ঢাকা, সোমবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ মে ২০২৪, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

শিক্ষা

ঢাবির ‘মিনি গেস্টরুমে’ ফের ছাত্রলীগের নির্যাতন

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২২
ঢাবির ‘মিনি গেস্টরুমে’ ফের ছাত্রলীগের নির্যাতন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী নির্যাতন করেছে ছাত্রলীগ কর্মীরা। এ ঘটনায় শুক্রবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যায় ঢাবি সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আবু তালিব।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) গভীর রাতে হলের ২০১ (ক) নম্বর কক্ষে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছেন ২০১৮-১৯ সেশনের সমাজকল্যাণ বিভাগের শেখ শান্ত আলম, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ইমদাদুল হক বাঁধন, তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের শাহাবুদ্দিন ইসলাম বিজয় এবং আইন বিভাগের নাহিদুল ইসলাম ফাগুন।

অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের ২য় বর্ষের এ শিক্ষার্থী বলেন, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার পর আমাকে মিনি গেস্টরুম ডাকা হয়। একপর্যায়ে সামান্য একটা ভুলের কারণে আমাকে হাতে না ধরে মুখে সিগারেট খাইতে বাধ্য করে। আমি খেতে না চাইলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তারা। যদি সিগারেট না খাই তাহলে রুমের ভেতর বসিয়ে রেখে সিগারেট খাওয়ানোর থ্রেট দেয়। বাধ্য হয়ে সিগারেট খেতে গিয়ে হাতে ধরতে চাইলে স্টাম্প দিয়ে হাতে আঘাত করে। জোর করে সিগারেট খাওয়ানোর পাশাপাশি আমার শারীরিক গঠন ও হাঁটাচলা নিয়ে মাদকাসক্ত হিসেবে ব্লেম দেয় এবং বকাবকি করে। শান্ত মুখে সিগারেট দিয়ে তাতে আগুন লাগিয়ে টানতে বলে। একপর্যায়ে সিগারেটের ধোঁয়ার কারণে আমি নিঃশ্বাস নিতেও পারিনি।

নির্যাতনের কারণে ২৫ শিক্ষার্থী হল ছেড়ে চলে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাকে নির্যাতনের পর অন্যান্য বন্ধুদেরও বিভিন্ন ধরনের গালাগালি করে। গেস্টরুম রাত একটায় শেষ হওয়ার পরে আমি কাপড়-চোপড় গুছিয়ে হল থেকে বের হয়ে যেতে চাইলে বন্ধুরা আমার জিনিসপত্র রেখে দেয়। রাতে আমি হল থেকে বাইরে চলে যাই, পরে রাত তিনটায় অন্যরা আমাকে হলে নিয়ে আসেন। সকালবেলা বন্ধুদের মাধ্যমে বড়ভাইয়েরা বাঁধন ও শান্তকে ঘুম থেকে ডেকে বাইরে নিয়ে আসে। আর আমাকে রাতের ঘটনা যেন কাউকে না বলি এ ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়।

হলে থাকার ইচ্ছে পোষণ করে আবু তালিব বলেন, ভর্তি হওয়ার আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছিলাম, সেটি এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। আমাদেরকে নিয়মিত নির্যাতন করে, কিন্তু হল প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করে। প্রভোস্ট, হাউজ টিউটর ওনারা নামে মাত্র প্রশাসন। আমি হলে থাকতে চাই, আমি হলকে মিস করি। প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানিয়েছি, দেখি প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয় কিনা।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৩ ঘণ্টা, ১১মার্চ, ২০২২
এসকেবি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।