ঢাকা, সোমবার, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

বাগেরহাটে মৎস্য ঘেরে মিলেছে বিলুপ্তপ্রায় রাজ কাঁকড়া

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ৪, ২০২১
বাগেরহাটে মৎস্য ঘেরে মিলেছে বিলুপ্তপ্রায় রাজ কাঁকড়া

বাগেরহাট: বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার একটি মৎস্য ঘেরে বিলুপ্তপ্রায় রাজ কাঁকড়া পাওয়া গেছে।  

রামপাল উপজেলার কালিগঞ্জ গ্রামের আমানুল্লাহ নামের এক ব্যক্তির মৎস্য ঘেরে এ কাঁকড়াটি পাওয়া যায়।

কাঁকড়াটি জোয়ারের পানিতে সাগর থেকে ভেসে এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সংকটাপন্ন প্রজাতির এ কাঁকড়াটিকে ফরমালিন দিয়ে বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ে সংরক্ষণ করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এ এস এম রাসেল।

অশ্বক্ষুরের মতো দেখতে উপবৃত্তাকার এ কাঁকড়াটির ইংরেজি নাম Mangrove Horseshoe crab। এর বৈজ্ঞানিক নাম Carcinoscorpius rotundicauda। আমাদের দেশে এটি রাজ কাঁকড়া হিসেবে বেশি পরিচিত। এটিকে কাঁকড়া বলা হলেও প্রজাতিগত দিক থেকে মাকড়সার সঙ্গে বেশি মিল রয়েছে এটির। এরা লিমুলিডি গোত্রের অন্তর্গত সামুদ্রিক সন্ধিপদী প্রাণী। এরা প্রধানত অগভীর সমুদ্র ও নরম বালু বা কাদা সমৃদ্ধ সমুদ্রতলে বাস করে। কালেভদ্রে যৌনসঙ্গমের জন্য এদের ডাঙায় আসতে দেখা যায়। জন্মের সময় সাত থেকে আট সেন্টিমিটার এ প্রাণিটি প্রায় আট বছর কাদা মাটি বা নরম বালুর নিচে থাকে। ১৫ সেন্টিমিটার লম্বা হলে তারা অগভীর সমুদ্রে চলে যায়। পরিপক্ক অবস্থায় এটি ৪০ থেকে ৪০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এর মাথায় একটি সুঁড়ের মত রয়েছে। এর খোলস বেশ শক্ত। এটি সার তৈরির কাজেও ব্যবহৃত হতো এক সময়। এ কাঁকড়ার নীল রক্ত অতন্ত মূল্যবান। এ রক্তের অসাধারণ ক্ষমতা বলে লিমিউলাস বা অশ্বক্ষুরাকৃতি কাঁকড়ারা যে কোনও ধরনের ব্যাকটেরিয়া এবং বিষাক্ত পদার্থ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারে। তাই চিকিৎসাবিজ্ঞানে এদের গুরুত্ব অপরিসীম।

বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এ এস এম রাসেল বলেন, রাজ কাঁকড়া সাধারণত আমাদের এলাকায় পাওয়া যায় না। কালেভদ্রে যৌনসঙ্গমের জন্য সমুদ্র থেকে এদের ডাঙায় আসতে দেখা যায়। কিন্তু ৩১ জুলাই রামপাল উপজেলার কালিগঞ্জ গ্রামের আমানুল্লাহ নামের এক ব্যক্তির মৎস্য ঘেরে এ কাঁকড়াটি পাওয়া যায়। খবর পেয়ে আমরা কাঁকড়াটি সংগ্রহ করি। এটি এখন মৃত প্রায় অবস্থায় রয়েছে। এটি মারা গেলে আমরা ফরমালিন দিয়ে সংরক্ষণ করে রাখব। ধারণা করছি, কাঁকড়াটি সমুদ্র থেকে জোয়ারের পানিতে ভেসে এসেছে।  

তিনি আরো বলেন, এ কাঁকড়াকে জীবন্ত জীবাশ্মও বলা হয়, কারণ ৪৪ কোটি ৫০ লাখ বছর আগেও পৃথিবীতে এদের অস্তিত্ব ছিল। ডাইনোসরের চেয়েও প্রায় ২০ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে এসেছিল এ লিমুলাস। তাই এ জলজ প্রাণীটি বিজ্ঞানীদের কাছে আজও বিস্ময়ের।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৫ ঘণ্টা,  আগস্ট ০৪, ২০২১
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।