ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

পিরোজপুর-বাগেরহাট সীমান্ত নদীতে ঘুরছে ট্রান্সমিটার বসানো কুমিরটি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২৪
পিরোজপুর-বাগেরহাট সীমান্ত নদীতে ঘুরছে ট্রান্সমিটার বসানো কুমিরটি ট্রান্সমিটার বসানো কুমির

পিরোজপুর: পিরোজপুর ও বাগেরহাটের সীমান্তবর্তী মধুমতি নদীতে ঘুরছে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো সুন্দরবনের সেই কুমিরটি।  

কুমিরের আতঙ্কে স্থানীয়রা ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সতর্কীকরণ পোস্ট দিয়েছেন।

স্থানীয়দের মধ্যে কুমিরের আক্রমণের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। তবে বনবিভাগ ও কুমিরের গতিবিধি নিয়ে গবেষণার কাজে দায়িত্বপ্রাপ্তরা এ নিয়ে কোনো আতঙ্কিত না হতে পরামর্শ দিয়েছেন।  

শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সুন্দরবনের স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো   কুমিরটিকে স্থানীয়রা পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার মাটিভাঙ্গার সীমান্তবর্তী বাগেরহাটের চিতলমারি উপজেলার শৈলদাহের বাংলাবাজার এলাকার মধুমতি নদীতে ভাসতে দেখেন।  

শৈলদাহ ও পাটগাতি এলাকায় ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালক মো. জিয়াউল হাসান বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে তিনি যাত্রী নিয়ে শৈলদাহর দিকে যাওয়ার সময় শৈলদাহ ভাঙ্গা রাস্তার মোড় এলাকা থেকে কুমিরটিকে রাস্তা অতিক্রম করতে দেখেন। কুমিরটি দেখে তিনি প্রথমে আতঙ্কিত হলেও পরে পিটে ট্রান্সমিটার বসানো দেখেছেন।

এমডি রাফসানুল ইসলাম নামে একজন তার ব্যবহৃত ফেসবুকে এ সংক্রান্ত একটি সতর্কীকরণ পোস্ট দিয়ে স্থানীয় নদী বা খালের পানিতে না নামার অনুরোধ করেছেন। এমন সতর্কীকরণ পোস্ট দিয়েছেন আরও অনেকে।

এ বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ ন্যাচার (আইইউসিএন) এর কর্মকর্তা মো. সরোয়ার হোসেন জানান, কুমিরটি নিয়ে কোনো ধরনের আতঙ্কিত হওয়ার কিছুই নাই। এটি মাত্র আড়াই থেকে পৌনে ৩ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি বাচ্চা কুমির। এর বয়স আড়াই বছর। কুমিরটির গতিবিধি লক্ষ্য করতে এর পিটে স্যালেটাইট বসানো হয়েছে। এটি নিয়ে গবেষণা চলছে।

জানা গেছে, লোনা পানির কুমিরের আচরণ ও গতিবিধি গবেষণার জন্য সম্প্রতি সুন্দরবনের চারটি কুমিরের শরীরে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে অবমুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩টি কুমির সুন্দরবন ও লবণাক্ত পানিতে ঘোরাঘুরি করলেও একটি চলে যায় পিরোজপুরের দিকে। ওই সব এলাকায় সাধারণত সাধু পানির এলাকা হিসেবে ধরা হয়।

সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক মো. আজাদ কবির বলেন, গত প্রায় এক মাস আগে সুন্দরবনের লবণাক্ত পানির ৪টি কুমিরের শরীরে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩টি কুমির সুন্দরবন এলাকায় অবস্থান করলেও একটি কুমির অন্যত্র চলে গেছে। আমাদের কাছে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী কিছুদিন ধরে সেটি পিরোজপুরের নদ-নদীতে ঘুরছে। সবশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী (শুক্রবার ১২ মার্চ, বিকেল ৪টা নাগাদ) সেটি পিরোজপুর-বাগেরহাট ও গোপালগঞ্জ সীমান্তবর্তী চিতলমারি উপজেলার কলাতলা এলাকার একটি পুকুরে অবস্থান করছে। নিজের জন্য কোনো নিরাপদ স্থান পেতে তার এমন পথ চলা বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, গত ১৩ মার্চ প্রথমে দুটি ও এর ৩ দিন পরে আরও দুটি কুমির অবমুক্ত করা হয়। সেই দুটির একটি কুমির এটি। অবমুক্ত করা ৪টি কুমিরের মধ্যে দুটি পুরুষ ও দুটি নারী কুমির রয়েছে। এর আগে সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র থেকে ২০০টি কুমির অবমুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু তাদের গতিবিধি এমনভাবে নজর দেওয়া হয়নি। তবে এর আগে একইভাবে শরীরে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে কচ্ছপ ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।