ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

সিটি নির্বাচনে ৫ দিন কেন্দ্র পাহারার ব্যবস্থা নেবে ইসি

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২০
সিটি নির্বাচনে ৫ দিন কেন্দ্র পাহারার ব্যবস্থা নেবে ইসি

ঢাকা: আসন্ন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে ভোটের দুইদিন আগে থেকে ভোটের দু’দিন পর পর্যন্ত মোট পাঁচদিন বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরগুলোর সদস্যদের মোতায়েন রাখা হবে।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় এমন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। বুধবার (২২ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত আইন-শৃঙ্খলা বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য ভোটের দিন সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জন ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ১৮ জন করে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য মোতায়েনের পরিকল্পনা রয়েছে।

কমিশন সূত্র জানায়, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে আরও বেশি সংখ্যক ফোর্স মোতায়েতের প্রস্তাব রয়েছে। তাই সাধারণ কেন্দ্রে ফোর্সের সংখ্যা ১৮ এবং ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ফোর্সের সংখ্যা ২০ হতে পারে।

পড়ুন>>ঢাকার ভোটে এবার সেনা নামছে না

ইতোমধ্যে বৈঠকে জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, পুলিশ, আনাসার, র‌্যাব ও বিজিবি’র মহাপরিচালক, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রধান এবং দুই সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের উপস্থিত থাকতে বলেছে ইসি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে ইসির মিলনায়তনে বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে।

বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা যায়, নির্বাচন পূর্ব আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টিতে করণীয় স্থির করা, চিহ্নিত অপরাধী ও নির্বাচনে বিঘ্ন সৃষ্টকারী সম্ভাব্য দুস্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও অবৈধ অনুপ্রবেশকারী রোধ এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হবে।  

এছাড়াও নির্বাচনী দ্রব্যাদি পরিবহন ও সংরক্ষণে নিরাপত্তা বিধান, নির্বাচনী আইন এবং আচরণ বিধিসহ বিভিন্ন নির্দেশেনা সুষ্ঠুভাবে প্রতিপালনের পরিবেশ সুগম করা, নির্বাচনী এলাকায় ও ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা বিষয়ক কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণের বিষয়ও রয়েছে আলোচ্য সূচিতে।  

বৈঠকের আলোচনার জন্য তৈরি করা ইসি সচিবালয়ের প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়েছে, ভোটকেন্দ্রে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ১৬জন ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮ জন মোতায়েন করা হবে। সাধারণ কেন্দ্রে একজন এসআই অথবা এএসআই-এর নেতৃত্বে চারজন পুলিশ সদস্য, অস্ত্রসহ আনসার দুজন ও ১০জন অঙ্গীভূত আনসার মোতায়েন করা হবে। আর ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে পুলিশের সংখ্যা দুইজন বেশি থাকবে।

ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভোটগ্রহণের দিন এবং তার আগে ২দিন ও পদে ১দিন মোট ৪ দিনের জন্য নিয়োজিত থাকবে। তবে অঙ্গীভূত আনসার ও ভিডিপি ৫ দিনের জন্য নিয়োজিত থাকবে। অর্থাৎ ভোটের পাহারায় বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের পাঁচদিন ৩০ জানুয়ারি থেকে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত নিয়োজিত রাখবে ইসি।

ভোটকেন্দ্রের বাইরের নিরাপত্তা বিষয়ে কার্যপত্রে ঢাকা উত্তর সিটির ৫৪টি ওয়ার্ডে পুলিশ ও এপিবিএন সমন্বয়ে ৫৪টি মোবাইল ও ১৮টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, র‌্যাবের ৫৪টি টিম ও ২৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

আর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৭৫টি ওয়ার্ডে পুলিশ ও এপিবিএন সমন্বয়ে ৭৫টি মোবাইল ও ২৫টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, র‌্যাবের ৭৫টি টিম ও ৩৮ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েনের কথা বলা হয়েছে। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় এ সংখ্যা কম-বেশি করার সুযোগও থাকছে।

নির্বাচনী এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ভোটের দু’দিন আগ থেকে পরের দিন পর্যন্ত চার দিন অর্থাৎ ৩০ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোতায়েন থাকবে মো্বাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স। এক্ষেত্রে প্রতিটি সিটি করপোরেশনে নির্ধারিত স্থানে পুলিশ ও র‌্যাবের প্রয়োজনীয় সংখ্যক টহল দল এবং ৩-৪ প্লাটুন বিজিবি রিজার্ভ ফোর্স সংরক্ষিত রাখার হবে।

নির্বাচনী আচরণ বিধি প্রতিপালন ও অপরাধের বিচার কাজের জন্য দুই সিটিতে ১২৯জন নির্বাহী হাকিম ও ৬৪জন বিচারিক হাকিম নিয়োগ করা হবে। ডিএনসিসিতে ৫৪জন ও ডিএসসিসিতে ৭৫জন নির্বাহী হাকিম আগামী ৩০ জানুয়ারি থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে থাকবেন।

অন্যদিকে উত্তরে ২৭জন ও দক্ষিণে ৩৭জন বিচারিক হাকিম দায়িত্ব পালন করবেন ৩০ জানুয়ারি থেকে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার দুই সিটিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০২০
ইইউডি/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।