ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

বাঘ রক্ষায় বাংলাদেশের পদক্ষেপ জানালেন মন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২২
বাঘ রক্ষায় বাংলাদেশের পদক্ষেপ জানালেন মন্ত্রী ...

ঢাকা: বাঘ রক্ষায় বিশ্বের ১৩টি বাঘ সমৃদ্ধ দেশকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে জানিয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার বন্য বাঘ সংরক্ষণের দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে কাজ করছে। মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন যে, যৌথ কুয়ালালামপুর বিবৃতি বাস্তবায়ন বাঘের জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও স্থিতিশীল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত বাঘ সংরক্ষণ বিষয়ক চতুর্থ এশিয়া মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে তার সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে এ কথা বলেন। মালয়েশিয়ার পানি, ভূমি ও প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রী দাতুক সেরি তাকিউদ্দীন বিন হাসান সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন এবং ভুটান, কম্বোডিয়া, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, লাও পিডিআর, মিয়ানমার, মালয়েশিয়া, নেপাল ও রাশিয়ার মন্ত্রী; সংসদ সদস্যরা এবং বাঘ সমৃদ্ধ দেশগুলোর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার অন্যান্য বন্যপ্রাণীসহ আমাদের জাতীয় প্রাণী সংরক্ষণে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। জীববৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও উন্নতির জন্য সংবিধানে একটি নতুন ধারা সংযোজন করা হয়েছে। এছাড়া, বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২-এ বাঘ শিকারের জন্য ২-৭ বছরের কারাদণ্ড এবং ১ মিলিয়ন টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার জাতীয় বাঘ পুনরুদ্ধার কর্মসূচি (২০১৭-২০২২) এবং দ্বিতীয় প্রজন্মের বাংলাদেশ টাইগার অ্যাকশন প্ল্যান (২০১৮-২০২৭) বাস্তবায়ন করছে, যার মধ্যে রয়েছে বাঘ জরিপ; জেনেটিক অধ্যয়ন; সুন্দরবনের অভ্যন্তরে ড্রোন দ্বারা স্মার্ট টহল ও পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি। এছাড়া, সুন্দরবন ও বেঙ্গল টাইগারের সুরক্ষা ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে বন বিভাগের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের পাশাপাশি স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধির কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, বাঘ মানব সংঘাত প্রশমিত করতে বাংলাদেশ সরকার ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম (ভিটিআরটি), কো-ম্যানেজমেন্ট কমিটি (সিএমসি) এবং কমিউনিটি পেট্রোল গ্রুপ (সিপিজি) গঠন করে স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে বাঘ সংরক্ষণ কার্যক্রমে নিয়োজিত করেছে। বন্যপ্রাণী শিকার ক্ষতিপূরণ বিধিমালা, ২০২১-এ বাঘের হাতে নিহত ব্যক্তির জন্য তিন লাখ টাকা পর্যন্ত দেওয়ার বিধান রয়েছে।

শাহাব উদ্দিন বলেন, অবৈধ বন্যপ্রাণী বাণিজ্য রোধে বন বিভাগের অধীনে ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ইউনিট গঠন করা হয়েছে। বন্যপ্রাণী শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণের সক্ষমতা বাড়াতে শেখ কামাল বন্যপ্রাণী কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ভারতের সঙ্গে আমরা আমাদের সহযোগিতা জোরদার করেছি এবং ২০১১ সালে সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার সংরক্ষণের জন্য একটি প্রটোকল স্বাক্ষর করেছি।

বাঘ সংরক্ষণের বিষয়ে ১৯-২১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত চতুর্থ এশিয়া মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন বন্য বাঘের সংখ্যা এবং এর শিকার স্থিতিশীল করার পাশাপাশি বাঘ সমৃদ্ধ দেশগুলির মধ্যে নতুন সমস্যা মোকাবিলা করে সংরক্ষণ প্রচেষ্টা জোরদার করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বাঘ সমৃদ্ধ দেশগুলির প্রতিনিধিরা, সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং বাঘের আবাসস্থলের অবক্ষয় রোধ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।  

সম্মেলনটি বন্য বাঘ, শিকার এবং আবাসস্থলের নিয়মিত রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন করার এবং বাঘ ও এর শিকার এবং আবাসস্থল রক্ষার জন্য ক্রমাগত এবং পদ্ধতিগত টহল দেওয়ার জন্য উপযুক্ত এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রয়োগ ক্ষমতা জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্যবস্থাপনার কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে উন্নত প্রযুক্তির বহুল ব্যবহারসহ সমস্ত স্টেকহোল্ডারদের জন্য সক্ষমতা উন্নয়ন জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং সমস্ত স্তরে পারস্পরিক জ্ঞান বিনিময়ের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা এবং বাঘ সংরক্ষণের জন্য আন্তঃসীমান্ত এবং দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করার বিষয়ে ঐক্যমত্য হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০০৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২২
এমআইএইচ/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।