ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

নাসিক ভোট: ঢাকায় কর্মরতদের ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগের নির্দেশ

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২১
নাসিক ভোট: ঢাকায় কর্মরতদের ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগের নির্দেশ

ঢাকা: আসন্ন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ঢাকায় কর্মরতদের মধ্য থেকে নিয়োগ দিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে সরকারি বা স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী অথবা সরকারি এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের নিয়োগ দিতে বলা হয়েছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রথমবারের মতো কোনো নির্বাচনে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার বাইরে থেকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। ভোটে কারচুপি রোধ, এনসিসিতে লোকবলের ঘাটতি, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পরিচালনায় দক্ষ লোকবলের অভাবসহ বিভিন্ন কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহফুজা আক্তারকে বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) নির্দেশনাটি পাঠিয়েছেন ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, সব মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনার অনুলিপি পাঠানো হয়েছে।

এতে উল্লেখ করা হয়েছে-  নাসিক নির্বাচন যেহেতু ইভিএমের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে সেহেতু সর্বাধিক সংখ্যক প্রযুক্তিগত বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন কর্মকর্তাদের প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার হিসাবে নিয়োগ দিতে হবে। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারি বা স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান, সংস্থার কর্মকর্তা/কর্মচারী অথবা সরকারি বা এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের প্রাধান্য দিতে হবে। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, ঢাকা মহানগরে কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারী বা শিক্ষকদের মধ্য থেকে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে হবে।

ঢাকা মহানগরের প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মকর্তা/কর্মচারী বা শিক্ষক স্বল্পতা হলে গাজীপুর মহানগর, নারায়ণগঞ্জ সিটি ও ঢাকা মহানগর সংলগ্ন উপজেলা থেকে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করা যাবে। তবে ঢাকা মহানগর বর্হিভূত অফিস, প্রতিষ্ঠান থেকে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগের পূর্বে ইসির তাৎক্ষণিক অনুমোদন নিতে হবে।

নির্দেশনায় প্রার্থীদের নির্বাচনী এজেন্টদের কর্তব্য সম্পর্কেও উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে- পোলিং এজেন্ট ভোটকেন্দ্র/ভোটকক্ষে ঘোরাফেরা করা বা বাইরে যেতে পারবেন না। পোলিং এজেন্টরা তাদের জন্য নির্ধারিত স্থানে উপবিষ্ট থেকে ভোটগ্রহণ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবেন। তারা কোনোভাবেই ভোটদানের গোপন কক্ষে যেতে পারবেন না। এমনকি ভোটগ্রহণ চলাকালে ঘনঘন বাইরেও যেতে পারবেন না। জরুরি বা প্রাকৃতিক কোনো কাজে বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হলে যথাসম্ভব দ্রুততার সঙ্গে ফিরে আসার নির্দেশনা দিতে হবে। তবে পথে কারও সঙ্গে আলাপ আলোচনা বা তথ্য আদান-প্রদান করতে পারবেন না।

খাবারের প্রয়োজন হলে সকাল বেলা আসন গ্রহণের প্রাক্কালেই তা নিয়ে আসতে হবে। খাবারের জন্য বা খাবারের অজুহাতে কক্ষের বাইরে যেতে পারবেন না। বিষয়টি পূর্বেই প্রার্থী, তার নির্বাচনী এজেন্ট ও পোলিং এজেন্টদের জানিয়ে দিতে হবে। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার এক ঘণ্টা অতিবাহিত না হলে কোনো পোলিং এজেন্ট বাইরে যেতে পারবেন না। কোনো এজেন্ট বা নির্বাচনী এজেন্ট ভোটকক্ষে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবে না। প্রিসাইডিং অফিসার এর নিশ্চয়তা বিধান করবেন।

নাসিক নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার শেষে মেয়র পদে ছয়জন, সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে ৩৪ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ১৪৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন।

মেয়র পদে ছয়জন প্রার্থী হলেন- খেলাফত মজলিসের এবিএম সিরাজুল মামুন, স্বতন্ত্র থেকে বিএনপি নেতা তৈমুর আলম খন্দকার, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মো. মাছুম বিল্লাহ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মো. জসীম উদ্দিন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মো. রাশেদ ফেরদৌস এবং আওয়ামী লীগের সেলিনা হায়াৎ আইভী।

ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই সিটিতে সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর। সে সময় প্রার্থীরা প্রচারের জন্য সময় পেয়েছিলেন ৫ ডিসেম্বর থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত, মোট ১৬ দিন। আর এবার ভোটগ্রহণ হবে ২০২২ সালের ১৬ জানুয়ারি। প্রচার শুরু হয়েছে ২৮ ডিসেম্বর, আর শেষ হবে ১৪ জানুয়ারি মধ্যরাত ১২টায়। অর্থাৎ এবার প্রার্থীরা প্রচারের জন্য সময় পাচ্ছেন ১৮ দিন। নির্বাচনে প্রায় পাঁচ লাখের মতো ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন।

২০১১ সালে সিটি করপোরেশন হিসেবে যাত্রা শুরুর পর নারায়ণগঞ্জে এবার তৃতীয় নির্বাচন হচ্ছে। প্রথমবার নয়টি ওয়ার্ডে ইভিএমে, বাকিগুলোতে ব্যালট পেপারে ভোট হয়। ২০১৬ সালে সব কেন্দ্রে ব্যালট পেপারে এবং এবার ভোট হবে ইভিএমে। প্রথমবার নির্দলীয় প্রতীকে ভোট হয় এ সিটিতে। দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন চালুর পর এটি দ্বিতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২১
ইইউডি/এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।