ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

রংপুর-৩ আসন: সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ফল প্রকাশের নির্দেশ

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০১৯
রংপুর-৩ আসন: সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ফল প্রকাশের নির্দেশ নির্বাচন ভবন। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: কারচুপি রোধ ও দ্রুত ফল প্রকাশের স্বার্থেই নির্বাচনী ব্যবস্থায় প্রযুক্তির সংযোজন হিসেবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার চালু করেছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কিন্তু এতে আগের রাতে সিল মারা প্রতিরোধ করা গেলেও, দ্রুত ফল প্রকাশে সফল হয়নি সংস্থাটি। এ অবস্থায় রংপুর-৩ আসনের উপ-নির্বাচনে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে সব কেন্দ্রের ফল প্রকাশের জন্য নির্দেশনা দিল ইসি।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে যে ইভিএম ব্যবহার করা হচ্ছে তা খুবই উন্নতমানের। যার প্রতিটির মূল্য দুই লাখ টাকার বেশি।

এতে কারচুপি করা সম্ভব নয়। আর এই ইভিএম দিয়েই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দ্বৈচয়নের ভিত্তিতে ছয়টি আসনে ভোটগ্রহণ করা হয়।
 
সে সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদাও ঘোষণা দিয়েছিলেন, একঘণ্টার মধ্যেই এ মেশিনে ফলাফল প্রকাশ করা যাবে। কিন্তু সংসদ নির্বাচন শেষে দেখা যায়, সেসব এলাকায় ব্যালট পেপার হাতে গুনে ফলাফল তৈরি করা হয়েছে, সেসব এলাকার ফলও ইভিএমের চেয়ে দ্রুত এসেছে। এমনকী ইভিএমের সবগুলোর ফলাফল মধ্যরাতেও জানাতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। এরপর স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনেও একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সে সময় ইসি সচিব বলেন, দুর্বল নেটওয়ার্কের কথা। কখনোবা অন্য সাপোর্ট সিস্টেমের দুর্বল সক্ষমতার কথাও বলা হয়।
 
এ অবস্থায় রংপুর-৩ আসনের উপ-নির্বাচনে ইসি কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিচ্ছে সন্ধ্যা ৬টার ফল প্রকাশের জন্য।
 
ইসির উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত নির্দেশনা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে- ভোটের ফল দ্রুত প্রকাশ নিশ্চিত করতে হবে। সব ভোটকেন্দ্রের সার্বিক ফল অবশ্যই সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে প্রকাশ করতে হবে। আর বৈদ্যুতিক বা অন্য কোনো নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে ফল প্রকাশ কেন্দ্র করতে না পারলে, ভোট গণনা শেষে তা সড়কপথে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিতে।
 
আগামী ৫ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
 
নির্বাচনে ইভিএমে কোনো কারিগরি সমস্যা দেখা দিলেও তা ভোটগ্রহণে যেন প্রভাব না ফেলে সেজন্য ব্যাপক সংখ্যক লোকবল নিয়োজিত করছে নির্বাচন কমিশন। রাখা হবে রিজার্ভ কারিগরি টিম। যারা কোনো কেন্দ্রে কোনো সমস্যা দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবেই ছুটে যাবেন।

২০১০ সালে বাংলাদেশের ভোটিং ব্যবস্থায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি ইভিএম দিয়ে ভোটগ্রহণের প্রচলন করেন তৎকালীন এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন। এরপর তারা সফল হলেও সমস্যা দেখা দেয় কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন কমিশনের আমলে। ২০১৫ সালের রাজশাহী সিটি নির্বাচনে একটি ইভিএম নষ্ট হয়। পরবর্তীতে সেটা আর ঠিক করতে পারেনি, এমনকী নষ্ট হওয়ার কারণও উদ্ধার করা যায়নি। এ অবস্থায় ওই ইভিএমগুলো নষ্ট করে আরও উন্নত ইভিএম তৈরির নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় রকিব কমিশন। সেই সিদ্ধান্তের আলোকে বর্তমান নূরুল হুদা কমিশন উন্নতমানে ইভিএম বানিয়ে নিচ্ছেন বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির কাছ থেকে। এজন্য সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার প্রকল্পও নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
 
এইচএম এরশাদ গত ১৪ জুলাই চিকৎসাধীন অবস্থায় রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। সংসদ সচিবালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) আ ই ম গোলাম কিবরিয়া ১৬ জুলাই রংপুর-৩ আসনটি শূন্য হওয়ার গেজেট প্রকাশ করেন। ১ সেপ্টেম্বর উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে কমিশন।
 
নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে এরশাদপুত্র রাহগির আল মাহি এরশাদ (সাদ), বিএনপির রিটা রহমান, স্বতন্ত্র হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ, এনপিপির শফিউল আলম, গণফ্রন্টের কাজী মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ এবং খেলাফত মজলিসের তৌহিদুর রহমান মন্ডল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
 
রংপুর-৩ আসনটি সদর উপজেলা এবং ১ থেকে ৮ নম্বর ছাড়া রংপুর সিটি করপোরেশনের ৯ থেকে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এ আসনের মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৪২ হাজার ৭২ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ২১ হাজার ৩১০ জন ও নারী ভোটার ২ লাখ ২০ হাজার ৭৬২ জন।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৯১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০১৯
ইইউডি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।