ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

শিক্ষা

বিশ্ববিদ্যালয়ের গাফিলতির খেসারত দিচ্ছেন ১৪৮ শিক্ষার্থী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২১
বিশ্ববিদ্যালয়ের গাফিলতির খেসারত দিচ্ছেন ১৪৮ শিক্ষার্থী

সিলেট: বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির। এবার নতুন করে সামনে এসেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) আইন লঙ্ঘন করে ছাত্র ভর্তির বিষয়টি।

 

বিশ্ববিদ্যালয়টির অনিয়মের ফাঁদে পড়ে শিক্ষার্থীদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠেছে। কর্তৃপক্ষের গাফিলতির খেসারত দিতে হচ্ছে ১৪৮ জন শিক্ষার্থীকে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা ২ বছর আগে পড়াশোনা শেষ করে বের হলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনিয়মের জরিমানা পরিশোধ না করায় ২১, ২২, ২৩ ও ২৪ ব্যাচের ১৪৮ শিক্ষার্থী বার কাউন্সিলের পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছেন না।  

উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জড়ো হন আইন অনুষদ থেকে পাস করে বেরিয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীরা। সমস্যা সমাধানে শিক্ষকরা এগিয়ে না এলে বিশ্ববিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও আইন বিভাগের প্রধান অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় প্রতি সেমিস্টারে ৫০ জনের অধিক শিক্ষার্থী ভর্তি করায়। এজন্য বার কাউন্সিল শিক্ষার্থীদের ইন্টিমেশন জমা নিচ্ছে না। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য প্রায় ৮ মাস আগে ১৪৮ জন শিক্ষার্থীর পক্ষে হাইকোর্টে দুটি রিট (৫০৯১ ও ৫৩৭০) দাখিল করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২৩তম ব্যাচের ছাত্র মো. আপতার মিয়া ও ২২তম ব্যাচের শফিকুল ইসলাম শফির করা রিট দুটির ওপর ভিত্তি করে ১৯ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়কে ২৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এর মধ্যে ১৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা আপতার মিয়া এবং ১৫ লাখ ২০ হাজার টাকা শফিকুল ইসলাম শফির রিটের পক্ষে হয়।  

হাইকোর্ট ৮ সপ্তাহ সময় দেন এই টাকা পরিশোধে। মোট ছয়টি কিস্তিতে টাকা পরিশোধ করার কথা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত জরিমানার টাকা পরিশোধের কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

ভোক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলা হয়েছে। ২২ নভেম্বরের মধ্যে যদি সিদ্ধান্তে উপনীত হতে না পারেন, তাহলে ক্যাম্পাস অবরুদ্ধ করে শিক্ষার্থীরা তালা লাগিয়ে দেবেন।  

উদ্ভুত পরিস্থিতি নিরসনে শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন শিক্ষার্থীরা।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের বিভাগীয় প্রধান হুমায়ন কবীর বলেন, ২০১৪ সালে প্রতিটি বেসকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি আসে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালগুলো ৫০ জনের অধিক শিক্ষার্থী ভর্তি করে। আমরাও ভর্তি করেছি। অধিক শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়টি ইউজিসিকে জানিয়েছি। বার কাউন্সিল ইউজিসি থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে। ফলে তারা এই চার ব্যাচের পরীক্ষা দিতে দেবে না।

ছাত্রদের নিটের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরাই শিক্ষকদের মাধ্যমে রিট করি। ওই রিটের আপিল করি। আগামী ১২ তারিখ আপিলের শোনানি হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. শহীদুল্লাহ তালুকদার বাংলানিউজকে বলেন, আপানারা সবই জানেন, এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাওয়াতে ১৩ মাস ধরে বেতন পাই না।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২১
এনইউ/জেএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।