ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

কুমির পিলপিলের ৪৪ ডিম থেকে ছানা ফুটলো ৪টি 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২০
কুমির পিলপিলের ৪৪ ডিম থেকে ছানা ফুটলো ৪টি  ডিম থেকে ফোটা বাচ্চাগুলো। ছবি: বাংলানিউজ

বাগেরহাট: সুন্দরবনের একমাত্র বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্র করমজলের কুমির পিলপিলের ৪৪টি ডিম থেকে মাত্র চারটি ছানা ফুটেছে।  

শনিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) সকালে নতুন ইনকিউবেটরে রাখা পিলপিলের ১১টি ডিম থেকে মাত্র চারটি বাচ্চা জন্ম নেয়।

৪৪টি ডিম থেকে মাত্র চারটি কুমির ছানা ফোটায় হতাশা প্রকাশ করেছেন প্রাণীদের রক্ষণাবেক্ষণে নিয়োজিত বনকর্মীরা। তবে প্রাণিসম্পদ বিশেষজ্ঞরা বলছেন বয়স বেড়ে যাওয়ায় করমজলের মা কুমির দুটির ফার্টিলিটি (বাচ্চা উৎপাদনের ক্ষমতা) অনেক কমে গেছে।

এর আগে এ বছরের ১২ জুন দুপুরে প্রজনন কেন্দ্রের পুকুর পাড়ে নিজের বাসায় ৪৪টি ডিম দেয় পিলপিল। ডিমগুলোর মধ্যে ২১টি ডিম পিলপিলের নিজে বাসায়, ১২টি পুরাতন ইনকিউবেটর এবং ১১টি নতুন ইনকিউবেটরে রেখে বাচ্চা ফোটানোর চেষ্টা করেন বনকর্মীরা। এর মধ্যে নতুন ইনকিউবেটরে রাখা ১১টি ডিমের মধ্যে চারটি থেকে বাচ্চা ফুটেছে।
এছাড়া এ বছরের ২৯ মে অন্য কুমির জুলিয়েট ৫২টি ডিম দিয়েছিল। সেগুলোর মধ্যে ১৪টি ডিম জুলিয়েটের বাসায়, ২৬টি পুরাতন ইনকিউবেটরে এবং ১২টি নতুন ইনকিউবেটরে রাখা হয়েছিল। কিন্তু জুলিয়েটের ৫২টি ডিমে কোনো বাচ্চা ফোটেনি বলে জানিয়েছেন সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির।

আজাদ কবির বলেন, করমজল দেশের একমাত্র সরকারি কুমির প্রজনন কেন্দ্র। এখানে প্রজননের জন্য দুটি মা কুমির রয়েছে। আমরা খুব যত্নের সঙ্গে এই কুমিরের প্রজননের চেষ্টা করি। কুমির ডিম পাড়ার পর থেকে বাচ্চা ফোটানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। কিন্তু জুলিয়েট এবং পিলপিল দুটি কুমিরেরই অনেক বয়স হয়েছে। যার ফলে তাদের ডিমে ফার্টিলিটি হার খুবই কম।

তিনি আরও বলেন, এখানে বর্তমানে পুরোনো যে ইনকিউবেটর রয়েছে সেগুলো অনেক সেকেলে। নতুন যে ইনকিউবেটরটি তৈরি করা হয়েছে তার ধারণক্ষমতা মাত্র ২৪টি। এ ধরনের আরও দু একটি ইনকিউবেটর তৈরি করা গেলে সফলতা আসলেও আসতে পারে বলে দাবি করেন তিনি।

বাগেরহাট জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. লুৎফর রহমান বলেন, কুমির খুবই সেনসিটিভ প্রাণী। এর ডিম থেকে বাচ্চা ফোটাতে অনেক কিছু মানতে হয়। আর মা কুমির পূর্ণ বয়স্ক হওয়ার পর থেকে বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তাদের বাচ্চা উৎপাদন ক্ষমতা কমে যায়।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মাদ বেলায়েত হোসেন বলেন, কুমিরগুলোর বয়স হওয়ার কারণে ফার্টিলিটি কমে গেছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। আমরা চেষ্টা করছি মা কুমির দুটোকে পরিবর্তন করে নতুন মা কুমির আনার।

করমজলই বাংলাদেশের একমাত্র সরকারি কুমির প্রজনন কেন্দ্র। ২০০০ সালে করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের শুরু হলে এখানকার কুমির প্রথম ডিম দেয় ২০০৫ সালে। এখন পর্যন্ত করমজলে বিভিন্ন সময় ২৯২টি কুমিরের ছানা জন্ম নিয়েছে। যার মধ্যে ১৯৫টি ছানা এখনও প্রজনন কেন্দ্রে রয়েছে। ৯৭টি কুমিরের ছানা সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী ও খালে অবমুক্ত করা হয়েছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪০ ঘণ্টা, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।