ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

শিক্ষা

৫২ ঘণ্টা পর ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবরুদ্ধ ভিসি মুক্ত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০২২
৫২ ঘণ্টা পর ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবরুদ্ধ ভিসি মুক্ত

টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) মো. ফরহাদ হোসেন ৫২ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর নিজ কার্যালয় থেকে বের হতে পেরেছেন।  

শুক্রবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল শিক্ষার্থী তাকে নিয়ে দুপুর ১ টার দিকে মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করান।

 

চাকরি স্থায়ীকরণসহ ১৪ দফা দাবিতে টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) প্রফেসর ড. মো. ফরহাদ হোসেনকে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীরা। বুধবার (০৩ নভেম্বর) সকাল সোয়া ৯টা থেকে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।

তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী সমিতির সভাপতি এসএম মাহফুজুর রহমান জানান, তৃতীয় শ্রেণির ২২ জন কর্মচারী তিন বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে কাজ করছেন। সম্প্রতি ১৫টি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের দাবি, ১৫টি পদের বিপরীতে এডহক ভিত্তিতে নিয়োজিত ২২ জনকে নিয়োগ দেওয়া হোক। কিন্তু উপাচার্য এ দাবি মানছেন না। তাই তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী সমিতির পক্ষ থেকে বুধবার সকাল সোয়া ৯টা থেকে ভিসির কার্যালয়ের সামনে অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়।
ভিসি প্রফেসর ড. মো. ফরহাদ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, ২০১৯ সালে তৎকালীন ভিসি তৃতীয় শ্রেণির ২২ জন কর্মচারীকে এডহক ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়ে গেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে দুই দফায় ১৫টি পদের অনুমোদন পাওয়া গেছে। ওই ১৫ পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। এসময় কর্মচারী সমিতির পক্ষ থেকে কিছু দাবি উত্থাপন করা হয়েছে। তারা ১৫ পদের বিপরীতে ২২ জনকে নিয়োগ দেওয়ার দাবি তুলেছেন। তারা কোনো লিখিত পরীক্ষা ছাড়া শুধু মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের চাকরি স্থায়ী করার দাবিও করছেন। এ দাবিতে বুধবার সকাল থেকে তাকে (ভিসি) অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, শিক্ষক সমিতির নেতারা তাদের সঙ্গে কয়েক দফা কথা বলেও কাজ না হওয়ায় শুক্রবার সকাল ১০ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে ভিসির কার্যালয়ে যান। তারা দুর্নীতিমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার পক্ষে বিভিন্ন শ্লোগান দেন। এই মিছিল উপাচার্যের কার্যালয়ে আসার পর সেখানে অবস্থান ধর্মঘটে থাকা কর্মচারীরা চলে যান। শিক্ষার্থীরা তালা খুলে ভিসির কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। তারা ভিসিকে বাইরে আসার অনুরোধ জানান।  

ওই সময় ভিসি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাইরে না এলেও পরে দুপুরে ছাত্রদের সঙ্গে গিয়ে মসজিদে নামাজ আদায় করেন।  


মিছিল নিয়ে ভিসির কার্যালয়ে যাওয়া শিক্ষার্থী নেতৃত্বদানকারী মাহমুদুল হাসান দুলাল বলেন, অযৌক্তিক কিছু দাবি আদায়ের জন্য তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীরা ভিসি স্যারকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে আমরা তাদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।

নামাজ শেষে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ভিসি ফরহাদ হোসেন বলেন, আমি গর্বিত, আমি এমন কিছু সন্তান পেয়েছি, যারা সত্য, ন্যায় এবং বাস্তবতা বুঝতে পেরেছে। তোমাদের মতো সন্তানরা থাকলে এই বিশ্ববিদ্যালয় অনেক দূর এগিয়ে যাবে। এ দেশ অনেক দূর এগিয়ে যাবে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে যারা দাঁড়ায় তারা থাকলে দেশ জাতি এবং বিশ্ববিদ্যালয় অবশ্যই এগিয়ে যাবে।

এদিকে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১২২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০২২
এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।