ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

শিক্ষা

রবিতে প্রকাশ্যে দুই ছাত্রের আত্মহত্যার চেষ্টা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০২১
রবিতে প্রকাশ্যে দুই ছাত্রের আত্মহত্যার চেষ্টা

সিরাজগঞ্জ: ১৪ ছাত্রের চুল কাটার ঘটনায় শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করেছেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনরতদের মধ্যে দুই শিক্ষার্থী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন।

তাদের একজনকে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

রোববার (২৪ অক্টোবর) দুপুরের দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে শামীম হোসেন বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাকে  শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অপরদিকে আবিদ হাসান শাওন নামে আরেক ছাত্র ব্লেড দিয়ে হাত কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে অন্যরা তাকে নিবৃত করে।

এদিকে এসব ঘটনার পর শাহজাদপুর বিসিক বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় নগরবাড়ি-হাটিকুমরুল মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছে শিক্ষার্থীরা। বর্তমানে মহাসড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র নাজমুল হাসান বাংলানিউজকে জানান, ক্যাম্পাসে অবস্থান করে বিক্ষোভ চলছিল এ অবস্থায় দুপুরের দিকে হঠাৎ করেই নাজমুল বিষপান করেন। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অপরদিকে আবেদ হাসান শাওন ব্লেড দিয়ে হাত কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে তাকে নিবৃত করা হয়।

নাজমুল আরও বলেন, আমাদের ন্যায় বিচার ভুলুণ্ঠিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কালক্ষেপণ করছেন। সিদ্ধান্ত ছাড়া সিন্ডিকেট মিটিং মুলতবি করা হয়েছে। মিটিং আবার কবে বসবে তা নিশ্চিত নয়। বাধ্য হয়ে আমরা কঠোর আন্দোলনে নেমেছি।

শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীদ মাহমুদ খান বাংলানিউজকে মহাসড়ক অবরোধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, শিক্ষার্থীরা মহাসড়েক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে। একজন বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছেন।

এর আগে রোববার (২৪ অক্টোবর) সকালে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবন ও প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের স্থায়ী বহিষ্কার দাবিতে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত থেকে বেশ কিছু শিক্ষার্থী আমরণ অনশনও শুরু করেছে, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।  

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার (উপাচার্যর অতিরিক্ত দায়িত্ব) আব্দুল লতিফ  জানান, সার্বিক বিষয়ে আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি।

উল্লেখ্য, গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের ১৪ শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেন বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারি প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন। সেই অপমান সহ্য করতে না পেরে পরদিন (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে নাজমুল হাসান তুহিন নামে এক ছাত্র অতিমাত্রায় ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে ২৮ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা সব পরীক্ষা বর্জন করে একাডেমিক এবং প্রশাসনিক ভবনে তাল ঝুলিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে।

এর প্রেক্ষিতে ওইদিন রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান, সহকারি প্রক্টর ও সিন্ডিকেট সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন। ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলতেই থাকে। এক পর্যায়ে শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে আন্দোলন থেকে সরে আসেন শিক্ষার্থীরা।  

এদিকে বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি। শুক্রবার (২২ অক্টোবর) সিন্ডিকেট মিটিংয়ে ওই প্রতিবেদনের আলোকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সিদ্ধান্ত ছাড়াই সিন্ডিকেট সভা মূলতবি হওয়ায় রাতেই ফের আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০২১
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।