ঢাকা, রবিবার, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

মোংলায় উদ্ধার কচ্ছপ খানজাহান আলীর দিঘিতে অবমুক্ত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১২ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২১
মোংলায় উদ্ধার কচ্ছপ খানজাহান আলীর দিঘিতে অবমুক্ত কচ্ছপ অবমুক্ত। ছবি: বাংলানিউজ

বাগেরহাট: বাগেরহাটের মোংলা থেকে উদ্ধার করা ৭৩টি সন্ধি কচ্ছপ খানজাহান আলীর (রহ) মাজার সংলগ্ন দিঘিতে অবমুক্ত করা হয়েছে।  

মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) দুপুরে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তারা কচ্ছপগুলো অবমুক্ত করেন।

 

এসময় বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক খোন্দকার মোহাম্মদ রিজাউল করিম, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, খুলনার মৎস্য বিশেষজ্ঞ মো. মফিজুর রহমান চৌধুরী, বন্যপ্রাণী পরিদর্শক রাজু আহমেদসহ বন বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সোমবার (২৬ জুলাই) রাতে মোংলা উপজেলার দিগরাজ বাজার সংলগ্ন আপাবাড়ি নামক স্থানে কোস্টগার্ড ও বনবিভাগ যৌথ অভিযান চালিয়ে ৭৩টি সন্ধি কচ্ছপসহ মনোজ রায় নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে। পরবর্তীতে মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদার ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে মনোজ রায়কে দুই হাজার টাকা জরিমানা এবং কচ্ছপগুলোকে আলী (রহ) এর মাজার সংলগ্ন দিঘিতে অবমুক্ত করার আদেশ দেন। গোপালগঞ্জ জেলার কোটালিপাড়া এলাকার মঙ্গল চন্দ্র রায়ের ছেলে মনোজ রায় বরিশালসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগ্রহ করা কচ্ছপগুলো বিক্রির জন্য মোংলায় নিয়ে এসেছিলেন। চারশ থেকে পাঁচশ টাকা কেজিদরে ক্রয় করা কচ্ছপগুলো এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা কেজিদরে মোংলায় বিক্রি হত বলে জানিয়েছেন বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, খুলনার মৎস্য বিশেষজ্ঞ মো. মফিজুর রহমান চৌধুরী।

তিনি বলেন, সন্ধি প্রজাতির এই কচ্ছপগুলো মিঠাপানির। বরিশাল, গৌড় নদী, চিতলমারী, মোল্লাহাটসহ মিষ্টি পানি অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকায় এই কচ্ছপ পাওয়া যায়। দিন দিন এই কচ্ছপের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এজন্য বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে এই কচ্ছপ আহরণ, সংরক্ষণ ও বিক্রয় নিষিদ্ধ। মোংলা থেকে উদ্ধার করা এই কচ্ছপগুলো ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারকের নির্দেশনা অনুযায়ী বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মহোদয়ের উপস্থিতিতে খানজাহান আলী (রহ.) এর মাজার সংলগ্ন দিঘিতে অবমুক্ত করেছি। কচ্ছপগুলো এখানে বাঁচতে পারবে এবং বংশ বিস্তার করবে বলে আশা প্রকাশ করেন মো. মফিজুর রহমান চৌধুরী।

খানজাহান আলী (রহ.) এর মাজারের প্রধান খাদেম ফকির শের আলী বলেন, মাজারের এই দিঘিতে কুমির, মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির জলজ প্রাণী রয়েছে। এই কচ্ছপগুলো ছাড়ার ফলে আরও একটি প্রাণী যুক্ত হল এই দিঘিতে। এই কচ্ছপগুলো যাতে কেউ ধরতে না পারে বা এই কচ্ছপের কোনো ক্ষতি না করতে পারে সেজন্য আমরা সব ধরনের চেষ্টা করব।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, বন্যপ্রাণী রক্ষায় সরকার বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ প্রনয়ণ করেছে। যার উদ্দেশ্যই হল  আমাদের বন্যপ্রাণীকে স্বাভাবিকভাবে প্রকৃততিতে বিচরণের সুযোগ দিতে হবে। এগুলোকে কোনোভাবে শিকার বা মারা যাবে না। যদি কেউ এসব আইন লঙ্ঘন করে তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। এজন্য বন বিভাগের পাশাপাশি আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও সচেষ্ট রয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় মোংলা থেকে কোস্টগার্ড ও বনবিভাগ ৭৩টি সন্ধি কচ্ছপ উদ্ধার করেছে। যেগুলো মাজার সংলগ্ন দিঘিতে অবমুক্ত করা হল। এগুলো এখানে বংশ বিস্তার করবে। দিঘিতে দীর্ঘদিন এই কচ্ছপ টিকে থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১০ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।