ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

আফ্রিকার ‘অক্সপেকার’ বাংলাদেশের ‘ভাত-শালিক’

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০১৯
আফ্রিকার ‘অক্সপেকার’ বাংলাদেশের ‘ভাত-শালিক’ প্রকৃতির উপকারী সর্বভুক ‘ভাত-শালিক’। ছবি: আনিতা শাহরিয়ার

মৌলভীবাজার: এক ধরনের পাখি আছে যারা বন্যপ্রাণীর শরীরের ক্ষতিকর পোকা খায়। আফ্রিকায় এ পাখিটির নাম ‘অক্সপেকার’। এই অক্সপেকারের অনুরূপ পাখি আমাদের ‘ভাত-শালিক’। এরাও ‘অক্সপেকার’ পাখির মতো আমাদের দেশের বন্যপ্রাণী বা গৃহপালিত প্রাণীর শরীর থেকে পোকা খায়।

বন্যপ্রাণী গবেষক ও আলোকচিত্রী ‘অক্সপেকার’ সম্পর্কে আদনান আজাদ আসিফ বাংলানিউজকে বলেন, আফ্রিকায় ‘অক্সপেকার’ নামে একটি বিশেষ পাখি রয়েছে যারা বন্যপ্রাণীদের শরীরের নানা ধরনের পোকা খায়। প্রাণীদের লোমের ভেতরের ক্ষতিকর পোকাগুলো খেয়ে এরা প্রাণীগুলোকে নানান রোগ-বালাইয়ের হাত থেকে রক্ষা করে।

আমাদের দেশের ‘ভাত-শালিকরাও তাই।
 
তিনি আরো বলেন, তারাও ‘অক্সপেকার’ পাখির মতো কাজ করে। আমাদের বিভিন্ন গবাদিপশুর শরীর থেকে ভাত-শালিকরা পোকা খায়। শুধু তাই নয়, গরু-মহিষের নাক-কানের ভেতর থেকে এরা পোকামাকড় টেনে বের করে খায়।
 
আদনান আজাদ আসিফ ‘ভাত-শালিক’ প্রসঙ্গে বলেন, দেশের এমন কোনো এলাকা নেই, যেখানে এই ভাত-শালিকের দেখা পাওয়া যায় না। পাখিটিকে আমাদের দেশের আনাচেকানাচে বেশি দেখা যায়। এটা হচ্ছে এমন পাখি- যাকে কাকের পরে ছেলেবুড়ো সবাই এক নামে চেনে। আফ্রিকার ‘অক্সপেকার’পাখি।  ছবি : সংগৃহীত
তবে এই পাখিটিকে নিয়ে কুসংস্কার আছে যে- ‘আজ একটি শালিক দেখেছি, ভাগ্যটা আজ খারাপ যাবে। ’ বা ‘দুইটা শালিক দেখেছি, আজ আমাদের ভাগ্য ভালো। ’ শহরগ্রাম সব জায়গাতেই এই পাখিটাকে নিয়ে এমন কুসংস্কার রয়েয়ে বলে জানান আদনান।
 
ভাত-শালিকের গুণ ও খাদ্যগ্রহণ সম্পর্কে তিনি বলেন, এ পাখিটির বিশেষ গুণ হলো সে সুন্দর করে কথা বলতে পারে। অবিকল মানুষের স্বর নকল করে। ময়নার ইংরেজি নাম হলো- Common Myna। তাদের খাদ্যতালিকায় এমন কিছু নেই যে এরা খায় না; এরা সব খায়। এরা ডাস্টবিনের খাবার থেকে শুরু করে, বিভিন্ন পোকা-মাকড়, টিকটিকি-ব্যাঙ, খেজুরের রস, নানান ফুলের মধু, পেয়ারা-পেপেসহ নানা প্রকারের ফল-মূল এমন কিছু নাই যে এরা খায় না। তাই এদের আরেক নাম সর্বভুক পাখি। এরা আমাদের প্রকৃতির উপকারি পাখি।  
 
এই ভাত-শালিক ইচ্ছে করলে বাবুই পাখির মতো সুন্দর করে গাছে বাসা তৈরি করতে পারে আবার চড়ুই পাখির মতো বিল্ডিংয়ে বাসা বানিয়ে প্রজনন করতে পারে বলেন জানান বন্যপ্রাণী গবেষক আদনান আজাদ আসিফ।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৮১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৯
বিবিবি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।