানি শোষণ করে ফুলে উঠে। এমন খেজুর খেলে আরও বেশি উপকার মেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ক্ষেত্রে।

মরুভূমির শুকনো আবহাওয়ায় মিষ্টি খেজুর উপকারি। রোজার পর অবসাদগ্রস্ত দেহে দ্রুত চাঙাভাব এনে দেয় খেজুর।

আর তাই ইফতারে খেজুর একটি অন্যতম প্রধান খাবার। কোন দেশ থেকে খেজুরগুলো আসছে এবং এর আকৃতি কেমন, তার ওপর নির্ভর করে খেজুরের দাম। রয়েছে বিভিন্ন নাম এবং প্রকারভেদও। ফলের দোকানে খেজুরের সমাহার, ছবি: বাংলানিউজবাজার ঘুরে দেখা গেছে, ইরানের মরিয়ম খেজুরগুলো বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা দরে। সৌদি মরিয়ম ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা কেজি। রয়েছে বড় কালো রঙের আনজেরিয়া খেজুর, প্রতিকেজি ১১০০ থেকে ১৪০০ টাকা। সৌদি আনবার প্রতি কেজি ২৪০০ টাকা। বারারি প্রতি প্যাকেট ২৫০, এপ্রিকেটস ৩০০ এবং টার্কিস ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা প্রতি প্যাকেট। এছাড়াও রয়েছে সাধারণ খোলা খেজুর এবং প্যাকেটজাত শুকনা খেজুর। যার বাজার মূল্য প্রকারভেদে প্রতি কেজি ২৫০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত।

পুরানা পল্টন এলাকার খেজুর ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, রমজানের এই সময়টাতে খেজুরের চাহিদা অন্য সময়ের থেকে একটু বেশিই থাকে। বেচাকেনাও বেশ ভালো। কেননা, ইফতারিতে অন্যকিছু থাক বা না থাক, সকলেরই একটু খেজুর চাই।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৫ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৯
এইচএমএস/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।