ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

কয়লা উত্তোলনে বিপন্ন লালাখাল

সাব্বির আহমদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৩
কয়লা উত্তোলনে বিপন্ন লালাখাল

সিলেট: সিলেটের পর্যটন এলাকা জৈন্তাপুরের লালাখাল দিয়ে বয়ে যাওয়া রূপসী নদী ‘সারি’। স্বচ্ছ নীলাভ জলের কারণে  সিলেটের একটি অন্যতম পর্যটক স্পট এটি।

প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক এখানে ভিড় করেন লালাখালের সৌন্দর্য উপভোগ করতে। কিন্তু অপরিকল্পিত ও অবৈধ কয়লা উত্তোলনের কারণে এ নদী তার স্বচ্ছ নীলাভ বৈশিষ্ট্য হারাচ্ছে ক্রমশ।

ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পাহাড়ি ঝরনা থেকে সৃষ্ট সারি নদী বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ১৩০০ নম্বর পিলার অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ঝরনা বেয়ে বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলে বালু ও পাথরের সঙ্গে নেমে আসে কয়লাও। শুষ্ক মৌসুমে নদীর পানি কমতে শুরু করলে লালাখাল এলাকায় নদীর তলায় জমতে থাকে কয়লার স্তর।

আর স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী অবৈধ উপায়ে উত্তোলন করছে এ কয়লা। এতে যেমন এ নদীর জল তার বৈশিষ্ট্য হারচ্ছে তেমনি বিপর্যস্ত হচ্ছে এর প্রাকৃতিক পরিবেশ। ভাঙন দেখা দিয়েছে দুই পাড়ে। অথচ  স্থানীয় প্রশাসন কয়লা উত্তোলন বন্ধে মাইকিং করেই দায় সারছেন।

স্থানীয়রা জানান, অপরিকল্পিভাবে কয়লা উত্তোলনের ফলে নদী তীরের অনেক স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীর পানিতে দেখা দিয়েছে ঘোলাটে ভাব। প্রতিদিন কয়লা, বালু ও পাথর উত্তোলনে কয়েকশ’ শ্রমিক নদীতে  নামছেন। এতে নির্জনতা হারিয়েছে সারি নদীর লালাখাল এলাকা।

শুধু খোঁড়াখুঁড়ি করে নদী তীরের প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপন্ন করে কয়লা উত্তোলনই নয় বর্ডারগার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ক্যাম্পের সামনেই হরদম চলছে কয়লা কেনা-বেচা।

এ বিষয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলামের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, কয়লার উত্তোলনের জন্য খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধ করতে উপজেলা প্রশাসন থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মাইকিংও করা হয়েছে।

এছাড়া স্থানীয়দের পক্ষ থেকে জনসচেতনা গড়ে তুলতে কাজ করছে প্রশাসন।

তিনি জানান, গতবারের চেয়ে এবার খোঁড়াখুঁড়ি কম। পুরোপুরি খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধ করতে হলে পাহারা বসাতে হবে।

এছাড়া পরিবেশ প্রতিপন্ন এলাকা ঘোষণার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা লালাখাল এলাকা পরিদর্শন করেছেন বলেও জানান তিনি।

লালাখাল-জাফলং এলাকাগুলো পরিবেশ প্রতিপন্ন এলাকা ঘোষণার দাবিতে আন্দোলন করছেন পরিবেশবাদীরা। তারপরও থেমে নেই নদীর পরিবেশ ও সৌন্দর্য বিনষ্টকারী কয়লা আহরণ।

শুষ্ক মৌসুমে প্রতিবছর যত্রতত্র নদী খুঁড়ে চলে কয়লা উত্তোলন আর  কেনা-বেচার ধুম।

লালাখালের তীরে গড়ে তোলা নামিগড় রিসোর্ট রেস্টুরেন্টের প্রধান ও পর্যটন উদ্যোক্তা নাজিম কামরান চৌধুরী জানান, লালখালের প্রায় এক কিলোমিটার পর্যন্ত কয়লার কারবার চলায় লালাখালের পরিবেশ বিপন্ন হওয়ার মুখে পড়েছে ।

বিজিবি ক্যাম্পের সামনে বিজিবির অসৎ কর্মকর্তাদের মাসোহারা দিয়ে  দিয়ে এ কাজ চলে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।  

বাংলাদেশ সময়:  ১০০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৩

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।