ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

ফলদ বৃক্ষমেলার চমক ‘টবে বেলগাছ’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৭
ফলদ বৃক্ষমেলার চমক ‘টবে বেলগাছ’ শ্রীমঙ্গলে ফলদ বৃক্ষমেলায় প্রদর্শিত টবে বেলগাছ, ছবি : বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় একটি ফল ‘বেল’। গাছের আকার মাঝারি বিশালাকৃতির হয়ে থাকে। গ্রাম-বাংলা পথে-প্রান্তরে এই গাছটিকে একসময় ব্যাপক আকারে দেখা যেতো। তবে এখন আর ব্যাপকভাবে চোখে পড়ে না।

সময়ের বিবর্তনে কিছুটা বিলুপ্তির পথে চলে যাওয়া ভেষজগুণসম্পন্ন এই উদ্ভিদটিকে নতুন করে পরিচয় ঘটিয়ে দিয়েছেন এক নার্সারী কর্তৃপক্ষ।  

মেলার অন্যতম চমক হিসেবে দেখা গেলো টবের গাছে ধরেছে বেল।

বৃক্ষমেলা পরিদর্শন করে দেখা গেল, টব সমেত বেলগাছটিকে দারুণ দেখাচ্ছে। আগত দর্শনার্থীদের ভিড় এই গাছটিতে কেন্দ্র করে। তবে টবের আকৃতি কিছুটা বড়।

বেল গাছের ইংরেজি নাম Wood apple এবং বৈজ্ঞানিক নাম Aegle marmelos। এটি Rutaceae গোত্রের অর্ন্তভুক্ত একটি মাঝারি আকারের উদ্ভিদ। বেলগাছের উচ্চতা সাধারণত ২০ থেকে ২৫ ফুট হয়ে থাকে। গাছের বাকল পুরু, তুলনামূলকভাবে নরম, ধূসর বর্ণের। ফাল্গুন-চৈত্র মাসে বেলগাছের পাতা ঝরে যায় ও বৈশাখ মাসে নতুন পাতা ও ফুল আসে।

সোমবার (২৮ আগস্ট) তিন দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধক এবং প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ এমপি। উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান রনধীর কুমার দেব, শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোবাশশেরুল ইসলাম, শ্রীমঙ্গল উপজেলার কৃষি অফিসার নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি।  
শ্রীমঙ্গলে ফলদ বৃক্ষমেলায় প্রদর্শিত টবে বেলগাছ, ছবি : বাংলানিউজমৌলভীবাজার কালাম নার্সারীর স্বত্বাধিকারী আবদুল কালাম বাংলানিউজকে বলেন, টবে লাগানো এই বেল গাছটির বয়স পাঁচ বছর। গত বছরই প্রথম দুটি ফল ধরেছিলো। এবার এসেছে ৫টি ফল। গাছটির দাম সাড়ে তিন হাজার চেয়েছি, তবে তিন হাজার হলে ছেড়ে দেবো।

কালাম আরো বলেন, যশোর থেকে আমি এই গাছটির কলম সংগ্রহ করেছি। পরীক্ষামূলকভাবে দেখেছিলাম যে টবে বেল হয় কি না? আমি সফল হয়েছি। শুধু বেলগাছ নয়, অন্যান্য মাঝারি আকারের সব গাছই লাগনো সম্ভব। গোবর সারের পাশাপাশি টিএসপি সার দিয়েছি এই বেলগাছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অজিত কুমার পাল বলেন, ‘আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বেলকে অতি উত্তম ফল হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। এর রয়েছে নানাবিধ উপকারিতা। বেলের পুষ্টিগুণ অন্য ফলের চেয়ে অত্যন্ত বেশি। ভিটামিন ‘সি’ ও ভিটামিন ‘এ’ ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ট্যানিন ও লৌহ উপাদান যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে। ডায়ারিয়া, আমাশয়ে বেল খুবই উপকারী। ’

তিনি আরো বলেন, ‘যারা নিয়মিত বেল খান, তাদের কোলন ক্যানসার, গ্লুকোমা, জেরোসিস, জেরোপথ্যালমিয়ায় আক্রান্ত না হওয়ার প্রবণতা তুলনামূলকভাবে কম থাকে। এছাড়াও বেল ডায়াবেটিস ও বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে। অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান রয়েছে। প্রতিদিন বেলের শরবত পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্যসহ শরীরের ক্লান্তি দূর হয়। ’

প্রতিদিন একটি করে বেলপাতা ঘি দিয়ে ভেজে চিনিসহ খেলে স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটে বলে জানান উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অজিত কুমার পাল।

 
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৭
বিবিবি/বিএস 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।