ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

ভোট পেতে চোখের জল আর নাকের পানি একাকার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২০
ভোট পেতে চোখের জল আর নাকের পানি একাকার

ঢাকা: ভোট আসছে, বাড়ছে প্রচার-প্রচারণা। মেয়র থেকে শুরু করে সাধারণ ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর এবং তাদের কর্মী-সমার্থকেরা চষে বেড়াচ্ছেন পুরো নির্বাচনী এলাকা। 

ভোট প্রার্থনা করে ভোটারের দ্বারে দ্বারে ধর্না দিচ্ছেন প্রার্থীরা। দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি।

ভোটারদের মন জয় করতে চোখের জল আর নাকের পানি এক করে চলেছেন প্রার্থীরা।

প্রার্থীদের প্রচারণার গতানুগতিক ঢংয়ে ব্যানার-পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো এলাকা। এর সঙ্গে প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি নিয়ে তৈরি সঙ্গীতে মাইকে চলছে প্রচারণা। ভার্চুয়াল জগতেও পিছিয়ে নেই প্রচারণায় তারা।

আগামী ৩০ জানুয়ারি ঢাকার দুই সিটির ভোট, এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই এতো আয়োজন। নির্বাচনী আমেজ নতুন ঢাকার চেয়ে পুরান ঢাকাতেই যেন বেশি। উৎসবের আমেজে পুরান ঢাকায় চলছে ভোটের প্রচারণা। পোস্টারে ছেয়ে গেছে অলি-গলি, পাড়া-মহল্লা এমনকি বাড়ির ছাদ। এরই মাঝে ভোটারদের কাছে ছুটে চলেছেন প্রার্থীরা।

সাপ্তাহিক চুটির দিন শনিবার (১৮ জানুয়ারি) পুরান ঢাকার কয়েকটি এলাকায় প্রচারণা দেখা গেছে। দুপুরের পর বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেনের কর্মী এবং সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর প্রার্থী মনি বেগমসহ আরো কয়েকজন প্রার্থী প্রচারণা চালিয়েছেন নাসির উদ্দিন লেন এলাকায়।

কলতা বাজার এলাকায় প্রচারণা চালাচ্ছিলেন সংরক্ষিত ১৬ আসনের কাউন্সিলর প্রার্থী মনি বেগম। ভোটারের মন জয় করতে চোখের জল ফেলতেও দ্বিধা করছেন না তিনি।

মনি বেগম বলেন, ভোট পেতে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি। জনগণের ব্যাপক সাড়াও পাচ্ছি। কোনো অসুবিধা হচ্ছে না।

ঠিকঠাক ভোট হলে আবারো সংরক্ষিত আসনে জিতে যাবেন বলে আশা তার।

পুরান ঢাকার ভোটারেরাও প্রচারণায় উৎসবের আমেজ দেখছেন। নাসির উদ্দিন লেনের মেশিনারিজ দোকানের কর্মী মো. মোস্তফা বলেন, আর কয়েক দিন পরই ভোট। প্রতিদিনই প্রার্থীরা প্রচারণা চালাচ্ছেন। মেয়র প্রার্থীদের অলি-গলিতে দেখা না গেলেও তাদের কর্মী এবং কাউন্সিলর প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকেরা মাঠ গরম করে রেখেছেন।  

পুরান ঢাকার ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের কারকুরবাড়ি লেন এলাকায় দেখা গেলো একই সুতায় দুলছে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস এবং কাউন্সিলর প্রার্থী হাজী মোহাম্মদ সেলিমের পোস্টার।

হাজী আব্দুল করিম নামের একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, দুইজনই আওয়ামী লীগ প্রার্থী। কাউন্সিলর সেলিম আগেও ছিলেন, এবারও প্রার্থী হয়েছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মীরা এক সুতায় তাদের পোস্টার এবং এক ব্যানারে ছবি টানিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন।  

ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে এবার নতুন প্রার্থী ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস। শেখ পরিবারের এই মেয়র প্রার্থী ভোটারদের কাছে অনেকটা ক্লিন ইমেজের বলে মনে করছেন কেউ কেউ। আর সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে বলে একটা বাড়তি কদর ইশরাকের।

আব্দুল করিমের ভাষ্য, পুরান ঢাকার সমস্যা জলাবদ্ধতা এবং মশা। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই ভোটে জিততে হবে প্রার্থীদের। বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী দু’জনেই সমানে সমান প্রচারেণা চালাচ্ছেন।

কলতা বাজার বিসমিল্লাহ হোটেলের সামনে কাউন্সিলর প্রার্থী মোখলেসুর রহমানের কর্মীরা ঘুড়ি মার্কা নিয়ে তার প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তারা গলিতে ছোট মিছিলও বের করেন। আর সেই মিছিলে পাড়ার ছোট ছোট শিশুদের যোগ দেওয়ায় উৎসবে রূপ নেয়।  

পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজার, সূত্রাপুরসহ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মেয়র প্রার্থী ফজলে নূর তাপসের পোস্টার-ব্যানারই চোখে পড়েছে বেশি। ভোটাররা মনে করছেন, সরকার দলীয় প্রার্থী বলে বাড়তি প্রাচারণায় আছেন তিনি।  

তবে ভোটের তারিখ পরিবর্তন নিয়ে যে দাবি চলছে তাও ভোটারদের মনে আলোচনা তৈরি হয়েছে। রায়সাহেব বাজারের ব্যবসায়ী সিরাজ বলেন, আন্দোলন চলছে, মনে ভোট পিছিয়ে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২০
এমআইএইচ/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।