ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ফিচার

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ বছর

এম. আবদুল্লাহ আল মামুন খান | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১০
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ বছর

দেশের খাদ্যনিরাপত্তা বিনির্মাণের অগ্রদূত, প্রকৃতিকন্যা খ্যাত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ১৮ আগস্ট পা দিল ৫০ বছরে। ১৯৬১ সালের ১৮ আগস্ট পথচলা শুরু করেছিল এ বিশ্ববিদ্যালয়।

কৃষিবিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির ধারার সাথে তাল মিলিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগোপযোগী কৃষি শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম চলছে।

আধুনিক কৃষিশিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে দেশের প্রথম এ টেকনিক্যাল সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শুরু থেকেই মানসম্মত তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক জ্ঞানসম্পন্ন দ কৃষিবিদ, কৃষিবিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদ তৈরি করছে। এটি মূলত একটি আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং কৃষি ও সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানের শাখায় শিক্ষাদান, পরীক্ষা পরিচালনা ও অধিভুক্তি প্রদানের জন্য মতাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান।

ময়মনসিংহ শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দেক্ষিণ পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পশ্চিম প্রান্তে সবুজঘেরা পরিবেশে ১২০০ একর এলাকা নিয়ে গড়ে উঠেছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যা¤পাস। ছিমছাম পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে এ ক্যাম্পাস ভ্রমণপিয়াসী ও পর্যটকদের দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে।

ছয়টি অনুষদের আওতায় ৪৪টি শিক্ষা বিভাগের তত্ত্বাবধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেটেরিনারি অনুষদ ৮টি, কৃষি অনুষদ ১৭টি, পশুপালন অনুষদ ৫টি, কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদ ৫টি, কৃষি প্রকৌশল ও কারিগরি অনুষদ ৫টি, মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ ৪টি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ হিসেবে জামালপুরের মেলান্দহে অবস্থিত বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ফিশারিজ কলেজে মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে।

শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অন্যান্য
বর্তমানে স্নাতক পর্যায়ে ৩৯০২ জন, স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ১২৬৩ জন এবং পিএইচডি পর্যায়ে ২৪২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।

বর্তমানে শিকসংখ্যা ৫৪৩,  কর্মকর্তা ৪১৬ জন, তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী  ৫৩৯ এবং চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী ১২৯৮ জন (২০০৭ অনুযায়ী)।

এ পর্যন্ত এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২২ হাজার ৫৯ জন স্নাতক,  ১১ হাজার ৩৬৬ জন স্নাতকোত্তর এবং ২৬৭ জন পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেছেন। এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উত্তীর্ণ বিদেশি শিার্থীর সংখ্যা ১০১ জন। এর মধ্যে ৯৪ জন স্নাতক, ৪ জন স্নাতকোত্তর ও ৩ জন পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তাছাড়া বিশেষ সমাবর্তনের মাধ্যমে নোবেল লরিয়েট কৃষিবিজ্ঞানী ড. নরম্যান ই. বোরলগকে সম্মানসূচক ডিএসসি (অনারিস কজা) ডিগ্রি প্রদান করা হয়।

গবেষণা ক্ষেত্রে যত সাফল্য

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উত্তীর্ণ কৃষিবিদরা দেশে খাদ্য জোগানের জন্য প্রধান ভূমিকা পালন করছেন। আন্তর্জাতিকভাবেও কৃষি গবেষণায় তাঁদের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শস্যের জাত, উৎপাদন কলাকৌশল ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন, যা দেশের কৃষি প্রবৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলেছে।

সাফল্যের নেপথ্যে

বাকৃবির গৌরবময় সাফল্যের নেপথ্যে কারণ হচ্ছে : দেশের প্রথম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষিবিজ্ঞানীদের সর্ববৃহৎ মিলনমেলা, সেশন জটমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, একমাত্র কৃষি জাদুঘর, দেশের একমাত্র প্লান্ট ডিজিজ কিনিক, প্রথম উদ্ভিদের ডিএনএ ফিঙ্গার প্রিন্ট নির্ণয়, নয়াপ্রযুক্তি উদ্ভাবনে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষে, সর্বাধিক শিার্থীর কৃষি বিষয়ে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি কোর্স সম্পন্ন, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক প্রাপ্তিতে শিার্থী ও অনুষদ অনুপাতে প্রতিবারই শীর্ষে, বৃহত্তর কৃষিভিত্তিক গ্রন্থাগার, ফল গাছের দেশের বৃহত্তর সংগ্রশালা, জার্মপ্লাজম সেন্টার ও পশুচিকিৎসার অত্যাধুনিক কিনিক।

উপাচার্যের কথা  
বাকৃবির ভিসি প্রফেসর ড. এম এ সাত্তার ম-ল বলেন, ৫০ বছরের গৌরবের ইতিহাস আরো উজ্জ্বল হোক। এ বিশ্ববিদ্যালয় দেশজ কৃষ্টির ধারক ও বাহক। দেশের দারিদ্র্য বিমোচন, ক্ষুধা নিবারণ, অপুষ্টি ও বেকারত্ব মোচন, আর্থ-সামজিক কর্মপ্রয়াস এবং কৃষিনির্ভর গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আজ দেশে উচ্চতর কৃষি শিা ও গবেষণার উৎকর্ষ কেন্দ্রে এ পরিণত হয়েছে। এর পেছনে অনেক মেধা, ত্যাগ, শ্রম এবং স্বপ্ন জড়িয়ে আছে।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১৯১০, আগস্ট ১৮, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।