ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

চলছে বগুড়া-১, যশোর-৬ আসনে উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০১ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০২০
চলছে বগুড়া-১, যশোর-৬ আসনে উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ

ঢাকা: বগুড়া-১ ও যশোর-৬ আসনের উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) সকাল ৯টায় শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই কার্যক্রম বিরতিহীভাবে চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।

করোনা মহামারির মধ্যে ভোটগ্রহণ করায় মানতে হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। মাস্ক না পরলে কাউকেই ভোট দিতে দেবে না বলে জানিয়েছেন ইসি সচিব মো. আলমগীর।

নির্বাচন উপলক্ষে ইতোমধ্যে ভোটের এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। যান চলাচলের ওপরও আরোপ করা হয়েছে বিধি-নিষেধ। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও ইতোমধ্যে নির্বাচন এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন।

ভোটের কারণে করোনা সংক্রমণ বাড়ার শঙ্কায় কমিশনের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে অবস্থান ইতোমধ্যে ভোট বর্জন করছে বিএনপি। তবে বিএনপির প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বৈধ হওয়ায় এবং তারা প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষে নির্বাচন বর্জন করায় ব্যালট পেপারে তাদের নাম ও প্রতীক রাখা হয়েছে।

বগুড়া-১ আসন:

মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের পর আসনটির উপ-নির্বাচনের বৈধ ছয় প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দ করেছিলেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা।

প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল মান্নানের সহধর্মিণী সাহাদারা মান্নান (নৌকা), বিএনপির একেএম আহসানুল তৈয়ব জাকির (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির মোকছেদুল আলম (লাঙ্গল), প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের (পিডিপি) মো. রনি (বাঘ), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নজরুল ইসলাম (বটগাছ) ও স্বতন্ত্র ইয়াসির রহমতুল্লাহ ইন্তাজ (ট্রাক)।

এ নির্বাচনে মোট ৩ লাখ ১৭ হাজার ৫৬৯ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। ভোটগ্রহণ করা হবে ১২২টি ভোটকক্ষে।

গত ১৮ জানুয়ারি সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল মান্নান মারা গেলে আসনটি শূন্য ঘোষণা করে সংসদ সচিবালয়। এরপর শূন্য আসনে নির্বাচনের জন্য ১৬ ফেব্রুয়ারি তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

যশোর-৬ আসন:

এ আসনে বৈধ তিন প্রার্থী প্রতীক পেয়েছিলেন। তারা হলেন-আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহীন চাকলাদারকে (নৌকা), বিএনপির প্রার্থী আবুল হোসেন আজাদ (ধানের শীষ) ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব (লাঙ্গল)।

এ আসনে ২ লাখ ৪ হাজার ৩৯৭ জন ভোটার মঙ্গলবার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। ভোটগ্রহণ করা হবে ৭৯টি ভোটকেন্দ্রে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইসমাত আরা সাদেক জয়ী হন। চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি তিনি মারা যান। এরপর শূন্য আসনে নির্বাচনের জন্য ১৬ ফেব্রুয়ারি তফসিল দেয় ইসি।

এই দুই আসনেই ভোটগ্রহণের কথা ছিল গত ২৯ মার্চ। কিন্তু করোনার কারণে ভোটের এক সপ্তাহ আগে ২১ মার্চ নির্বাচন স্থগিত করা হয়। তবে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা হিসেবে ১৮০ দিন সময় শেষ হয়ে আসায় করোনার মধ্যেই আবার ভোটের সিদ্ধান্ত দেয় ইসি।

কেন্দ্র প্রতি ১৭ থেকে ১৯ জনের ফোর্স:

এ দুই নির্বাচনে কেন্দ্র প্রতি ১৭ থেকে ১৯ জনের ফোর্স মোতায়েন রয়েছে। এক্ষেত্রে সাধারণ কেন্দ্রে পুলিশ, আনসারের সর্বনিম্ন ১৭ জন এবং ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে সর্বোচ্চ ১৯ জন সদস্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করছেন।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জনসংযোগ পরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান এ তথ্য জানিয়েছেন।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েনের ওপর জারি করা একটি পরিপত্রে বলা হয়েছে- জাতীয় সংসদের ৩৬ বগুড়া-১ ও ৯০ যশোর-৬ নির্বাচনী এলাকার শূন্য আসনে নির্বাচন অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের জন্য সরকার, দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যথাযথ ভূমিকার ওপর সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠান বহুলাংশে নির্ভর করছে।

সব আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহ সততার সঙ্গে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করলেই সরকারের নিরপেক্ষতা জনগণের কাছে দৃশ্যমান হবে।

নির্বাচন উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ, বিজিবি, আনসার ও ভিডিপি নিয়োগের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এলক্ষ্যে উল্লিখিত শূন্য আসনের নির্বাচনে সাধারণ ভোটকেন্দ্রে পুলিশ, আনসার ও ভিডিপি এবং গ্রাম পুলিশের ১৭ থেকে ১৯ জন করে সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

কেন্দ্রে নিয়োজিত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ভোটগ্রহণের আগে-পরে মোট চার দিনের জন্য দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করছে ১৬ প্লাটুন বিজিবি, ১৬ টিম র‌্যাব, পুলিশ-এপিবিএন-আনসারের ৩৩টি মোবাইল টিম, ১৭টি স্ট্রাইকিং টিম ও দু’টি রিজার্ভ স্ট্রাইকিং টিম। নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে নির্বাচনী তদন্ত কমিটি, ৭৮ জন নির্বাহী হাকিম, ৪ জন বিচারিক হাকিমও কাজ করছেন।

যান চলাচল:

ভোটের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সব ধরনের যন্ত্রযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইসি। এক্ষেত্রে রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে জরুরি প্রয়োজনে কিছু যান চলাচল করতে পারবে। নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে সাংবাদিক, ভোটের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের গাড়ি।

ভোটারদের যাতায়াতে ব্যবহারযোগ্য নৌ-যান ব্যতিত সব ধরনের যন্ত্রচালিত নৌ-যানও বন্ধ থাকবে। এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে সোমবার মধ্যরাত ১২টা থেকে মঙ্গলবার মধ্যরাত ১টা পর্যন্ত। এছাড়া বাইক চলাচল বন্ধ থাকবে ১৫ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত।

স্বাস্থ্যবিধি:

করোনা মধ্যে ভোটগ্রহণ করায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভোটের লাইন করতে হবে। ভোটকেন্দ্রে আসতে হবে মাস্ক পরে। ভোট দিতে হবে হাত ধুয়ে ও স্যানিটাইজার ব্যবহারের পর।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০০ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০২০
ইইউডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।