ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

যেখানে ঘুম ভাঙায় পরিযায়ী পাখিদের কিচির মিচির (ভিডিও)

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২১
যেখানে ঘুম ভাঙায় পরিযায়ী পাখিদের কিচির মিচির (ভিডিও) পরিযায়ী পাখি। ছবি: বাংলানিউজ

মাগুরা: মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার ঘোপ বাওড়ে শীত এলেই পরিযায়ী পাখিদের দেখা মেলে। বিস্তীর্ণ জলাশয়ে হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে খাবার ও নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে এখানে আসে পরিযায়ী পাখিরা।

এসময় রোজ ভোরে পাখির কিচির মিচিরে উপজেলার মানুষের ঘুম ভাঙে।

মূল শহর থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দূরে ঘোপ বাওড়। ভোর হতেই ওড়াওড়ি ও সাঁতার খেলায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে পাখিরা। তাদের কিচির মিচিরে মুখরিত হয় জলাশয়ের চারপাশ।

স্থানীয় পাখিপ্রেমীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উড়ে আসা পরিযায়ী পাখিদের মধ্যে বেশি দেখা যায় পাতি সরালি। নালিয়ার বিল, কাতলাশুরের বিল, ইছামতির বিল, ফলিয়ার বিলসহ বিভিন্ন খাল-বিল, জলাশয় ও নদীর অববাহিকায় এসব পাখির বিচরণ দেখা যায়।

পৃথিবীতে প্রায় পাঁচ হাজার প্রজাতির পাখি রয়েছে। এর মধ্যে অনেক প্রজাতির পাখি শীতপ্রধান দেশ থেকে খাবার ও উষ্ণতার জন্য হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে এদেশে চলে আসে। বালিহাঁস, সারস পাখি, ডুবুরি পাখিসহ নানা পরিযায়ী পাখির সঙ্গে দেশীয় পাখির কলকাকলিতে প্রতি বছরের এসময় মুখরিত হয়ে ওঠে ঘোপ বাওড়।

এ বাওড়ের বাসিন্দা ও আব্দুর ওয়াহাব বাংলানিউজকে বলেন, ‘শীতের শুরুতেই বাওড়ে পরিযায়ী পাখির দেখা মেলে। ঝাঁক বেঁধে বিচিত্র স্বরে ডাকতে ডাকতে ওড়ে এরা। এসময় মনোমুগ্ধকর পরিবেশ তৈরি হয়। এ দৃশ্য দেখতে পরিবার পরিজন নিয়ে ভিড় জমান পাখিপ্রেমীরা। ’

উপজেলার আরেক বাসিন্দা কৃষ্ণ সরকার বলেন, ‘আমি ব্যবসা করি। আমার স্ত্রী একটি বেসরকারি এনজিওতে চাকরি করেন। ছুটির দিনে আমরা পরিবার নিয়ে ঘোপ বাওড়ে বেড়াতে যাই। পরিযায়ী পাখিদের দেখে খুব ভালো লাগে। অনেক সময় নাম না জানা পাখির দেখা মেলে। আমার মতো অনেক পাখিপ্রেমী এখানে ঘুরতে আসেন। ’

মহম্মদপুর আর এস কে সরকারি স্কুলের শিক্ষক আনোয়ার হোসেন শাহিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রতি বছর শীত মৌসুমে বহুদূর থেকে উড়ে আসে পরিযায়ী পাখিরা। তাদের দেখতে রোজ আসেন অসংখ্য পাখিপ্রেমী। কেউ যেন এসব পাখি শিকার না করে, সেজন্য বিভিন্ন সময় আমরা প্রচার ও বাইসাইকেল র‌্যালি করি। ’

উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মানোবেন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘পাখিরা শুধু প্রকৃতির শোভাই বাড়ায় না, ভারসাম্যও রক্ষা করে। পোকা মাকড় খেয়ে এরা কৃষকের উপকার করে। জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পরিযায়ী পাখির অভয়ারণ্য গড়ে তুলতে হবে। ’

মহম্মপদুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রামানন্দ পাল বলেন, ‘পরিযায়ী পাখি আমাদের পরিবেশের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে। এরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বাড়ানোর পাশাপাশি পরাগায়নের মাধ্যমে কৃষকের ফসল বাড়ায়। তাছাড়া, শীতে পরিযায়ী পাখি দেখতে পাখিপ্রেমীদের ভিড় বাড়ে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব পাখি শিকার বন্ধে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’



বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২১
এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।