ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

লক্ষ্মীপুর-২ আসনের উপ-নির্বাচনে প্রার্থীর যোগ্যতা-অযোগ্যতা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ৬, ২০২১
লক্ষ্মীপুর-২ আসনের উপ-নির্বাচনে প্রার্থীর যোগ্যতা-অযোগ্যতা

ঢাকা: আসন্ন লক্ষ্মীপুর-২ সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচনে প্রার্থীদের যোগ্যতা-অযোগ্যতা বিষয়ক এক নির্দেশনা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এতে অপ্রকৃতিস্থ ও সাজাপ্রাপ্তসহ প্রার্থী হওয়ার নানা অযোগ্যতার কথা বলা হয়েছে।

ইসি উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমানের জারি করা ওই পরিপত্রে বলা হয়েছে, আদালত থেকে কোনো ব্যক্তি যদি ’অপ্রকৃতিস্থ’ বলে ঘোষিত হন তবে তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।

সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী হওয়ার যোগ্য-অযোগ্যতার বিধানে এমনটিই বলা হয়েছে সংবিধানে। সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের দফা ১ ও ২ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক হলে এবং ২৫ বছর বয়স হলে সংসদের সদস্য নির্বাচিত হতে ও সংসদ সদস্য থাকতে পারবেন। এটিকে যোগ্যতা হিসেবে ধরা হচ্ছে।

আবার এ যোগ্যতা থাকলেও অন্য কারণে একজন ব্যক্তি অযোগ্য হতে পারেন। এক্ষেত্রে কোনো উপযুক্ত আদালত থেকে তিনি অপ্রকৃতিস্থ হিসেবে ঘোষিত হলে, দেউলিয়া হওয়ার পর দায় থেকে অব্যাহতি না পেলে, কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করলে কিংবা বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করলে তা অযোগ্যতা হিসেবে গণ্য হবে। তবে পরবর্তীতে যদি বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন কিংবা পুনরায় বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন তবে অযোগ্য হবেন না।

কোনো ব্যক্তি নৈতিক স্খলনজনিত কারণে কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কমপক্ষে দুই বছরের কারাদণ্ড পেলে, কারাভোগের পর পাঁচ বছর সময় অতিবাহিত না হলে তিনি প্রার্থী হতে পারবেন না।

এছাড়া ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ যোগসাজশকারী (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আদেশের অধীনে যেকোনো অপরাধের জন্য দণ্ডিত হয়ে থাকলে এবং প্রজাতন্ত্রের কোনো লাভজনক পদে আসীন থাকলেও সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে অযোগ্য হতে হবে।

লক্ষ্মীপুর-২ আসনের উপ-নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় আগামী ১৮ মার্চ, মনোনয়নপত্র বাছাই মার্চ ১৯, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ২৪ মার্চ। আর ভোটগ্রহণ ১১ এপ্রিল।

কুমিল্লার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে উপ-নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এ আসনে একাদশ জাতীয় সংসদে স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন মোহাম্মদ শহিদ ইসলাম পাপুল। গত ২৮ জানুয়ারি কুয়েতের ফৌজদারি আদালত পাপুলকে কারাদণ্ডে দণ্ডিত করায় তার (লক্ষ্মীপুর-২) আসনটি গত সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) শূন্য ঘোষণা করে সংসদ সচিবালয়। আসন শূন্য ঘোষণা গেজেট নির্বাচন কমিশনেও পাঠানো হয়। এরপর ইসি উপ-নির্বাচনের তফসিল দেয় গত ৩ মার্চ।

সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমেদ খান প্রকাশিত আসন শূন্য ঘোষণা গেজেটে উল্লেখ করা হয়, কুয়েতের ফৌজদারি আদালত কর্তৃক গত ২৮ জানুয়ারি ঘোষিত রায়ে নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে চার বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ায় ২৭৫ লক্ষ্মীপুর-২ হইতে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোহাম্মদ শহিদ ইসলাম পাপুল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬ (২) (ঘ) অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী সংসদ সদস্য থাকিবার যোগ্য নহেন। সেই কারণে সংবিধানের ৬৭ (১) (ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রায় ঘোষণার তারিখ ২৮ জানুয়ারি হইতে তাহার আসন (২৭৫ লক্ষ্মীপুর-২) শূন্য হইয়াছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালী-বিধির ১৭৮ (৪) বিধি অনুযায়ী ২৭৫ লক্ষ্মীপুর-২ হইতে নির্বাচিত সংসদ সদস্যের আসন শূন্য সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হইল।

শূন্য আসনে নির্বাচনের বিধান অনুযায়ী, গত ২৮ জানুয়ারি থেকে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে লক্ষ্মীপুর-২ আসনে ভোটগ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে আগামী ২৮ এপ্রিল ৯০ দিন পূর্ণ হবে। এর আগেই আসনটিতে উপ-নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

পাপুলের বিরুদ্ধে কুয়েত সরকার মানবপাচার ও অর্থপাচারের অভিযোগ এনে ২০২০ সালের ৭ জুন আটক করেছিল। তারপর বিচারকাজ শেষে দেশটির আদালত গত ২৮ জানুয়ারি রায় দেন। তার স্ত্রী সেলিনা ইসলামও জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের এমপি।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ০৬, ২০২১
ইইউডি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।