ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

প্রতিমন্ত্রীর আশ্বাসে মনিপুর স্কুলের অভিভাবকদের মধ্যে স্বস্তি

এস এম এ কালাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২০
প্রতিমন্ত্রীর আশ্বাসে মনিপুর স্কুলের অভিভাবকদের মধ্যে স্বস্তি

ঢাকা: ছাত্রছাত্রীদের বেতন ও অন্যান্য ফি পরিশোধে অভিভাবকদের কোনো ধরনের চাপ না দেবার জন্য মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি। প্রতিমন্ত্রীর এমন নির্দেশনা অভিভাবকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।

সোমবার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর  মিরপুরের মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাধিক অভিভাবক বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে তাদের স্বস্তির কথা জানিয়েছেন।  

মিরপুরের রূপনগরে অবস্থিত মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে ছাত্রছাত্রীদের বেতন ও অন্যান্য ফি পরিশোধে অভিভাবকদের কোনো ধরনের চাপ না দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বেতন ও অন্যান্য ফি পরিশোধ না করার কারণে কোনো ছাত্রছাত্রীকে পরীক্ষা থেকে বিরত রাখা যাবে না, প্রমোশন আটকানো যাবে না।

তিনি বলেন, করোনায় আর্থিক সঙ্কটে থাকা অভিভাবকরা ব্যক্তিগতভাবে কলেজ কর্তৃপক্ষ বরাবর দরখাস্ত করলে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। অভিভাবকদের আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় প্রয়োজনে শতভাগ পর্যন্ত বেতন মওকুফ করা হবে। তবে যে সব অভিভাবক আর্থিকভাবে স্বচ্ছল তাদের দরখাস্ত করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।

অভিভাবকরা জানিয়েছেন, করোনা মহামারীর কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় এবং পরিবারের আয়-রোজগার কমে যাওয়ায় সন্তানদের কয়েকমাসের স্কুলের বেতন বকেয়া হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় ২৮ অক্টোবর থেকে অনলাইনে পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এরইমধ্যে স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের জানিয়েছেন বেতন পরিশোধ না করলে কোন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন না। এমতাবস্থায় শিক্ষার্থীদের বেতন পরিশোধ নিয়ে ব্যাপক চাপের মুখে পড়েন অভিভাবকরা। এরইমধ্যে এই রকম ঘোষণায় কিছুটা হলেও স্বস্তি পাচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন তারা।

এ ব্যাপারে মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় শেওড়াপাড়া ব্রাঞ্চের অভিভাবক নাসির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, করোনার কারণে বেশ কয়েক মাস ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। আমার দুই মেয়ে মনিপুর স্কুলে পড়ে। তাদের কয়েকমাসের বেতন বকেয়া পড়েছে। মহামারির কারণে আর্থিক সঙ্কট দেখা দেওয়ায় পরিশোধ করা হয়নি। এরমধ্যে স্কুল থেকে বেতন পরিশোধের চাপ ছিল। তাই দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম, কিন্তু আজ প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশনায় কিছুটা স্বস্তি ফিরে পাচ্ছি বলে তিনি জানান।

তিনি আরও বলেন, আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করবো শুধু চাপ কমানো নয়, গত কয়েক মাসের যে বেতন বকেয়া পড়েছে তার একটি অংশ যেন কর্তৃপক্ষ মওকুফ করে দেয়। এতে করে এ মহামারিতে সব অভিভাবকদের মধ্যে বেতন পরিশোধের চাপ কমবে একই সঙ্গে স্বস্তিও ফিরবে।

মহামারির কারণে কম-বেশি সবাই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাই স্কুল কর্তৃপক্ষের উচিত বেতন পরিশোধের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দেওয়া বলে জানালেন মনিপুর স্কুলের আরেক অভিভাবক জাকির হোসেন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, করোনা মহামারির কারণে সবাই কমবেশি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। তাই দীর্ঘ বেতন জমে যাওয়ায় এটি পরিশোধে হিমশিম খেতে হচ্ছে অভিভাবকদের। আমরা আশা করবো, বকেয়া বেতনের একটি অংশ স্কুল কর্তৃপক্ষ মওকুফ করে দিলে অভিভাবকরা অনেকটাই চাপমুক্ত হবে। এছাড়া বছর শেষ সামনে নতুন ভর্তি সেখানে একটি চাপ রয়েছে। তাই বিষয়টি কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করবেন বলেও তিনি জানান।

অভিভাবক রবিউল ইসলাম জানান, করোনার কারণে চাকরি হারিয়ে চার মাস বেকার ছিলাম। সেপ্টেম্বর থেকে নতুন একটি চাকরি নিয়েছি। সুযোগ-সুবিধাও আগের মতো নেই। তাই এ অবস্থায় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করবো তারা যাতে বকেয়া বেতনের একটি অংশ মওকুফ করে দেন।

তিনি বলেন, চাপ না দিলেও যে বকেয়া বেতন জমে গেছে সেগুলো আমাদের পরিশোধ করতে হবে। তাই সরকারের উচিত হবে বেতন মওকুফের একটি নির্দেশনা দেওয়া, যাতে করে সব অভিভাবক উপকৃত হবেন। তবে এ মুহূর্তে প্রতিমন্ত্রীর যে নির্দেশনা দিয়েছেন সেটিতে আমরা কিছুটা হলেও চিন্তা মুক্ত হয়েছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২০
এসএমএকে/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।