ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

প্রকৃতি রক্ষায় মৌলভীবাজারে ৬ লাখ ৯২ হাজার চারা রোপণ

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২০
প্রকৃতি রক্ষায় মৌলভীবাজারে ৬ লাখ ৯২ হাজার চারা রোপণ প্রকৃতি সুরক্ষায় মৌলভীবাজারে রোপণ করা হয়েছে ৬ লাখ ৯২ হাজার ৫০০টি চারা

মৌলভীবাজার: প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় মৌলভীবাজারে রোপণ করা হয়েছে ৬ লাখ ৯২ হাজার ৫০০টি চারা। এর মধ্যে ওষুধি, ফলদ এবং বনজ বৃক্ষ রয়েছে।

‘সুফল’ প্রকল্পের মাধ্যমে মৌলভীবাজারের বনগুলো এ সুবিধা পেয়েছে। বিস্তীর্ণ পাহাড়ি এলাকা এখন নানা প্রজাতির নতুন চারায় মুখরিত।

ওষুধি গাছগুলোর মধ্যে রয়েছে আমলকি, হরিতকি, বহেরা, অর্জুন, বসাক পাতা, পাথরকুচি, আকন্দ, তুলশি, ধুতুরা, উলটকম্বল, কালোমেঘ, লেমনগ্রাস, লজ্জাবতী, ঘৃতকুমারী, ফণীমনসা, নিশিন্দা, উদাল, আমড়া, নিম, তেজপাতা, চন্দন, চালতা, ডেউয়া, তেঁতুল, শিয়ালকাঁটা প্রভৃতি।

ফলদ গাছের মধ্যে রয়েছে চালতা, বেল, তেঁতুল, ডেউয়া, কালোজাম, পুতিজাম, গোলাপজাম, আমড়া প্রভৃতি। বনজ গাছগুলোর মধ্যে রয়েছে সেগুন, আকাশমণি, চিকরাশি, পিতরাজ, কাঞ্চন, জারুল, করোই, আওয়াল, মেহগনি, রাতা, বনাক, লোহাকাঠ, সোনালু, গামার, ধারমারা, বান্দরহোলা, কোমা, চাপালিশ, ঢাকিজাম, উড়িয়াম, বেত।

স্থানীয় বনবিভাগ সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প ‘সুফল’। এর মানে সাসটেনেবল ফরেস্ট অ্যান্ড লাইভলিহুড (টেকসই বন ও জীবিকা)।

এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য সহযোগিতমূলক বন ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ও প্রকল্প এলাকায় বননির্ভর জনগোষ্ঠীর বিকল্প আয়বর্ধক কাজের সুযোগ সৃষ্টি করা। এর মাধ্যমে বন ও সংরক্ষিত এলাকা সংলগ্ন প্রায় ৬শ’ গ্রামের ৪০ হাজার বননির্ভর পরিবারের উন্নয়ন করা।

মৌলভীবাজার রেঞ্জের উপবিভাগীয় বন কর্মকর্তা (এসিএফ) জিএম আবু বকর সিদ্দিক বাংলানিউজকে বলেন, ‘বন অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল) প্রকল্পের আওতায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট ৬ লাখ ৯২ হাজার ৫০০টি চারা আমরা রোপণ করেছি। মৌলভীবাজার জেলার ৫টি রেঞ্জের ১০টি বিটের ৪৬৫ হেক্টর জমিতে এ গাছগুলো লাগানো হয়। এর মধ্যে এক লাখ ওষুধি চারা রয়েছে। ’

সূত্র জানায়, মৌলভীবাজার রেঞ্জের আওতাধীন সাতগাঁও বিট; কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী রাজকান্দি রেঞ্জের আদমপুর বিট, কুমরা বিট এবং কামারছড়া বিট; জুড়ি রেঞ্জের লাঠিটিলা বিট, রাগনা বিট, পুটিছড়া বিট, সাগরনাল বিট; কুলাউড়া রেঞ্জের বরমচাল বিট এবং বড়লেখা রেঞ্জের সমনবাগ বিট রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘চলতি বছরের মে মাস থেকে আমাদের এ কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। আর এটি শেষ হয়েছে ৩০ জুন। এ সুফল প্রজেক্টের মেয়াদ পাঁচ বছর। প্রজেক্টের মেয়াদ শেষে গাছগুলো কাটা হবে না। যেভাবে রয়েছে সেভাবেই থাকবে। মেয়াদ শেষ না হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রতি বছর আমাদের এ কার্যক্রম চলবে। ’

বন উন্নয়ন, বনের ওপর নির্ভরশীল মানুষেরা বিকল্প কাজের সুযোগ সৃষ্টিসহ বিপন্ন প্রাকৃতিক বনগুলো আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে নানা প্রজাতির জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করাই এ কার্যক্রমের অন্যতম লক্ষ্য বলে জানান তিনি।

অপর একটি কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে দেশব্যাপী এক কোটি চারা রোপণের অংশ হিসেবে মৌলভীবাজার জেলায় ১ লাখ ৪২ হাজার ২৭৫টি চারা রোপণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ১ লাখ ১১ হাজার চারা রোপণ করা হয়েছে। মৌলভীবাজার জেলার ৭ উপজেলায় ২০ হাজার ৩২৫টি করে চারা বন্টন হয়। এ কার্যক্রম ১৬ জুলাই শুরু হয়েছে, চলবে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এ ছাড়াও ৩০ হাজার চারা স্থানীয় সদস্য সদস্যের পরামর্শক্রমে স্থানীয়ভাবে বিতরণ করা হয়েছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১২২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২০
বিবিবি/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।