ঢাকা, সোমবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

ইউপি নির্বাচন: লক্ষ্মীপুরের হামছাদীতে উত্তেজনা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২১
ইউপি নির্বাচন: লক্ষ্মীপুরের হামছাদীতে উত্তেজনা ফাইল ছবি

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর হামছাদী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৬ ডিসেম্বর। এ নির্বাচন ঘিরে শুধু সদর উপজেলা নয়, পুরো জেলাতে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে।

 

উত্তর হামছাদীসহ সদর উপজেলার আরও ১৪টি ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ হলেও গণমাধ্যমেরও আলাদা দৃষ্টি রয়েছে এ ইউনিয়নের ওপর। আলোচিত হয়ে ওঠার কারণ আওয়ামীলীগের প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান এমরান হোসেন নান্নু।  

এ ব্যক্তিকে দলীয় মননোনয়ন দেওয়াকে কেন্দ্র করে অস্তিত্ব সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে নৌকার প্রতীকের বিজয়ে নান্নুর ভরসা নির্বাচনী এলাকায় বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে প্রভাব বিস্তার করানো।  

এতে সাধারণ নেতাকর্মী ও ভোটারদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কেউ নির্বাচন বানচাল করতে এলে তাদের রুখে দিতে ঝাড়ু-লাঠি হাতে প্রস্তুত থাকবে সাধারণ ভোটাররা।  

তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মিথ্যা তথ্য দিয়ে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন। এদিকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নৌকা নেওয়ায় উত্তর হামছাদী ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বাবুল মোল্লা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। তার প্রতীক চশমা। যদিও প্রার্থী হওয়ায় তাকে আওয়ামীলীগ থেকে বহিঃষ্কার করা হয়েছে।  

মিথ্যা তথ্য দিয়ে নৌকার মনোনয়ন নেওয়া ও বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় দল থেকে বহিঃষ্কার করায় ভোটারদের পছন্দের প্রার্থী হয়েছেন আনারস প্রতীকের মো. নজরুল ইসলাম। মুক্তিযোদ্ধা গেজেট ও লাল বার্তায় এমরান হোসেন নান্নুর বাবার নাম না থাকার পরেও তিনি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে নৌকা পাওয়ায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ। মো. নজরুল ইসলামের পক্ষে দিনরাত জনসংযোগ করছেন তারা।
 
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. হুমায়ুন কবির বাবুল মোল্লা বলেন, ‘এমরান হোসেনকে নৌকা প্রতীক পাইয়ে দিতে মিথ্যা তথ্য লিখে প্রতারণা করা হয়েছে। তাই আমি প্রার্থী হয়েছি। '

ইউনিয়নের পশ্চিম হাসন্দি গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অন্যতম সংগঠক রাজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যক্তিগতভাবে আমি চিনি। এমরান হোসেনের বাবা কখনও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। যুদ্ধ-সংশ্লিষ্ট কোনো কাজেও তিনি সহায়তা করেননি। আশা করি জনগণ ২৬ ডিসেম্বরের নির্বাচনে উপযুক্ত জবাব দেবে। '

স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, সুষ্ঠু ভোট হলে আমি বিজয়ী হবো। ৮০ শতাংশ ভোটারের সমর্থন রয়েছে আমার। এমরান হোসেন নান্নুর লোকজন আমার কর্মী সমর্থকদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। বহিরাগতদের এনে কেন্দ্র দখল করার হুমকি দিচ্ছে।  

এদিকে স্থানীয়রা জানান, এসব বিষয়ে উত্তর হামছাদী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রুখে দিতে প্রস্তুত রয়েছেন সাধারণ জনগণ। সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ভোটাররা যাকে নির্বাচন করবে তিনিই হবেন সকলের জনপ্রতিনিধি।  

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর-সদর আংশিক) আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন বাংলানিউজকে বলেন, কোনো ইউনিয়নে যেন বহিগতরা প্রবেশ না করে, দল থেকে নেতাকর্মীদের সে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দলের পক্ষ থেকে কোনো প্রভাব বিস্তার করা হবে না। নির্বাচনী এলাকায় শুধুমাত্র ভোটাররাই থাকবে।  

এদিকে নির্বাচনে ১৫ টি ইউপিতে অংশগ্রহণকারী সকল প্রার্থীদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) এক সভায় জেলা পুলিশ সুপার ড. এএইচএম কামরুজ্জামান বলেন, সুন্দর পরিবেশে ভোট উপহার দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। কেউ যদি এ নির্বাচনকে কেন্দ্র সহিংসতা ও কেন্দ্র দখল করার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১১০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২১
এসআইএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।