ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

১০ বছর পর শ্রীমঙ্গলে অতি দুর্লভ ‘বাঘা বগলা’

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৯
১০ বছর পর শ্রীমঙ্গলে অতি দুর্লভ ‘বাঘা বগলা’

মৌলভীবাজার: শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ একটি অতি দুর্লভ ‘বাঘা বগলা’ উদ্ধার করেছে। তবে পাখিটি কিছুটা আহত অবস্থায় রয়েছে। দ্রুত সুস্থ হওয়ার জন্য চলছে পরিচর্যা।

এ প্রজাতিকে বাংলাদেশে দ্বিতীয়বার পাওয়া গেছে বলে বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা জানান।
 
এ অতি বিরল প্রজাতির পাখির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো- বাঘা বগলা প্রচণ্ড রেগে গেলে তার ডোরাকাটা পালক ফুলিয়ে, ডানা ছড়িয়ে, মাথার মুকুট খাড়া করে, বল্লমের মতো ধারালো ঠোঁট সোজা করে ধেয়ে আসে।


 
বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশেনর পরিচালক সজল দেব বাংলানিউজকে বলেন, পাচাউন এলাকায় হাওরে জেলেদের পাতা বড়শিতে ধরা পড়ে এ পাখিটি। খবর পাওয়া মাত্রই আমি ঘটনাস্থলে মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর ২০১৯) সন্ধ্যায় ছুটে গিয়ে কিছু অর্থের বিনিময়ে পাখিটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি।
 
সজল দেব আরও বলেন, ২০১০ সালে একবার অনুরূপ একটি বাঘা বগলা আমি শ্রীমঙ্গলের পশ্চিম ভাড়াউড়া এলাকা থেকে জেলেদের কাছ থেকে উদ্ধার করেছিলাম। হাওরে পাতা বড়শিতে পাখিটি আটকা পড়েছিল। পরে কিছুদিন সেবা-যত্নের পর দুই প্রখ্যাত পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক এবং পল থমসনের উপস্থিতে হাইল হাওরে আমরা পাখিটিকে অবমুক্ত করেছিলাম।  
 
বড়শি গলায় বিঁধে যাওয়ায় এই ‘বাঘা বগলা’ পাখিটি বর্তমানে অসুস্থ এবং তাকে সেবাযত্ন করা হচ্ছে বলে জানান সজল।   
 
বন্যপ্রাণী গবেষক ও আলোকচিত্রী আদনান আজাদ আসিফ বাংলানিউজকে বলেন, এটি খুবই দুর্লভ প্রজাতির পাখি। এটিকে বাংলাদেশে সম্ভবত এই দ্বিতীয়বার দেখা গেলো। এর ইংরেজি নাম ‘গ্রেট বিটান’ এবং বৈজ্ঞানিক নাম ‘বাটরাস স্টেলারিস’। বাংলা নাম ‘বড় বগলা’ বা ‘বাঘা বগলা’।
 
তিনি আরও বলেন, এটি নিশাচর পাখি, তাই তাকে দেখা যায় না। মূলত অন্ধকার নেমে এলে এরা খাবারের সন্ধানে বের হয়। ছোট মাছ, ব্যাঙসহ জলচর ছোট ছোট সরীসৃপ ও উভচর প্রাণী শিকার করে। জলাশয় বা হাওরের আশপাশের ঝোপে থাকতে পছন্দ করে।
 
মানুষ বা কোনো প্রাণী দেখলে পাখা মেলিয়ে গায়ের সব পাখনা ফুলিয়ে ভয় দেখাতে বা ঠোঁকর দিতে ওস্তাদ। রাতে একে যে কেউ দখলে ভয় পেয়ে যাবে। কিছুটা বাঘের মতো আক্রমণাত্মক ও রং বলে ‘বাঘা বগলা’ বলা হয় বলে জানান বন্যপ্রাণী গবেষক আদনান আজাদ আসিফ।
  
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৯
বিবিবি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।