ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

চেয়ারম্যান হতে চান চুল কাটা সেই শিক্ষক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২১
চেয়ারম্যান হতে চান চুল কাটা সেই শিক্ষক শিক্ষক মঞ্জুরুল কবিরের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন কয়েকজন জামায়াত নেতা

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে ৬ ছাত্রের চুল কেটে দেওয়া সেই মাদরাসা শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির মঞ্জু জামিনে বের হয়ে নির্বাচনী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে তিনি রায়পুর উপজেলার বামনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে যাচ্ছেন।

মঞ্জুর ওই ইউনিয়নের জামায়াতের আমির এবং হামছাদী কাজির দিঘীরপাড় আলিম মাদরাসার সহকারী শিক্ষক (বিএসসি)।  

জানা যায়, বুধবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে মঞ্জুরুল কবিরের পক্ষে স্থানীয় ৮-১০ জন জামায়াত নেতা রির্টানিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। আগামী ২৮ নভেম্বর ওই ইউপিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান তাফাজ্জল হোসেনকে।

রিটানিং কর্মকর্তা কে এম মোস্তাক আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, কয়েক ব্যক্তি এসে মঞ্জুরুল কবির নামে এক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।

এদিকে, সোমবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় তিনি জেলা কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান। এ সময় তাকে ফুল দিয়ে বরণ করেন নেন জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তা দেন তিনি। এতে ইউপি নির্বাচনের অংশগ্রহণের কথা জানান এবং চুল কাটা ও জেলে যাওয়ার ঘটনাকে নির্বাচন কেন্দ্রীক ষড়যন্ত্র হিসেবে দাবি করেন। তবে এতে কারো নাম তিনি উল্লেখ করেননি।

ভিডিওতে তিনি বলেন, আমরা শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষার বিষয়টি প্রধান্য দিই। আমাদের এখানে নৈতিকতা সংরক্ষণ কমিটি আছে। আমি সেই কমিটির সদস্য। আমরা বাচ্চাদের চুল, নখ, ড্রেস, দাঁত এগুলো শিক্ষার পাশাপাশি দেখি। এগুলো আদবের একটি অংশ মনে করি। সে হিসেবে কিছু বাচ্চাদের এক সপ্তাহ ওয়ার্নিং দেওয়ার পরেও চুল বড় রাখায় কয়েকজন বাচ্চার চুল কেটে দিয়েছি। বিষয়টা আমরা খুব পজিটিভ দেখিছি।  

আইনের বিষয়টা আমাদের ওইভাবে মাথায় ছিল না। এটা যে আইনের প্রবলেম, বিষয়টা আমাদের ধারণা ছিলো না। বিষয়টা নিয়ে যারা কাঁদা ছোঁড়াছুড়ি করেছেন, তাদের প্রতি আমার রাগ নেই। আমি গ্রেফতার হয়েছি। আইনিভাবে আবার জামিনে মুক্তি পেয়েছি। ’

৮ মিনিট ১৯ সেকেন্ডের ভিডিও বার্তার এক পর্যায়ে তিনি বলেন, ‘শিক্ষকরা স্বাধীনভাবে এখন আর পাঠদান করাতে পারছে না। ’  

সম্প্রতি শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির দশম শ্রেণির (দাখিল) ৬ ছাত্রকে শ্রেণিকক্ষের সামনের বারান্দায় দাঁড় করিয়ে একটি কাচি দিয়ে এলোমেলোভাবে মাথার সামনের অংশের চুল কেটে দেন। এ ঘটনার এক মিনিট ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ৮ অক্টোবর সকাল থেকেই ফেসবুকে ভাইরাল হলে দেশব্যাপী আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়। ওই রাতেই শিক্ষক মঞ্জুরুলকে উপজেলার বামনী ইউনিয়নের কাজিরদিঘীর পাড় এলাকা থেকে আটক করে রায়পুর থানা পুলিশ।

মধ্যরাতে ওই মাদরাসার ছাত্র শাহাদাত হোসেনের মা শাহেদা বেগম বাদী হয়ে শিশু নির্যাতন দমন আইনে তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে ৯ অক্টোবর বিকেলে লক্ষ্মীপুর আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। গত ২৫ অক্টোবর জামিনে মুক্তি পান মঞ্জুর।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।