ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

যে কারণে পাতিহাঁসের ‘চাঞ্চল্যকর কালো ডিম’ 

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২২
যে কারণে পাতিহাঁসের ‘চাঞ্চল্যকর কালো ডিম’  হাঁসের কালো ডিম।

মৌলভীবাজার: অনেক ক্ষেত্রেই সময় জন্ম দেয় বিরল ও ব্যতিক্রমী ঘটনাপ্রবাহের। রহস্যঘেরা এমন ঘটনা ইতোপূর্বে দেখা যায়নি বলে ঘটনাস্থলে উৎসুক মানুষের ভিড় ও সীমাহীন আগ্রহ।

 

সম্প্রতি কালো ডিম এরই একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। শুধু ঘটনাস্থল ভোলাই কেন, প্রায় সারাদেশেই প্রভাব পড়েছে চাঞ্চল্যকর কালো ডিমের রহস্যকে খুঁজে বের করতে। আগ্রহীদের সীমাহীন এ কৌতূহলের যেন শেষ নেই।   

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশের দক্ষিণাঞ্চল ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার জিন্নাগড় ইউনিয়ন। এখানের দাসকান্দি নামক এলাকায় গৃহবধূ তাসলিমা বেগম শখ করে প্রায় ডজনখানেক পাতিহাঁস পালনে আগ্রহী হন। বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) এই পাতিহাঁসগুলোর মাঝে বড় হাঁসটি হঠাৎ করে একটি কালো ডিম পাড়ে। অনুরূপভাবে পরের দিন বৃহস্পতিবারও ওই পাতিহাঁসটি একই ঘটনার জন্ম দেয়। এই বিস্ময়কর ও বিরল ঘটনাটি মুহূর্তে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং দেশবরেণ্য বন্যপ্রাণী গবেষক ড. মনিরুল এইচ খান বাংলানিউজকে বলেন, রক্ত থেকে রঞ্জন পদার্থ ডিমের খোলসে আসে বলে সাধারণত হাঁসের ডিমে লাল বা খয়েরি রং হয়ে থাকে। এমনিতে নীল রং যেটা হয় সেটা খোলস থেকে আসে। কিছু কিছু হাঁসের ডিম এমনিতেই একটু নীলচে রং হয়ে থাকে। এর কারণ পিত্ত থেকে ওই রংটা খোলসের মধ্যে যায়।

কালো ডিমের কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ওই ভোলার হাঁসের ডিমটা কালো হওয়ার কারণ তার পিত্ত থেকে নীলচে রংটা অনেক গাঢ় হয়ে ডিমের প্রতিফলিত হয়েছে। হাঁসের পিত্ত থেকে যে রঞ্জন পদার্থটা খোলসে সামান্যমাত্রায় জমা হয়ে কিছু কিছু হাঁসের ডিম এমনিতেই ছাই বর্ণ ধারণ করে ওই প্রক্রিয়াটি অস্বাভাবিক কোনো কারণে রঞ্জন পদার্থ বেড়ে যাওয়াতে এই অবস্থা হয়েছে।  

অস্বাভাবিকতা এবং স্বাদ এর ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, ডিমে যতটুকু রঞ্জনপদার্থটা জমা হওয়ার কথা ছিল তার থেকে অনেক বেশি পরিমাণে জমা হয়েছে বলেই ওই হাঁসের ডিমটা কালো দেখাচ্ছে। এটা অস্বাভাবিকতা। ডিমের স্বাদটাও অন্য স্বাভাবিক ডিমের মতো ঠিকই থাকবে এবং ওই ডিম খেলেও কোনো ক্ষতি হবে না। ডিমের ভেতরটা স্বাভাবিকই রয়েছে তবে খোলসের রংটা বেশি হয়ে গেছে। আগে তো এমন শোনা যায়নি।  

আর এমনও হতে পারে যে হাঁসটা এবারই প্রথমবার ডিম পাড়লো। নতুন অবস্থায় এমন সমস্যা হতেই পারে। কয়েকটা ডিম পাড়ার পর স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তার ডিম পাড়ার প্রক্রিয়াটাই তো চালু হলো মাত্র। এ ধরনের হতে পারে বা হলে দেখা যাবে কিছুদিন পর ৮/১০টা ডিম পাড়ার পর হয়তো সব ঠিক হয়ে গেছে বলে জানান জাবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২২ 
বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।