ঢাকা, সোমবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

ইউপি নির্বাচন

বোয়ালমারীতে দুই নেতার কোন্দল, বেকায়দায় নৌকার প্রার্থীরা

হারুন-অর-রশীদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২১
বোয়ালমারীতে দুই নেতার কোন্দল, বেকায়দায় নৌকার প্রার্থীরা

ফরিদপুর: চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে রোববার (২৬ ডিসেম্বর) ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ১০ ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ করা হবে। এই নির্বাচনে বিএনপি নেতারা দলীয় প্রতীকে অংশ না নিলেও স্বতন্ত্র পরিচয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

অপরদিকে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগের ডজনখানেক মনোনয়ন বঞ্চিতরা বিদ্রোহী হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। আর এতে বেকায়দায় পড়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা।

অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এম,এম মোশাররফ হোসেন মুশা মিয়া এবং সাবেক এমপি ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. আবদুর রহমানের টানাপোড়েন এবং রেষারেষিতে যোগ্য প্রার্থীরা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। এ অবস্থায় দলের মনোনীত প্রার্থীদের কোথাও লড়তে হচ্ছে নিজ দলের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে, আবার কোথাও লড়তে হচ্ছে স্বতন্ত্রের মোড়কে অংশ নেওয়া বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে একমাত্র সাতৈর ইউনিয়নেই আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়া মো. মজিবর রহমানের বিপরীতে কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী নেই। তিনি দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার দৌঁড়ে শুরু  থেকেই এগিয়ে ছিলেন, শেষ পর্যন্ত পেয়েছেনও।

উপজেলার সদর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের জোরালো মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন বোয়ালমারী ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুল হক শেখ। কেন্দ্রে পাঠানো নামের তালিকায় তার নাম এক নম্বরে ছিল বলে জানা গেছে। কিন্তু তিনি স্থানীয় রাজনীতির কোন্দলের জেরে মনোনয়ন পাননি।

চতুল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক পদ থেকে সদ্য বহিষ্কৃত মো. রফিকুল ইসলাম ও বর্তমান চেয়ারম্যান শরীফ মো. সেলিমুজ্জামান লিটু। কিন্তু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপির রেষারেষিতে দু’জনই দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন পেয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খন্দকার মো. আবুল বাশার। অথচ দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার আগে ইউনিয়নে তিনি কোনো প্রচারাভিযানই চালাননি। কেন্দ্রে পাঠানো নামের তালিকায়ও তার নাম প্রথম, দ্বিতীয়তে ছিল না।

দাদপুর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ সাজ্জাদুর রহমান হাই। অথচ সেখানে মনোনয়ন দৌঁড়ে এগিয়ে ছিলেন সাবেক চেয়ারম্যান শামীম মোল্যা ও বর্তমান চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন।

পরমেশ্বরদী ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মো. সোলাইমান মোল্যা। বর্তমান চেয়ারম্যানের মৃত্যুর আগে তিনি ওয়ার্ড মেম্বার পদে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ইউনিয়ন কমিটির শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক মান্নান মাতুব্বর এবং আওয়ামী লীগের সমর্থক শরীফ নজরুল ইসলাম সেখানে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন।

শেখর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন কামাল আহমেদ। তিনি রাজনীতিতে একেবারেই নতুন মুখ। সদ্য বহিষ্কৃত উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ছিলেন জোরালো প্রার্থী।

গুনবহা ইউনিয়নে নৌকা পেয়েছেন উপজেলা কৃষকলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল ইসলাম। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার আগে ইউনিয়নে তার তেমন কোনো প্রচারণা চোখে পড়েনি। অথচ সদ্য বহিষ্কৃত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আমিনুল ইসলাম এবং জেলা যুবলীগের সদস্য মো. দাউদুজ্জামান মনোনয়নের দৌঁড়ে এগিয়ে ছিলেন।

রূপাপাত ইউনিয়নে নৌকা পেয়েছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মহব্বত আলী। এখানেও মনোনয়নের দৌঁড়ে এগিয়ে ছিলেন সদ্য বহিষ্কৃত উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং সাবেক চেয়ারম্যান হেমায়েত হোসেন ।

একই অবস্থা ময়না ইউনিয়নেও। সেখানে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা মৎস্যজীবী লীগের সদস্য পলাশ বিশ্বাস। বর্তমান চেয়ারম্যান নাসির মো. সেলিম জোরালো প্রার্থী ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২১
এমএইচ/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।