ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

বিনোদন

সুবহার মামলায় খালাস পেলেন ইলিয়াস

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫১ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২২
সুবহার মামলায় খালাস পেলেন ইলিয়াস ইলিয়াস হোসাইন-শাহ হুমায়রা হোসেন সুবহা

ঢাকা: যৌতুকের জন্য নির্যাতনের অভিযোগে সাবেক স্ত্রী অভিনেত্রী শাহ হুমায়রা হোসেন সুবহার মামলায় খালাস পেয়েছেন গায়ক ইলিয়াস হোসাইন। বুধবার (২৭ জুলাই) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক সাবেরা সুলতানা খানম এই রায় দেন।

এই মামলায় ইলিয়াসের বিরুদ্ধে মামলা চালাবেন না বলে আদালতে জবানবন্দি দেন সুবহা। গত ২৫ জুলাই আদালতে উপস্থিত হয়ে সুবহা জানান, দেনমোহর ও ভরণপোষণ বাবদ দশ লাখ টাকা ইলিয়াস তাকে দিয়েছেন। তিনি মামলা চালাতে চান না। এরপর আদালত মামলার বিচারকাজ সমাপ্ত ঘোষণা করে ২৭ জুলাই রায়ের জন্য দিন ধার্য করেন।  

অন্য একটি সূত্রে জানা যায় আপসের জন্য ২০ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে সুবহাকে। যদিও এ বিষয়ে তারা কোনো মন্তব্য করেননি। এই আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আফরোজা ফারহানা আহমেদ (অরেঞ্জ) এই তথ্য জানান।  

এর আগে গত ১৯ জুন মামলায় চার্জগঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। একইসঙ্গে আগামী ২৪ জুলাই সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেন আদালত। সাক্ষ্যের জন্য নির্ধারিত দিনে সুবহা মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন করেন। এ সময় আসামি ইলিয়াস উপস্থিত না থাকায় শুনানির জন্য ২৫ জুলাই দিন দার্য করেছিলেন আদালত।  

২০২১ সালের ৩ জানুয়ারি রাজধানীর বনানী থানায় এই মামলা দায়ের করেন সুবহা।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত বছর সেপ্টেম্বরে ইলিয়াসের সঙ্গে সুবহার পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কে গড়ে ওঠে। গত ১ ডিসেম্বর তারা বিয়ে করেন। বিয়ের সময় সুবহার পরিবারের পক্ষ থেকে ইলিয়াসের চাহিদা মোতাবেক ১২ লাখ টাকার রোলেক্স ব্র্যান্ডের ঘড়িসহ ১৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকার পণ্য দেওয়া হয়। কিন্তু এতেও ইলিয়াস সন্তুষ্ট হননি। এর মাঝে সুবহা জানতে পারেন, ইলিয়াস আগে একাধিক বিয়ে করেছেন এবং অসংখ্য প্রেমের সম্পর্ক চলমান। এরই মাঝে ইলিয়াস সুবহার কাছে ফ্ল্যাট কেনা বাবদ ৫০ লাখ এবং গাড়ির জন্য আরও ৩০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। গত ৯ ডিসেম্বর ইউটিউব চ্যানেল কেনার জন্য সুবহার মায়ের কাছে আরও ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন ইলিয়াস। তাকে আড়াই লাখ টাকা দেয় সুবহার পরিবার।  

পরে গত ২৭ ডিসেম্বর দুপুরে ফ্ল্যাট ও গাড়ি কেনার জন্য ৮০ লাখ টাকার জন্য চাপ দেন ইলিয়াস। এ নিয়ে তাদের ঝগড়া হয়। এর জের ধরে রাত ৮টার দিকে সুবহাকে শারীরিক নির্যাতন করেন তিনি। পরদিন আবারও ৮০ লাখ টাকা যৌতুক চান তিনি। এ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ইলিয়াস সুবহাকে মারধর এবং মাথা দেয়ালের সাথে ঠুকে জখম করেন।  

এরপর ইলিয়াস সুবহাকে ব্যাথার ওষুধের কথা বলে ঘুমের ওষুধ খাওয়ান। একটু পর সুবহা অজ্ঞান হয়ে যান। এ সুযোগে ইলিয়াস আলমারিতে থাকা ২০ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার এবং ৫০ হাজার টাকা নিয়ে যান। সুবহার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

মামলাটি তদন্ত করে চলতি বছর ২২ ফেব্রুয়ারি চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিএমপির ডিএমপির তেজগাঁও নারী সহায়তা ও তদন্ত বিভাগের উপপরিদর্শক মাসুমা আফ্রাদ।  

এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন পান ইলিয়াস। জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তিনি। এরপর দুই দফায় আদালতে অনুপস্থিত থাকায় গত ২২ মার্চ তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন একই ট্রাইব্যুনাল।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫১ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২২
কেআই/এনএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।