ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

অতি দুর্লভ ‘ট্রিসট্রামের চটক’

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২৩ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৭
অতি দুর্লভ ‘ট্রিসট্রামের চটক’ ডালে বসে আছে অতি দুর্লভ ট্রিসট্রামের চটক, ছবি: তানিয়া খান

মৌলভীবাজার: মাত্র একবারই দেশে দেখে গিয়েছিল পাখিটিকে। তাও প্রায় বছর দুয়েক আগে। তারপর আর বাংলাদেশের কোথাও পাখি পর্যবেক্ষকদের চোখে ধরা পড়েনি পাখিটির বাস্তব প্রতিচ্ছবি। অতি দুর্লভ এ পাখিটির নাম ‘ট্রিসট্রামস বান্টিং’।

দেশে প্রথম যিনি এ পাখিটির আলোকচিত্র ধারণ করতে পেরেছিলেন তিনি বন্যপ্রাণী গবেষক তানিয়া খান। বার্ড ওয়াচার বা পাখি পর্যবেক্ষকদের কাছে নতুন একটি পাখির ছবি তুলতে পারা অতি বিস্ময়কর ব্যাপার।

তারপর তা যদি হয় প্রথম রেকর্ড তাহলে তো কথাই নেই! হঠাৎ খুঁজে পাওয়া এ বিস্ময়টুকু হৃদয়কে চিরকাল অনুপ্রাণিত করে।

‘বার্ডিংএশিয়া’ নামে আন্তর্জাতিক একটি জ‍ার্নালে বাংলাদেশে ফার্স্ট রেকর্ড হিসেবে ‘ট্রিসট্রামস বান্টিং’ পাখিটির একটি সচিত্র প্রবন্ধও প্রকাশিত হয়। এর ফলে সারা পৃথিবীর পাখিপ্রেমীরা এ তথ্য পেয়ে গেছেন।  

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব ‘Bunting’ প্রজাতির এ পাখিগুলো বাংলা নামকরণ করছে ‘চটক’। এরা ছোট আকারের সামাজিক পাখি। এদের রয়েছে শক্তিশালী চক্ষু। তবে দেখা পাওয়া কঠিন।

Emberizidae পরিবারের মোট ৪ পরিবারের পাখি বাংলাদেশে পাওয়া যায়। এগুলো হলো লালকান-চটক (Chestnut-eared Bunting), খুদে-চটক (Lettle Bunting), হলদেবুক-চটক (Yellow-breasted Bunting) এবং কালামুখ-চটক (Black-faced Bunting)।       

এ পাখি যেহেতু বাংলাদেশে কখনও দেখা যায়নি এবং ছিল না; তাই এর বাংলাকরণ করা হয়নি। তবে পাখিটিকে ‘ট্রিসট্রামের চটক’ অথবা ‘ট্রিসট্রামের বান্টিং’ অনায়াসে বলা যেতে পারে। অতি দুর্লভ এ পাখিটির ইংরেজি নাম Tristram's Bunting এবং বৈজ্ঞানিক নাম Emberiza Tristrami।

বন্যপ্রাণী গবেষক তানিয়া খান বাংলানিউজকে বলেন, ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি অতি দুর্লভ এ পাখিটিকে আমি সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে প্রথম দেখি। তারপর অনেক প্রতীক্ষার পর এর কয়েকটি ছবি তুলতে সক্ষম হই। পাখিটি মাত্র ১৪ থেকে ১৬ সেন্টিমিটার হবে।

পাখিটি সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, ‘ট্রিসট্রামস বান্টিং’ আসলে আমাদের এই রিজিওনের পাখি নয়। তবে ২০১১ সালে মাত্র একবার আমাদের দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম পাখিটিকে দেখা গিয়েছিল। এটি দক্ষিণ চীন ও উত্তর কোরিয়া অঞ্চলের পাখি। প্রজনন মৌসুমে এরা সাইবেরিয়াতে চলে আসে।  

এদের খাবার সংগ্রহের ধরন প্রসঙ্গে তানিয়া বলেন, এর খাবার স্টাইল যেটা দেখলাম তা হলো মাটিতে নেমে লাফিয়ে-লাফিয়ে ঘুরে-ঘুরে পোকা শিকার করে। কোনো পোকা ধরতে পারলেই চট করে পোকাটিকে ধরে ছোট আকারের গাছের ডালে নিয়ে যায় এবং সেখানেই খায়। খাওয়া শেষ হলে আবার পোকার সন্ধানে মাটিতে নামে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩২২ ঘন্টা, জুন ১৩, ২০১৭
বিবিবি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad