ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

সিলেটে ইশতেহার ছাড়াই ভোটের লড়াইয়ে প্রার্থীরা!

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০২৪
সিলেটে ইশতেহার ছাড়াই ভোটের লড়াইয়ে প্রার্থীরা!

সিলেট: আর মাত্র একদিন। এরপর রোববার (৭ জানুয়ারি) দ্বাদশ অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ।

আগামী ৫ বছরের জন্য ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীর হাতে শাসনভার তুলে দেবেন।

ভোটে বিজয়ী প্রার্থীরা সংসদে যাবেন আইন প্রণেতা হয়ে। তার আগে ভোটারের কাছে প্রার্থীরা প্রতিশ্রুত ব্যক্ত করবেন, ইশতেহারে তুল ধরবেন তাদের আগাম কর্মপন্থা।

এবার প্রচার-প্রচারণায় মুখে উন্নয়নের বুলি আওড়ালেন প্রার্থীরা। মনভোলানো কথা, সভা-সমাবেশে প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি ছড়িয়েছেন। কিন্তু বিগত নির্বাচনগুলোর মতো সিলেটে নির্বাচনী ইশতেহার দেননি কোনো প্রার্থী। নির্বাচিত হলে কি কি করবেন, জনতার কাছে এবার পৌঁছায়নি প্রার্থীদের কোনো লিখিত প্রতিশ্রুতি।

সিলেটে ভোটের মাঠে আছেন ৩৫ জন প্রার্থী। প্রতীক বরাদ্দের দিন থেকে নির্বাচনী মাঠে টানা ১৯ দিন প্রচারণার সুযোগ পেয়েছেন তারা। শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) সকাল ৮টায় শেষ হচ্ছে প্রচার-প্রচারণা। আর মাত্র একদিন পর ভোট। অথচ এখনও ইশতেহার ঘোষণা করেননি কোনো প্রার্থী।

কেবল নৌকার মনোনীত প্রার্থীরা আওয়ামী লীগের দলীয় ইশতেহারে সীমাবদ্ধ থেকেছেন। এছাড়া প্রার্থীরা নিজেদের ইশতেহার ঘোষণা ছাড়াই কেবল নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের শুনিয়েছেন প্রতিশ্রুতির বানী।

অথচ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও সিলেটের সব ক’টি আসনে নিজেদের নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন করেছিলেন প্রার্থীরা। এবারে চোখে পড়ছে পুরোই ব্যতিক্রম নিয়ম।

এবার ভোটের লড়াইয়ে জাতীয় পার্টির চারজন প্রার্থী থাকলেও সিলেট-৫ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাব্বির আহমদ ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। তৃণমূল বিএনপির পাঁচজন, ইসলামী ঐক্যজোট (আইওজে) চারজন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) তিনজন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের তিনজন, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের দুইজন, গণফোরামের একজন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের একজন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএলর একজন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন পাঁচজন।

সিলেটে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের মধ্যে আছেন, সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তার আসনে প্রার্থী আছেন আরও চারজন। তারা হলেন- ইসলামি ঐক্যজোটের প্রার্থী ফয়জুল হক, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) প্রার্থী ইউসুফ আহমদ, বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মোহাম্মদ সোহেল আহমদ চৌধুরী ও আপিলে ফিরে আসা বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী আব্দুল বাছিত।

সিলেট-২ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান, আওয়ামী লীগের প্রার্থী শফিকুর রহমান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইয়াহইয়া চৌধুরী, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মো. মনোয়ার হোসাইন, তৃণমূল বিএনপির মোহাম্মদ আব্দুর রব, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. জহির এবং বিশ্বনাথ পৌর মেয়র মুহিবুর রহমান।

সিলেট-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব, জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোহাম্মদ আতিকুর রহমান আতিক, স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) প্রার্থী আনোয়ার হোসেন আফরোজ, বাংলাদেশ ইসলামি ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী শেখ জাহেদুর রহমান (মাসুম) ও ঈগল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ফখরুল ইসলাম। এছাড়া ইসলামি ঐক্যাজোটের (আইওজে) প্রার্থী মো. মইনুল ইসলাম জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছেন।

সিলেট-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য ইমরান আহমদ। হেভিওয়েট এই প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন ইসলামি ঐক্যজোটের প্রার্থী মো. নাজিম উদ্দিন (কামরান) এবং তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী মো. আবুল হোসেন।

সিলেট-৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, কেটলি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাওলানা মোহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা আহমদ আল কবির, তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী কুতুব উদ্দীন আহমদ শিকদার, বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মো. বদরুল আলম এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) প্রার্থী মো. খায়রুল ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থী শাব্বীর আহমদ ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।

সিলেট-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা সরওয়ার হোসেন, তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী শমসের মুবিন চৌধুরী, জাতীয় পার্টির প্রার্থী সেলিম উদ্দিন, ইসলামি ঐক্যাজোটের প্রার্থী সাদিকুর রহমান এবং বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী আতাউর রহমান প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন। ইতোমধ্যে প্রচার-প্রচারণা শেষ হলেও প্রার্থীদের কেউ ইশতেহার ঘোষণা করেননি।

ইশতেহার প্রণয়ন না করার বিষয়ে আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, আওয়ামী লীগের ইশতেহারই নৌকার প্রার্থীদের ইশতেহার। তবে অন্য প্রার্থীরা কেন ইশতেহার ঘোষণা করেননি, সেটি তারাই ভালো বলতে পারবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১০২৮ ঘণ্টা, জানুয়া‌রি ০৫, ২০২৪
এনইউ/এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।